পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয ভাগ-তৃতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২৩৪ নালাচলে শ্রীগৌরাঙ্গ সম্মিলনে যাইতেন। তাহাদের অনেকের পাথেয় দিতেন, সবারই পারাপারের পয়সা দিতেন, চরিতামৃতে একথা লিখিত আছে।’ কাঞ্চন পল্লী বা বৰ্ত্তমান কাঁচড়া—পাড়ায় তাহার শ্বশুরালয় ছিল; শিবানন্দ পরে র্কাচড়াপাড়া বাসী হইয়াছিলেন। এই স্থানে তাহার পুত্রত্ৰয়ের জন্ম; ইহাদের নামঃ— “চৈতন্যদাস, রামদাস, আর কর্ণপুর। তিনপুত্র শিবানন্দের প্রভুর ভক্ত শূর।”—শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত। ইহাদের চরিত্র বর্ণন করা এস্থলে অপ্রাসঙ্গিক, কাচড়াপাড়াতে ইহাদের বংশীয়গণ সসম্মানে বাস করিতেছেন। সেন বংশের শ্রীহট্টে আগমন শিবানন্দের জ্যেষ্ঠপুত্র চৈতন্যদাসের পাঁচ পুত্র ছিলেন। চৈতন্যদাসের পরলোক প্রাপ্তির পর তাহার পুত্র নয়নানন্দ প্রভৃতি জনৈক যবন প্রতিবেশী কর্তৃক অত্যাচারিত হইয়া গঙ্গাতীরে (পরবর্তী কলিকাতার সন্নিকটে) এক জঙ্গলাকীর্ণ গ্রামে আসিয়া বাস করেন, এবং চিকিৎসাবৃত্তি অবলম্বনে তথায় অবস্থিতি করেন। কিছুদিন অবস্থতির পর নয়নানন্দের পুত্র রামচন্দ্র আত্মীয়গণ সহ বিরোধ ক্রমে তথা হইতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পিতৃভূমি শ্রীহট্টে চলিয়া আসেন ও চেয়ালিশ পরগণায় উপস্থিত হইয়া তত্ৰত্য বৈদ্যবংশে বিবাহক্রমে এখানকার অধিবাসী রূপে গণ্য হন। রামচন্দ্র শিবানন্দ বংশীয় বলিয়া এদেশে পরিচিত হইলে, অনেকেই তাহার শিষ্যত্ব স্বীকার কবেন; এবং তিনি “অধিবাসী” বলিয়া পরিচিত হন। কালক্রমে রমাবল্লভ নামে র্তাহার এক পুত্র জাত হয, ইহার পুত্রের নাম গোবিন্দরাম। গোবিন্দ রামের ধৰ্ম্মনিষ্ঠা এরূপ ছিল যে, এ বংশে এ পর্যন্ত তত্ত্বল্য কেহ জন্মগ্রহণ কবিয়াছেন বলিযা জানা যায় না। প্রসিদ্ধ রামকান্ত সেন অধিকারী ইহারই ভ্রাতা। শ্রীহট্টের নবাব শমশেব খা বাহাদুর ইহার গুণে বিমুগ্ধ ছিলেন। ইনি চিকিৎসাবৃত্তি করিতেন, তাহার চিকিৎসা অব্যর্থ ছিল, এই জন্য নবাব, র্তাহাকে আহ্বান করিতেন। নবাব শমশের খাঁ ইহার কার্যে অতীব তুষ্ট হইয়াছিলেন; ইহার পুবস্কার স্বরূপ নবাব তদীয় পূৰ্ব্বপুরুষের প্রতিষ্ঠিত দেবতার সেবা পরিচালনের জন্য এক সনন্দে (নং ২৪০) ২২ জলুস ৯ সাবান তারিখে চৌয়ালিশ হইতে ইহার নামে ১১/ ॥৫। ভূমি দেবত্র দান করিয়াছিলেন। পূৰ্ব্বোক্ত গোবিন্দরামের পুত্রের নাম রুমাবল্লভ সেন। বৈষ্ণব-গদীয়ান শ্রীহট্ট জিলার চারিটি বৈষ্ণব বংশ বিশেষ বিখ্যাত। নাম য়থা—ঠাকুররাণী, ঠাকুর জীবন, বৈষ্ণবরায়, এবং বঞ্চি ঘোষ। এই বংশ চতুষ্টয়ের শিষ্য-সম্পদ সামান্য নহে এবং তাহাদের ১ “শিবানন্দ করে সব ঘাটি সমাধান। সবাকে পালন করে, দিয়া বাসাস্থান।”—শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত। ২-৫. বাণীবংশের সামান্য প্রসঙ্গ পূবর্ববৰ্ত্তী পঞ্চম অধ্যায়ে আছে, পরবর্তী ৪র্থ খণ্ডে বাণী বংশকথা বিস্তারিত ভাবে বর্ণিত হইবে। বৈষ্ণব রায়ের বংশ কাহিনী ১ম খণ্ডের ৪র্থ অধ্যায়ে বর্ণিত হইয়াছে। ঠাকুর জীবনের বংশীয়গণ সতরশতী পরগণার চাদপুর নিবাসী। বঞ্চিত ঘোষের বিবরণ ইহার পবই কথিত হইতেছে। শ্রীহট্রেব ইতিবৃত্তে পূবর্বাংশে (২য় ভাগ ২য় খণ্ড) ৪র্থ অধ্যায়ে ইহাদের নামোল্লেখ আছে।