পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৭ সপ্তম অধ্যায় চেয়ালিশ ও ইটার সিদ্ধ বংশ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত “ডম্প” বাদ্য সহকারে সঙ্গীত করিয়া শঙ্কর যে শ্ৰীমহাপ্রভুর করুণ অৰ্জ্জন করেন, ইহা ভক্ত সমাজে একটা স্মরণীয় কথা রূপে খ্যাত হইয়াছিল। শঙ্কর ঘোষের পরিচয় প্রসঙ্গে এইজন্য এই কথাই “বৈষ্ণব বন্দনা” গ্রন্থে উল্লেখিত হয়, যথা— 驗 “বন্দিব শঙ্কর ঘোষ অঙ্কিঞ্চন রীতি। ডম্পের বাদ্যেতে যেবা প্রভুর কৈল প্রীতি।” শ্ৰীমহাপ্রভু যখন নীলাচলে, শঙ্কর ঘোষ তখন সেস্থানেও যাইতেন। যখন গৌড়ীয় ভক্তগণ নীলাচলে গিয়া বাঙ্গালা কীৰ্ত্তন গানের তরঙ্গ তুলিতেন; তখন পিতৃব্যগণ সহ শঙ্করও সেই সঙ্গীতে তান ধরিতেন। ইনিও একজন উল্লেখযোগ্য গায়ক ছিলেন, তাই গোবিন্দ কবিরাজ কৃত পদে ইহারা নামও, নীলাচলে গৌরাঙ্গ-সঙ্গীত প্রসঙ্গে উল্লেখিত হইয়াছে, যথা— গোবিন্দ মাধবানন্দ, বাসুঘোষ, গোবিন্দ, শঙ্কর।” ইত্যাদি এমন কি, কখন-কখন স্বয়ং শ্রীচৈতন্যদেব ইহাকে ডাকিয়া কীৰ্ত্তনে নিয়া যাইতেন, যথা উদ্ধব দাসের পদে— পহুক সঙ্গীত বুঝিয়া স্বরূপ যবহু ধরই গান। তবুহুঁ গৌর গোসাঞি শঙ্কর ডাকই করিয়া সম্মান ৷” শঙ্কর ঘোষ স্বয়ং একজন পদচয়িতা ছিলেন, পদকল্পতরু গ্রন্থে ইহার ভণিতা যুক্ত কয়েকটি পদ সংগৃহীত আছে। শ্ৰীখণ্ডের নরহরি সরকার ঠাকুরের মহোৎসব একটা প্রসিদ্ধ ঘটনা। এই উৎসবের পরে বাসুদেব ঘোষ ভ্রাতুষ্পপুত্র শঙ্করের বিবাহ দেন। শঙ্করের স্ত্রীর নাম লবঙ্গলতা। বিবাহের পর শঙ্কর পুনৰ্ব্বার মাতুলালয়ে গমন করিয়াছিলেন। বিবাহের পর সপ্তবর্ষ অতিক্রম করিলে লবঙ্গ গর্ভোৎপত্তি হয়, এই গর্ভে যাদব নামে শঙ্করের জ্যেষ্ঠ পুত্র জন্ম গ্রহণ করেন; দুই বৎসর পরেই তাহার আর একটি পুত্র হয়, ইহার নাম মাধব। এই মাধব এবং যাদব ঘোষ হইতে দনুজারি বংশের বিস্তৃতি ঘটে। শঙ্কর গৌর প্রেমরসে বিভোর থাকিতেন, মাতুলালয়ে থাকিয়া তিনি বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের মহিমা প্রচার করিতে লাগিলেন। ইহা কোন কোন দুষ্ট প্রকৃতি ব্যক্তির অসহ্য হইল, তন্মধ্যে বৰ্দ্ধমানের নিলিমাবাদ পরগণার ডিহিদার মামুদ শরিফ প্রধান ছিলেন, তিনি র্তাহার প্রতি নানারূপ অত্যাচার করায় শঙ্কর স্ত্রীপুত্রাদি সহ মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর স্বীয় শ্বশুর আনন্দ মিত্রের গৃহে গমন করেন।