পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৫৫ অষ্টম অধ্যায় ; বিবিধ স্থানের বিভিন্ন বংশ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত অতীত কথা স্মরণ করাইয়া দিতেছে। সে স্থানেও রাজবাড়ীর পূৰ্ব্বদিকে এক “সাতপারি দীর্ঘী" আছে। দীঘীর মধ্যস্থলে মাস্তুলের মত বৃহৎ একটা স্তম্ভ (জলের ৩/৪ হাত উপরে উখিত ভাবে) দেখিতে পাওয়া যায়। ২/৩ ব্যক্তিকে আকর্ষণ করিলে উহা কিঞ্চিৎ উখিত হয়, ছাডিয়া দিলে আবার ঝনঝনারবে পড়িয়া যায়। এই স্তম্ভ সম্বন্ধে নানাবিধ মত প্রচলিত। কোনও মতে ইহা জলের পবিমাপক দণ্ড, কোন মতে বা মোসলমান আক্রমণ কালে গৌড়গোবিন্দ তত্রত রাজবাটীস্থ তৈজসপত্র ও ধনাদি নৌকাপূর্ণ করিয়া এই দীর্ঘিকায় ডুবাইয়া রাখেন, এ স্তম্ভ নৌকারই মাস্তুল। বস্তুত এ স্তম্ভ সম্বন্ধে ভিত্তিবিহীন অলীক নানা কাহিনী কথিত হয়। জনশ্রুতি যে, গৌড়গোবিন্দ কখন কখন গৌড়গ্রাম রাজবাটিকাতে আসিয়া বাস করিতেন, তাহার এক কন্যা একদা এদেশ প্রচলিত “মাঘব্ৰত” করিয়া “দেউল” বিসৰ্জ্জন কালে একটি নূতন পুষ্করিণী প্রস্তুত করেন; ঐ পুষ্করিণী-পারে যে গ্রাম বসিয়াছে, তাহার নাম দেউলগ্রাম। তথায় আরও ৪/৫টি পুষ্কবিণী থাকায় সে স্থানে যে একদা সমৃদ্ধিশালী লোকের বাস ছিল, তাহা বুঝা যায়। বিশ্বনাথের পূৰ্ব্বদক্ষিণে দেড় মাইল দূরে “রাজবাড়ী” বলিয়া আর একটা স্থানও আছে। ভাটেরার সাতপারি দীঘী ও বিশ্বনাথের সাতপাবি দীঘী একই গৌড়গোবিন্দের কীৰ্ত্তি বলিযা প্রচাবিত। আমরা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে ইহার মূলে সত্য থাকিতেও পারে, অথবা অপবের কীৰ্ত্তি প্রসিদ্ধ গৌড়গোবিন্দের নামে প্রখ্যাপিত হইতেও পারে। দীঘী প্রভৃতির অবস্থা পর্যালোচনায় তাহা শাহ জলালের সময়ের পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী বলিয়া বোধ হয় না। এক প্রাচীনের উক্তি যাহা হউক, যখন ভাটেরার তাম্রফলক প্রাপ্ত হওয়া গিযাছিল, তৎকালে যোগী জাতীয় বৃদ্ধ শম্ভুনাথ প্রকাশ করে, সে তাহার পিতামহেব মুখে শুনিয়াছিল যে, ঐ স্থানে পূৰ্ব্বে যে এক বাজ বংশ ছিল, ত্রিপুররাজেব আশ্রিত কুকিগণ বাত্রিতে আসিয়া বাজবাটী আক্রমণ পূৰ্ব্বক তাহার অধিকাংশ লোককে নিহত কবে, বাজপুত্র পলাইযা প্রাণ বাচাইয়াছিলেন। ভাটেরার দেব-চৌধুরীবর্গ সেই বংশীয়। যদি শম্ভুনাথেব উক্তি সত্য হয়, তবে দেববংশীয়গণই তখন “রাজা” বলিয়া উক্ত হইতেন। "দববারি গোল” ইত্যাদি জনশ্রুতির* বিবরণ হইতে যে রাজৈশ্বর্যের পরিচয় মিলে, তাহাতেও এই পরবর্তী “রাজগণ” যে বিশেষ প্রতাপান্বিত ছিলেন এমন বোধ হয় না। এস্থলে প্রশ্ন হইতে পারে যে, তাম্রফলকের খরবাণ দেব বংশ সহ (শভুনাথ কথিত) এই রাজগণের সম্বন্ধ ছিল কি না? তাম্রফলকের দেবোপাধি কি জাতি বাচক ? তাম্রফলকের খরবাণ দেব-বংশজদের ভূদান বৃত্তান্ত পূৰ্ব্বাংশে যথাস্থানে বলা গিয়াছে। যে কোন স্থানের যে কোন বংশীয় বাজগণ যথায় তাম্রশাসন প্রদান করিয়াছেন, তৎস্থলেই তাম্রশাসনে ১৮ কথিত আছে যে এই স্থানে বাজগণ দববাব কবিতেন। পববৰ্ত্তী অধ্যায কথিত ইসমাইল পুবেব ইত্তবাংশে গাজীপুব সিপাহীবিদ্রোহেব সমযে কযেকটি বিদ্রোহী তথাকার এক তেতুলতলে অবস্থিতি কবায উহাব নাম “দববাবী তেতই গাছ"হইয়াছিল। এখন গাছনাই কিন্তু সেই স্থানটি “দববাবী তেতইয তল” বলিযা খ্যাত আছে। মামলা মোকদ্দমা হইতেও স্থানাদি “দববাবী”নামে খ্যাত হইবাব বহু উদাহবণ আছে।