পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১৭ পঞ্চম অধ্যায় ; আরও কতিপয় বংশ বিবরণ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত “মুকুটপুর” নামে অভিহিত করিলেন। কথিত আছে, জঙ্গলাদি আবাদ করায় শ্রীহট্টের নবাব তৎপ্রতি সন্তুষ্ট হইয়া তাহাকে সেইস্থানে ব্ৰহ্মত্র দান করে। বজ্রধরের পৌত্র চূড়ামণি একজন সিদ্ধ পুরুষ ছিলেন, ইনি এক দীর্ঘিকা খনন করেন; অদ্যপি উহা “চূড়ামণির দীর্ঘী” নামে কথিত হইয়া থাকে। চূড়ামণি নিকটবৰ্ত্তী বিনশনা গ্রামে বাড়ী প্রস্তুত করিয়া বাস করেন; তাহার বংশ তথায় আছেন। এই বংশের জয়কৃষ্ণ বিদ্যালঙ্কার ও তৎপুত্র রাজকৃষ্ণ বিদারত্ব খ্যাতনামা লোক ছিলেন। চূড়ামণির কনিষ্ঠভ্রাতা মধুসূদনের, বিদ্যানন্দ, বিদ্যাবল্লভ ও বিদ্যাভূষণের বংশ ফুলতৈল গ্রামে, এবং বিদ্যাবল্লভের বংশ দীপীয়া গ্রামে বাস করিতেছেন। ইহাদের বংশে বৰ্ত্তমান ৯/১০/১১ পুরুষ চলিতেছে। ন্যায়ালঙ্কার একজন বিখ্যাত পণ্ডিত ছিলেন; কথিত আছে বিক্রমপুর ও নবদ্বীপ হইতে সমাগত বহু পণ্ডিতকে তিনি শাস্ত্রবিচারে পরাস্ত করেন। তাহার মৃত্যুর পর তদীয় পত্নী “সহমরণ” প্রথামত দেহত্যাগ করিয়া অক্ষয় পুণ্য-কীৰ্ত্তি লাভ করিয়াছেন, সেই শ্যামল ক্ষেত্র “সতীর সহগমন তলা” বলিয়া কথিত হইয়া থাকে। রামচন্দ্রের অতিবৃদ্ধ প্রপৌত্র গুণেশ্বরের তিন পুত্র, ইহারা তিনজনই উপাধিধারী পণ্ডিত, তিনজনই জীবিত আছেন। বিদ্যাভূষণের বৃদ্ধ প্রপৌত্র দুইজন ছিলেন, তন্মধ্যে দ্বিতীয় ব্যক্তিব নাম হরবল্লভ, ইহার দুই বৃদ্ধপ্রপৌত্রও উপাধিধাবী, তন্মধ্যে, রামগতি ন্যায়রত্ন মহাশয়েব মৃত্যু হইয়াছে।” ভুজবলের গোস্বামী-বংশ এক্ষণে আমবা যে বংশের একটি শাখার উল্লেখ করিতেছি, তাহা একটি প্রসিদ্ধ সিদ্ধবংশ। এই বংশেব বহুশিষ্য শ্রীহট্ট জিলাব ভিন্ন ভিন্ন পবগণায় আছেন। এই বংশ বাণীবংশ বলিয়া খ্যাত। ঠাকুর বাণী সিদ্ধপুরুষ ছিলেন, তাহাব জীবনচরিত আমরা ৪র্থ ভাগে বলিব; বাণীবংশের অন্যান্য সংবাদ পববৰ্ত্তী ৪র্থ খণ্ডে উক্ত হইবে, এ স্থলে বাণী বংশের একটি শাখাব মাত্র উল্লেখ করা যাইতেছে। ঠাকুরবাণীর তিন পুত্রের মধ্যে শুকদেব মধ্যম ছিলেন, তিনি চেয়ালিশ পরগণার ভুজবলে গ্রামে বাড়ী নির্ণাণ করেন। তাহার কনিষ্ঠ পুত্র চৌতলীতে চলিয়া যান ভক্তিতে সম্পদ প্রাপ্তি শুকদেবের দুইপুত্র, ইতাদের নাম রামগোবিন্দ ও কৃষ্ণগোবিন্দ। রামগোবিন্দের অবস্থা অতি শোচনীয় ছিল, একদা তিনি গঙ্গাস্নানোদ্দেশ্যে মুর্শিদাবাদে গমন করেন। দূর হইতে গঙ্গদর্শনে তাহার প্রাণ পুলকে নৃত্য করিতে লাগিল। সেদিন সপ্তমী তিথি ছিল, তিনি ত্রিলোক তারিণী ভাগীরথীর পবিত্র সলিলে পতিত হইয় নিমীলিত-নেত্রে ভগবতী জাহ্নবীর-ধ্যানে নিমগ্নচিত্ত হইলেন; তৎপ্রতি ভাগীরথীর করুণা হইল, তিনি র্তাহার কৃপাতেই তদীয় সাংসারিক দারিদ্র ক্লেশ ও দূরীভূত হয়; তিনি প্রচুর অর্থ প্রাপ্ত হন। তিনি তথা হইতে দেশে আসিলে জয়ন্তীয়াপতি দ্বিতীয় বড় গোসাই তাহাকে আহ্বান করিয়া ৬. মোনসী বাজার হইতে শ্রীযুক্ত রাধাচরণ ভট্টাচার্য এই বিবরণ প্রেরণ করিয়া আমাদের সাহায্য করিয়াছেন।