পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ২২৪ অভিযানে গৌড়ের বাদশাহকেই বিশেষ সহায় করেন ও পরে পুরস্কার স্বরূপ, ভানুগাছ, আমদপুর, ছয়চিরি, ইটা-পাচগাও এবং পুটিজুরী প্রভৃতি স্থান প্রাপ্ত হন। বাদশাহ তাহাকে খা উপাধি দান করেন; তদবধি তিনি দত্ত খা নামে খ্যাত হন।" কয়েক বৎসর পরে ত্রিপুরাধিপতি এই দত্ত খার সহিত সদ্ভাব রাখা সঙ্গত বোধে প্রধান উজিরকে দ্বিসহস্র হস্তীর সহিত প্রেরণ করেন। তিনি বিজয়পুরে আগমন করিয়া দত্তখার নিকট আগমন সংবাদ পাঠাইলেন। দত্ত খা পূবর্বকথা স্মরণে উজির সহ সাক্ষাৎ করিতে সঙ্কোচিত হইলেন। না গেলেও চলিবে না, বহু ভাবিয়া চিন্তায় তিনি ভ্রাতা বঙ্গদত্তের পুত্র হরিদত্তকে “সায়বানী দোলায়” চড়াইয়া উজির সকাশে প্রেবণ করিলেন। উজির হরিদত্তকে সাদবে গ্রহণ করিলেন ও তাহাকে ত্রিপুর রাজের সামন্ত নিযুক্ত করিয়া “নারায়ণ” উপাধিতে ভূষিত করিলেন এবং উদনার দক্ষিণ হইতে পবর্বত পর্যন্ত অষ্টক্রোশ পরিমিত স্থানের অধিকার প্রদান করিলেন। এই স্থানটি বালুকা-বহুল ছিল, কিন্তু সে বালুকাতে বহু শস্য জন্মিত, তাই উজির সে স্থানকে “বালি হীরা” নামে খ্যাত করেন।” হরিদত্ত হবিনারায়ণ নামে খ্যাত হইয়া ইহার উপস্বত্ব-ভোগী হন। পববৰ্ত্তী কালে হরিনারায়ণের অতি বৃদ্ধপ্রপৌত্র চন্দ্রনাবায়ণের সময় এই ভূমি শ্রীহট্টের নবাবের অধিকাবে আসে, চন্দ্রনারায়ণ তত্ৰত্য চৌধুরাই প্রাপ্ত হন। দত্ত খা ব্রাহ্মণগণকে গান্ধিজুরি গ্রাম দান কবিয়াছিলেন, ঐ গ্রাম তদবধি ব্রাহ্মণ-শাসন নামে পরিচিত হইযা আসিতেছে। বাহাদুরপুরেব বিস্তীর্ণ খেওয়ার জন্য লোকেবা সতব শত কৌড়ি দিয়া দত্ত খানের নিকট উহা ক্রয় করিয়াছিল। এই সতব শত কৌড়ির সংসৃষ্ট বলিযা পরগণার নাম সতর শতী হয়। দত্ত খানের কঠোরতা দত্ত খানের দুই ভগিনী ছিলেন, রাঢদেশ হইতে দুইজন বৈদ্য-সন্তান আনাইয়া ভগিনীদ্বয়ের বিবাহ দেন। ভগিনীদ্বয়ের গর্ভোৎপন্ন পুত্রদ্বয়ের নাম যথাক্রমে বিনোদ ও হরিশ্চন্দ্র। বিনোদ ৫. শ্ৰীবৎসের পরবর্তীকালে বংশের প্রধান ব্যক্তি এই উপাধি স্বয়ং গ্রহণ কবিতেন। ৬ বলিশিরাব সন্নিহিত এক ক্ষুদ্র পল্লী। ৭. বড়লোকের উপযোগী দোলা। শ্রীচৈতন্যভাগবতে লিখিত আছে যে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর দ্বিতীয় বাবের বিবাহ কালে সাযবানী দোলায় তাহাকে আরোহিত করিয়া, সাড়ম্ববে বরযাত্রীর কন্যাগৃহে গিয়াছিলেন। ৮ “এই দেশে বাবি বহু দেখি কি কারণে। তাতে উঠি একজন কহিলা তখন ! লনহে হীরা এই শুন মহাশয়। বালির কাবণে দেশে শস্য বহু হয়। তখনে উজিব আসি সভাতে কহিল। হীবা যদি হয বালিহীরা নাম থৈল।”—দত্ত বংশাবলী (অমুদ্রিত) এই বালিহীবাই পরে বালিশিরা পরগণা বলিয়া খ্যাত হইয়াছে।