পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২৪২ উৎসব সুন্দররাপে সম্পন্ন হইয়াছিল। বলা আবশ্যক যে বৈষ্ণব সমাজে ভক্তিই শ্রেষ্ঠ গুণ মধ্যে গণ্য হয়। এই সময়ে রাজা বিপ্রহরি একটা প্রস্তাব করেন। শ্রীহট্টের ভবিষ্যতে যে সকল বৈষ্ণবোৎসব হইবে, শ্রীহট্টীয় সিদ্ধ বংশীয়দিগকে সেই সব মহোৎসব কি রীতি অনুসারে কাহাকে কোন স্থানে আসন দেওয়া হইবে, তাহার শৃঙ্খলা করিয়া দিতে আচাৰ্য্য-পৌত্রকে অনুরোধ করেন। তখন নিম্নাদর্শে আচাৰ্য্য-পৌত্রের ইচ্ছামতে সৰ্ব্ব-বৈষ্ণব সম্মতে একখানা তাম্রপত্রে সিদ্ধবংশীয়গণের আসন স্থান নিরূপিত হয়ঃ আসন আসন ঠাকুর পাগল বাণী শঙ্কর উত্তর দক্ষিণ আসন আসন ঠাকুর শ্রীনিবাস বাণী আসন আচার্য্য বৈষ্ণব রায় এই চিহ্নিত স্থানে কোন আসন-স্থান নির্দিষ্ট ছিল না, পরে আদা পাশার সেন বংশীয় অধিকারীদের জন্য এই স্থান নিরূপিত হয়। (পূৰ্ব্বে তাহা উক্ত হইয়াছে।) বৰ্ত্তমানে মহোৎসবাদিতে এই তাম্রপত্রের নির্দেশানুসারেই সিদ্ধ বংশীয় বর্গের বসিবার আসন প্রদত্ত হইয়া থাকে। শ্রীনিবাসাচার্য্যে বংশ এদেশে নাই, শুধু মান্যার্থে তাহদের আসনের স্থান কল্পিত হইয়াছে। পাঁচ পুত্রের কথা বঞ্চিত ঘোষ বিবাহ করিয়াছিলেন, তাহার পুত্র পাঁচজন, পাঁচজনই দৈবশক্তি বিশিষ্ট এবং সকলেই সুদীর্ঘজীবী পুরুষ ছিলেন। তদীয় জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম মহেশ্বর। শিশু কালাবধিই ইনি পিতৃ পদবি অনুসরণে সচেষ্ট ছিলেন, তাহার ফলে তিনি যোগানুষ্ঠানে অসীম শক্তি লাভ করেন। তিনি বৃন্দাবন গমন’করিয়া ছিলেন, প্রত্যাগমন কালে বহুতর সন্ন্যাসী সহ তাহার সম্মিলন ঘটে! ময়মনসিংহ সমাগত হইলে রজনী যোগে তিনি এক কুলীন কায়স্থ গৃহে আতিথ্য গ্রহণ করেন। ঐ ভদ্রলোকের রত্নাবতী নামী একটি বিবাহ যোগ্য তনয়া বহুকাল পীড়া ভোগ করিয়া মৃত্যু কবলে পতিত হইতেছিল, যখন মহেশ্বর তথায় উপস্থিত হন, তখন সেই বালিকার পিতা মাতা কন্যাকে মৃত বোধে ক্ৰন্দন করিতে ছিলেন, তদবস্থায় মহেশ্বরের কৃপায অনতিবিলম্বে সেই মৃত কল্পা কন্যা জীবন প্রাপ্ত হন।