পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৫ ষষ্ঠ অধ্যায় : প্রাচীন দত্ত-বংশ বিবরণ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত কালক্রমে মাতুলের দপ্তরের অধিকার পাইয়া ছিলেন। কিন্তু একটি সামান্য কারণে শেষে তাহার বিরাগ-ভাজন হন। কোন এক গুপ্তস্থানে খড়িদ্বারা বিনোদ কি অঙ্কপাত করিয়াছিলেন, তদ্‌ষ্টে দত্ত খানের মনে সন্দেহ জাত হয়; তিনি ভাবিলেন যে, একান্ত অন্তরালে এই অঙ্কপাতের কারণান্তর নাই; ইহা তাহারই অর্থহরণের হিসাব মাত্র। এইরূপ মনে হওয়াতে র্তাহা অত্যন্ত ক্ৰোধোদয় হয়, এবং তাহাতে সানুজ নিজ ভাগিনেয়কে অনায়াসে হাইল-হাওরে ডুবাইয়া মারিতে অনুমতি দিলেন। বিনাদোষে দুইজনের জীবন নষ্ট করা আজ্ঞাবাহকের প্রাণে সহিল না, সেই হাইল-হাওরে এক নৌকায় উভয় ভ্রাতাকে তুলিয়া দিয়া চলিয়া আসিল। নৌকা বায়ুবেগে ইতস্ততঃ চালিত হইতে লাগিল । শ্ৰীবৎসর জ্যেষ্ঠ ভর দত্ত হাইল হাওরের পাশ্বে আটঘর মৌজায নিজ খামার জমি দেখিতে গিয়াছিলেন, তিনি বায়ুবেগে বিঘুর্ণিত এক নৌকা দেখিয়া উহা কাছে আনাইলেন ও তাহাতে ভাগিনেয়দ্বয়কে দেখিতে পাইয়া লইয়া আসিলেন। ইহার অনুরোধে শ্ৰীবৎস ভাগিনেয়দ্বয়কে ক্ষমা করিলেন বটে, কিন্তু একত্রে বাখা অনুচিত বোধে “চৌয়ালিশ পত্তনে” পাঠাইয়া দিলেন। কাহারও দিন সমান যায় না; মাতুল কর্তৃক পরিবজ্জিত হইলেও ইহাদের দিন ফিরিল; কিছুদিন পবে গৌড়-বাদসাহের উজির চেয়ালিশ আগমন করেন। তিনি দুই ভ্রাতার সহিত আপন তনয়া দ্বযের বিবাহ দেন ও চৌযালিশ দত্তখার অধিকারচু্যত করিযা ইহাদিগকেই অর্পণ করেন। দত্তখা “ললাট পূরিয়া উদ্ধ তিলক” দিতেন। একদা একজন ব্রাহ্মণ র্তাহাকে ব্রাহ্মণবোধে নমস্কার কবেন, তদবধি (তাহার নিৰ্দ্দেশে) দত্তবংশে তিলক ধারণ রহিত হইয়াছে। দত্তখা তিন বিবাহ করিয়াছিলেন বলিয়া কথিত আছে, তাহাতে তাহার ছয় পুত্রের উদ্ভব হয়। তিনি নিজেই স্বীয় পুত্রগণকে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে স্থাপন করিয়া ভবিষ্যৎ বিবাদের মূলচ্ছেদ করিয়া যান। দত্তখার পরিবত্তীগণ দত্তখা শাসন গ্রামে একবাড়ী প্রস্তুত করিয়া জ্যেষ্ঠপুত্র সতানন্দকে তথায় স্থাপিত করেন, তাহার বংশধরেরা শাসনবাসী। তিনি দ্বিতীয় পুত্রকে ভূনবীর গ্রামে এবং তৃতীয় পুত্র শ্ৰীমন্তকে ভীমশী গ্রামে বাসস্থান নিৰ্ম্মাণ করিয়া বাস করিতে দিয়াছিলেন। সুয়াই দত্ত প্রমুখ ইহাদেব অপর ভ্রাতৃদ্বয় নিঃসন্তান ছিলেন এবং পিতাব জীবিতাবস্থাতেই সম্ভবতঃ মৃত্যু মুখে পতিত হন। সুয়াই দত্তের জাতি ও বৃত্তিত্যাগ ইহাদের সময় পর্যন্ত জাতিবৃত্তি চিকিৎসা পরিত্যাগ করা হয় নাই। সুয়াই দত্তের পর হইতে এবংশে বৈদ্যক বিদ্যার আলোচনা রহিত হয়। কথিত আছে, চৌয়ালিশের জনৈক ব্রাহ্মণী প্রসবেব প্রাকালে কঠোর ক্লেশ ভোগ করিতে ছিলেন, সুয়াই দত্ত ইহার চিকিৎসায় বৃত হইয়া বিশেষ বুদ্ধি o ৯ শ্ৰীবৎসেব অপব ভ্রাতা লক্ষণ দত্তেব পৌত্র মাণিক্যদত্ত দিনাবপুবেব জমিদাবেব চাকুবী স্বীকার কবিযা সেই স্থানে গমন করেন; এবং অন্য ভ্রাতা প্রাণ দত্ত পৈলে চাকুরীগ্রহণ কবেন। ইহাব পুত্র হবিনাথ, হবিনাথেব পুত্ৰ বামেশ্বব দত্ত একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন।