পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬৩ নবম অধ্যায় : মোসলমান বংশ বিবরণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত বিশেষ উৎসাহী ছিলেন; এতদুপলক্ষে প্রতাপগড় গমনকালে তিনি জাফরগণের স্বগীয় মোহাম্মদ আরশদ চৌধুরী ও মৈনার স্বগীয় গৌরচন্দ্র চৌধুরী কর্তৃক অভ্যর্থত হইয়া প্রতাপগড়ের পাহাড়ে গমন করেন। ঐ সময়ে আকস্মিক কারণে উক্ত গৌরচন্দ্র চৌধুরী হইতে তিনি পঞ্চশত মুদ্রা উপস্থিত ব্যায়ার্থ আনয়ন করেন, পরে তাহা পরিশোধিত হয়। এই সময়েই তৎকর্তৃক জফর গড়ের ভূসম্পত্তি অজ্জিত হইয়াছিল। ১২৮১ বঙ্গাব্দে বসন্তরোগে তাহার মৃত্যু হয়। ইহার একমাত্র পুত্রের নাম মৌলবী আলী আমজদ খাঁ। পিতার মৃত্যুর সময় ইনি পাঁচ বৎসরের বালক মাত্র ছিলেন। এই অপ্রাপ্তবয়স্ক বালকের পক্ষে গবর্ণমেন্ট তদীয় পিতামহী তালেব উন্নেসা খাতুন সাহেবানীকে অলী সাব্যস্ত করেন এবং শ্রীহট্টের জজ সাহেব একজিকিউটারস্বরূপ থাকেন। আলী আমজদ কিঞ্চিৎ বড় হইলে জজসাহেব তাহাকে শ্রীহট্টে নিয়া সুশিক্ষার বন্দোবস্ত করেন; প্রসিদ্ধ স্বগীয় রাধানাথ চৌধুরী তাহার গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হন। কিন্ত তিনি অধিক দিন শিক্ষায় ব্যাপৃত থাকিতে পারেন নাই। শীঘ্ৰ বিস্তৃত জমিদারির গুরুভার নিজহস্তে গ্রহণ করেন। জমিদারি শাসনে র্তাহার দক্ষতা অল্প ছিল না, তিনি দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে পরাংমুখ ছিলেন না। ভানুগাছ নামক স্থানের অদম্য বিদ্রোহী মণিপুরী প্রজাদিগকে তিনি দমন করিতে সমর্থ হন। মৃগয়া ব্যাপারে তিনি যেরূপ সুদক্ষ ছিলেন, শ্রীহট্ট অঞ্চলে তদ্রুপ ব্যক্তি অল্পই দৃষ্ট হয়; আমরা এ সকল কথা ৪র্থ ভাগে তদীয় জীবনী প্রসঙ্গে উল্লেখ করিব। ১৩১২ বাংলা কলিকাতা মহানগরীতে র্তাহার মৃত্যু হয়। শ্রীযুক্ত আলী হায়দার ও শ্রীযুক্ত আলী আসগর নামে তাহার দুই অপ্রাপ্তবয়স্ক পুত্র এখন বৰ্ত্তমান আছেন; সম্পত্তি কোর্ট অব ওয়ার্ডের অধীনে আছে। পরগণা-কাণিহাটী চৌধুরী বংশের কথা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশে কাণিহাটীর বিবরণ প্রসঙ্গে হজরত শাহজলালের অনুষঙ্গী শাহ হেলিম উদ্দীনের কাণিহাটী গমন কথা কথিত হইয়াছে। তিনি ও র্তাহার পুত্র দৌলত মালিক কাণিহাটী বাস করতঃ ধৰ্ম্মপ্রচার করেন। কাণিহাটীর অধিশ্বরী কনক রাণীর কথা পূৰ্ব্বে বলা গিয়াছে, কনকের রাজরাণী নামে এক তনয়া ছিলেন, রাজরাণী দৌলত মালিকের প্রচারিত ধৰ্ম্ম আকৃষ্ট হন; দৌলত মালিক র্তাহাকে বিবাহ করেন। রাজরাণী তখন হামিরাবিবি নামে আখ্যাত হন। ইহার পুত্রের নাম সুলতান খা; ইনিই সুলতানপুর গ্রামের স্থাপয়িতা, ইহার পুত্র দাউদ খা। দাউদ এক নূতন বাটী নিৰ্ম্মণপূৰ্ব্বক তথায় গিয়া বাস করেন। সেইস্থান তাহার নামে দাউদপুর বলিয়া খ্যাতি হয়। দাউদের পুত্রের নাম মিঞা খাঁ। তাঁহার ডাকনাম ছিল ভুইয়া মিয়া। এই নামানুসারে “ভুইগা” বলিয়া তিনি এক গ্রাম স্থাপন করেন। মিঞা খার পুত্রের নাম নূর খাঁ ও কলবে খা। এই দুই ভ্রাতা আপনাদের মধ্যে কাণিহাটী বিভাগ করিয়া নেওয়ায় উহা পূৰ্ব্ব ও পশ্চিম ভাগে বিভক্ত হয়। কলবে খা শ্ৰীসূৰ্য্য মৌজায় বাড়ী প্রস্তুত করেন, তথায় তিনি একটী পুষ্করিণী খনন করিয়াছিলেন, উহা কলবে খার পুকুর নামে পরিচিত। উক্ত ৭ শ্রীহট্রেব ইতিবৃত্ত ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৯ম অধ্যায়ে দ্রষ্টব্য।