পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬১ নবম অধ্যায় : মোসলমান বংশ বিবরণ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত সুকৌশলে রাজ্যশাসন করিতে ছিলেন।” মোহাম্মদ রবি পারস্য ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন এবং তিনি মৌলবী উপাধি লাভ করিয়া মুর্শিদাবাদে গমন করেন। 'একদা মোহাম্মদ রবি নবাব বাহাদুরের সহিত সাক্ষাৎ করেন। নবাব বাহাদুর মোহাম্মদ রবি খার সৌজনে পরিতুষ্ট হইয়া ++ ++ ++ তাহাকে আপনার ভ্রাতুষ্পপুত্ৰগণের শিক্ষকতাকাৰ্য্যে নিয়োগের প্রস্তাব করেন। তদনুসারে তিনি নবাবের ভ্রাতুষ্পপুত্র নিবাইস মোহাম্মদ ও জৈন উদ্দীনের শিক্ষক নিযুক্ত হন। এই সময় তিনি নবাবকত্ত্বক “দানীশমন্দ” নামে খ্যাত ও “খানবাহাদুর” উপাধি প্রাপ্ত হন । দানীশমন্দের অদ্ভুত ধৈৰ্য্য দানীশমন্দ অভিধা প্রাপ্তির বিষয়ে এক জনশ্রুতি আছে। কথিত আছে, একদা তাহার জামার ভিতরে একটা বৃশ্চিক কোনরূপে প্রবেশ করিয়াছিল, তিনি ইহা বুঝিতে না পারিয়া সেই জামা পরিধান পূৰ্ব্বক নবাব-দরবারে গমন করেন। কিয়ৎক্ষণ পরে ঐ বৃশ্চিক তাহাকে দংশন করে, জ্বালায় তিনি যত অঙ্গ-সঞ্চালন করেন, বৃশ্চিক ক্রোধে ততই দংশন করিতে থাকে। তীব্র দংশন জ্বালা অসহ্য হওয়ায়, তাহার মুখমণ্ডল জবাকুসুমের ন্যায় রক্তবর্ণ হইয়া উঠিল, প্রাণ যেন কণ্ঠাগত হইল,কিন্তু দরবারের কায়দা-ভঙ্গ ভয়ে তিনি দরবার ভঙ্গের পূৰ্ব্বে উঠিতে ইচ্ছা করিলেন না, বিনানুমতিতে এরূপ চলিয়া যাওয়া রীতি বিরুদ্ধও বটে। রবির প্রতি সকলেরই দৃষ্টি পড়িল, তিনি কিছু না বলিলেও স্বয়ং নবাবও ইহা লক্ষ্য করিলেন এবং তাহার বর্ণ বৈলক্ষণ্যের কারণ কি, জিজ্ঞাসিলেন। নবাবের প্রশ্নে রবি বিনম্রভাবে বিবরণ বিজ্ঞাপিত করিলেন। নবাব রবির ধৈর্যের ভূযঃ ভূয়ঃ প্রশংসা করিযা তৎক্ষণাৎ তাহাকে বিদায দিলেন ও হেকিমকে ঔষধ প্রয়োগের অনুমতি দিলেন। এই অতুলনীয় ধৈৰ্য্যের জন্য রবি যে শুধু দানীশমন্দ নামে সম্মানিত হইলেন তাহা নহে, তাহার এতাদৃশ ধৈর্য্য কেবল মহৎ ব্যক্তিতেই সম্ভবে ভাবিয়া নবাব তাহাকে বহুতর জায়গীর দানে পুরস্কৃত করেন বলিয়া কথিত আছে। বৃশ্চিক দংশন-জনশ্রুতি কতদূর সত্যমূলক জানি না, কিন্তু দানীশমন্দ খার প্রাপ্ত এই সকল জায়গীর ভূমিতে কোনরূপ কর নির্দিষ্ট ছিল না জানা যায়। পরে ইংরেজ আমলে কর অবধারিত হইয়াছে। এই সকল জায়গীরের জন্য দানীশমন্দ প্রথমে “১১৪১ সালে” সনন্দ প্রাপ্ত হন। তৎপরে অবশিষ্ট ভূমি নবাব আলীবর্দি খাঁর মোহরাঙ্কিত সনন্দে “১১৫৬। ১১৫৮ বাং অব্দে” প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। আলীবর্দি খাঁর মৃত্যুর পরে তিনি দেশে আগমন করেন। 題 দানীশমন্দ খা স্বদেশে সৎকীৰ্ত্তি সংস্থাপনে সমুৎসুক ছিলেন, তিনি দেশে মসজিদ, মদরসা প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। মীর জাফরের জামাতা মীর কাশেম খাঁ এই সৎকার্যের জন্য তাহাকে যে বৃহৎ জায়গীর দান করেন, তাহার নিদর্শন শ্রীহট্টের কালেক্টরীতে রহিয়াছে।” তদ্ব্যতীত শ্রীহট্টের ফৌজদার 8 ২ জলুস ১০ রমজান তাবিখযুক্ত এক সনন্দে নং(৬০৬) “খরচ মসজিদ খানা মুদবসা”বাবদে মীবকাশেম খাঁ বাহাদুর ৩াহাকে লংলা পরগণা হইতে ৩৮৫ ২৬ এ তুমি পাথারিযা হইতে ৪৬০/ভূমি ও কাণিহাটী হইতে ২০০/০ হাল, মোট ১০৪৫/১.. ... ভুমি দান করেন। উক্ত নবাব বাহাদুর ঐ সনেই অন্য এক সনন্দে (নং ৬০৯) তাহাকে ইটা, শমশেৰ নগব, চাপঘাট ও ইছাকলস পরগণা হইতে আবও ১৩৪/৭১, ভূমি প্রদান কবেন।