পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-চতুর্থ খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩০৪ রামেশ্বর, সম্রাট মোহাম্মদ শাহের সময়ে তিনি দিল্লী গমন করিয়া ১৭১৫ খৃষ্টাব্দে তরফের কানুনগো নিযুক্ত হইয়া তথা হইতে সগৌরবে আগমন করেন। কানুনগো পদের জন্য তরফে তিনি যে ভূমি প্রাপ্ত হন, দশসনা বন্দোবস্তের কালে ঐ ভূমিই র্তাহার পুত্ৰগণকত্ত্বক তদীয় নামে “৪নং তাং রামেশ্বর সেন” বলিয়া খ্যাত হয়।” রামেশ্বর সনন্দবলে তরফ, গদাহাসন নগর, নুরুল হাসন নগর, দাউদ নগর, গিয়াস নগর ও লস্করপুরের “শ্রীকণী” নিযুক্ত ও কর্তৃত্ব প্রাপ্ত হন। হরিশরণ সেন ও পরবর্তী কথা রামেশ্বরের ছয়জন পুত্র ছিলেন; ছয়পুত্র রাখিয়া ১৬৯৫ শকাব্দে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন। এই ছয়পুত্রের মধ্যে হরিশরণ সেন চতুর্থ। ইনি যে শুধু বিদ্বান ও বুদ্ধিমান ছিলেন, তাহা নহে, তিনি যোগানুষ্ঠানে অতি উচ্চ স্থানে আরোহণ করিয়াছিলেন। মহাত্মা হরিশরণ হইতেই তুঙ্গেশ্বর বংশের মহাত্ম্য শতগুণে বিবৰ্দ্ধিত হইয়া পড়ে; তিনি তদীয় সুমহৎ কার্যের জন্য সবর্বসাধারণকত্ত্বক “মহাশয়” আখ্যায় খ্যাত হন। তদবধি তদ্বংশীয়গণ আজ পর্যন্ত সে গৌরব প্রাপ্ত হইতেছেন। র্তাহারা “তুঙ্গেশ্বরের মহাশয়" বলিয়া আখ্যাত হন। মহাত্মা হরিশরণের কথা আমরা ৪র্থ ভাগে ব্যক্ত করিব। হরিশরণ মজুমদার মহাশয়েব দ্বিতীয় পুত্র ভৈরবচন্দ্র স্বধৰ্ম্ম নিরত ব্যক্তি ছিলেন, র্তাহার অতুলনীয় শারীরিক সৌন্দর্যে সকলেই মোহিত হইত, তদ্রুপ শ্ৰী মানুষে অতি অল্পই দৃষ্ট হয়। তিনি একদা নিজ জমিদারির অন্তর্গত কোন একটি স্থানে পদব্রজে গিয়াছিলেন, কথিত আছে আগমন কালে পথিমধ্যে শুয়াইয়া নামক গ্রামে এক বৃক্ষতলে তাহার দেবদর্শন ঘটে। হঠাৎ এক জ্যোতিস্তরঙ্গের মধ্যবৰ্ত্তী দেবরূপ বিদ্যুৎফুরণের ন্যায় ক্ষণমাত্র তিনি দেখিতে পাইয়াছিলেন। তথা হইতে তিনি যখন বাড়ী আসিলেন, তখন সম্পূর্ণ ভাবান্তরিত অবস্থায় চিরযাত্রার বন্দোবস্ত করিতে লাগিলেন, তাহার ভাবদর্শনে আত্মীয়গণ কিছুই বুঝিতে পারিলেন না; তাহাদের পুনঃ পুনঃ তখন অবিবাহিত ছিলেন এবং নিজ ভাবিপুত্রের জন্য সনন্দপ্রার্থী হন; কিন্তু যখন জানা গেল যে তিনি বিবাহিত নহেন, তখন বাতুল বলিতে নির্দেশিত হন; পরে সম্রাট র্তাহার অলৌকিক ক্ষমতার কথা জ্ঞাত হইযা, তদীয় প্রার্থনা বাতুলেব প্ৰলাপ বাক্যবৎ ভাবেন নাই। হরগোবিন্দের মহিমায় তদীয় প্রার্থনা সম্রাটনিকটে অগ্রাহ্য হয নাই, ইহার বহু পরে যখন রামেশ্বর দিল্লী গিয়া সনন্দপ্রাপ্তির প্রার্থনা করিয়াছিলেন, কোন কোন প্রাচীন সভাসদ তখন সেই বিষয় উত্থাপন করেন এবং তাহাতেই রামেশ্বর অতি সহজে সনন্দ লাভ করেন। ৪. এই তালুকের ভূ-পরিমাণ ৯৮৫ ০ হাল এবং রাজস্ব ১০২৩/৮০ আনা। “৫ নং তালুক হরকৃষ্ণ” জয়পুরের হরকৃষ্ণের নামে বন্দোবস্ত হয়। ইহার ভূ-পরিমাণ ১৫৯/০ হাল:রাজস্ব ৪১ ৮০। পাই মাত্র। ৫. রামেশ্বরের প্রাপ্ত পারস্য সনন্দের মৰ্ম্ম এইঃ– সুবে বাঙ্গালার অন্তর্গত সবকার শ্রীহট্টের অধীন পরগণা তরফের বর্তমান ও ভবিষ্যকালের কৰ্ম্মচারী, চৌধুরী ও রায়তানকে জানান যায় যে পরগণা মজকুরের হিন্দুবর্গের শ্রীকণী (সরদার) হরগোবিন্দ সেনের পুত্র রামেশ্বর সেনকে পূর্বেরতি মতে পৈত্রিক সূত্রে নিযুক্ত করা গেল। উচিত যে তিনি বিধিসকল বাহাল বাখিয়া তাহার সতর্কতার সহিত পালন করিতে থাকেন, এবং পরগণা মজকুরের চৌধুরী-আমলা রায়তানের উচিত যে,ইহা জ্ঞাত হইয়া উক্ত রামেশ্বর সেনের লভ্য ও পাওনাল যে রীতি আছে, ইহা জ্ঞাত হইয়া উক্ত রামেশ্বর সেনের আদায করে ও ওজর না কবে, ইহা তাদিগ (অত্যাবশ্যক) জানিব। অন্য তিন খান সনন্দ গভর্ণর জেনেরেল বাহাদুর কর্তৃক প্রামাণ্য স্বীকৃত হয়, ইহাতে এইরূপ মন্তব্য লিখিত আছে— "Authenticated by the order of Governor General in council I Ith April. 1788."