পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০১ তৃতীয় অধ্যায় : ইটার কাত্যায়ন, পরাশর ও ভরদ্বাজ কাশ্যপ গোত্রীয় এ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত না যাইবে, এমন বলা যায় না; গ্রন্থকারের বংশধর বর্গের কি এ কীৰ্ত্তি রক্ষা কল্পে চেষ্টা করা কৰ্ত্তব্য নহে ? সাবর্বভৌমের পরে এ বংশে আর একজন গ্রন্থকারের নাম সুপরিজ্ঞাত, ইনি তাঁহারই ছাত্র ও জ্ঞাতি সম্পর্কিত ভ্রাতুষ্পপুত্র, ইহার নাম ব্ৰজনাথ বিদ্যারত্ব। বিদ্যারত্বের কৃত সংস্কৃত গ্ৰন্থত্রয়ের নাম এই ৪— (১) বৈদিক বাৰ্ত্তা, (২) গায়ত্রী বর্ণোচ্চারণ বিধি এবং (৩) কৃত্য চিন্তামণি টীকা। মৃত্যুর অব্যবহিত পূৰ্ব্বে তিনি সঙ্কল্প করিয়াছিলেন যে, “ধৰ্ম্মচন্দ্রিকা” নাম দিয়া রঘুনন্দনের ২৮ তত্ত্বের ন্যায় ২৮ খানা গ্রন্থ প্রকাশিত করেন। কিন্তু কঠোর কাল তাহার মনোভিলাষ পূর্ণ হইতে দেয় নাই। দেশের দুর্ভাগ্য এই সকল গ্রন্থ প্রকাশিত হইতে পারিল না। কাত্যায়ন গোত্রের অনেকজন সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত ইটায় ছিলেন, বৰ্ত্তমানেও আছেন, তন্মধ্যে পঞ্চগ্রাম বাসী শ্ৰীযুত রামকমল শাস্ত্রী মহাশয়ের নিকট হইতে আমরা নানা বিষযে সহায়তা প্রাপ্ত হইয়াছি। এই বংশ বিবরণ তৎপ্রদত্ত। কাছাড়ী ও দেবীপুরের পরাশর গোত্রীয় ব্রাহ্মণ বিবরণ আদি কথা পরাশর গোত্রীয় সাম্প্রদায়িক ব্রাহ্মণগণ ইটার কাছাড়ী ও দেবীপুর গ্রামবাসী। আদি ধৰ্ম্মার যজ্ঞাগত পুরুষোত্তম পঞ্চখণ্ড বাস করেন। পঞ্চখণ্ড হইতে একশাখা পরে ইটায় বিস্তুত হয়। পূবৰ্ববৰ্ত্তী ২য় খণ্ডে পরাশর গোত্রীয় ব্রাহ্মণদের কথা কথাঞ্চিৎ কথিত হইয়াছে। পুরুষোত্তম হইতে ত্রযস্থিংশ্য পর্যায়ে°রমাপতির উদ্ভব হয়, ইনি সুপণ্ডিত ও সিদ্ধপরুষ ছিলেন; ইহার পুত্র রামগোবিন্দ তর্কালঙ্কার প্রভৃতি কাছাড়ী গ্রামবাসী এবং কনিষ্ঠ রামনাথ রংশীয়গণ দেবীপুর গ্রামবাসী হন। জাতক প্রদীপ প্রণেতা বামগোবিন্দ তর্কালঙ্কার অসাধারণ তার্কিক ছিলেন। ইনি শ্রীহট্টের নবাব হইতে ব্ৰহ্মত্র ভূমি প্রাপ্ত হন বলিয়া কথিত আছে। তাহার ভ্রাতা মুকুন্দ বিশারদ জ্যোতিষ সম্বন্ধীয় একখানা সুন্দর গ্রন্থ রচনা করিয়া যশস্বী হইয়া গিয়াছেন। ঐ গ্রন্থ অদ্যাপি শ্রীহট্টেব চতুষ্পাঠী সমূহে আনীত হইয়া থাকে, ইহার নাম “জাতক প্রদীপ।” শ্যামানন্দ নামে এই বংশে পরবর্তী কালে আর এক ব্যক্তি শাস্ত্রলোচনায় প্রসিদ্ধি লাভ করেন। দেবীপুর শাখায় রমাকান্ত বিদ্যাবাগীশ মহাপণ্ডিত ছিলেন; তাহার ভ্রাতুষ্পপুত্র শিবচরণ বিদ্যানিবাসের খ্যাতি অদ্যাপি বিলুপ্ত হয় নাই; ইহার পৌত্র কাশীচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মৃতিতীর্থ মহাশয় তাহার “বৈদিক নির্ণয়” গ্রন্থ প্রেরণে আমাদের সহাযতা করিয়াছিলেন। কিন্তু এই গ্রন্থে নানা অযথাবাদ পরিদৃষ্ট হয়। ৩ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তেব ৩য ভাগ ৩য় খণ্ডে ঢ পবিশিষ্ট দ্রষ্টব্য।