পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১৯ পঞ্চম অধ্যায় ; বিবিধ বংশ বিবরণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বে সন্ত্রান্ত ব্যক্তিবর্গ সন্নিকটবৰ্ত্তী স্থানে যাইতে বেহারা-ছাতি ব্যবহার করিলেন, পূৰ্ব্বাংশে একস্থানে ইহা বলা হইয়াছে। চন্দবংশীয়গণই তদঞ্চলে ছাতি ব্যবহারে “আইন” (রাতি) প্রচলন করেন, বলিয়া তাহদের বাসস্থান “ছাতি-আইন” নাম প্রাপ্ত হয়। চন্দবংশীয়রা নবাবি আমলে তদঞ্চলের চৌধুরাই প্রাপ্ত হন। জনসংখ্যায় এই বংশ কখনই অতি বৃহৎ ছিল না। বৰ্ত্তমানে তিন পরিবার মাত্র ছাতি আইনে বাস করিতেছেন। চন্দ বংশে পূৰ্ব্বে বুড়ন চৌধুরী নামে এক প্রভাবশালী খ্যাতনামা পুরুষের উদ্ভব হয়, ইনি একটা দী খনন করাইয়াছিলেন, এই দীঘীর জলভাগের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮০০ হস্ত পরিমিত, উহা এক্ষণে জীর্ণদশা প্রাপ্ত। শ্রীহট্টের জনৈক নবাব বুড়ন চৌধুরীকে বিশেষ অনুগ্রহ করিতেন। কার্য অবসানে C৫. নবাব শ্রীহট্ট হইতে চলিয়া যাইবার কালে ইহাকে দেখিয়া যাইতে ইচ্ছা করিয়া, একটি আরদালি iঠাইয়াছিলেন। আরদালি আসিয়া যখন তাহাকে এই সংবাদ দিল, বুড়ন চৌধুরী তখন পূৰ্ব্বোক্ত লীগ কাটাইতেছিলেন ও একটী চেয়ারে বসিয়া তাম্রকুট সেবন করিতেছিলেন। তদবস্থায় বলিয়া উঠিলেন-“জোয়ারের জল আসিবার কালে মাথার উপর দিয়া আসে, যাওয়ার কালে কেহ গ্রাহ্যও =ব না।” তিনি তার শ্রীহট্টে গেলেন না; আবদলি ক্ষুন্ন মনে চলিযা গেল। আমাদেশ ছাতি লাইনেব প্রাপ্ত বিববণীতে লিখিত আছে যে, এক বৎসর পরে উক্ত কৰ্ম্মচারী পুনঃ গবি প্রাপ্তে শ্রীহট্টে আগমন কবিযাছিলেন এবং বুডন চৌধুরীর এবম্বিধ ব্যবহাবেব শাস্তিস্বরূপ ছাতি নেব আদববর্তী নওযাগাব নিকটবৰ্ত্তী একটি উচ্চ স্থানে উত্তপ্ত লোহ শলাকাদ্বারা তাহাকে হত্যা : ইযাছিলেন, ঐ স্থ ত্যাস্থান তদবধি “বুড়নটালা” নামে অভিহিত হয়। স্বনামখ্যাত পরহিতকামী - ল মাননীয় শ্রীযুক্ত কামিনীকুমাব চন্দ এম,এ, বি,এল মহাশয় এই চন্দবংশে উদ্ভূত হইযাছেন। বংশ প্ৰবৰ্ত্তক রঘুনাথ চন্দ হইতে এখন পর্যন্ত এ বংশে ২৩ পুরুষ চলিতেছে। ছাতি আইনেব ভট্টাচাৰ্য্য বংশ চন্দদের পুরোহিত। এ বংশে রূদ্রদেব মুনিগোসাই নামে এক সিদ্ধ পক্ষ ছিলেন, ৪র্থ ভাগে ইহার কথা বলা যাইবে। দেব বংশ বেজোড়ায় দেবোপাধি রতিরাম-বংশীয়দের বাস। এই বংশীয়েরা পূৰ্ব্বে সরাইলবাসী ছিলেন। বলা আবশ্যক যে সরাইল পূৰ্ব্বে শ্রীহট্টেরই অন্তর্গত ছিল। রতিরামের পিতামহ গোবিন্দরাম রাঢ় দেশের লোক ছিলেন বলিয়া তদ্বংশে কথিত হয়। রতিরাম পারস্য ও সংস্কৃতে পণ্ডিত ছিলেন। মুর্শিদাবাদের দেওয়ান হইয়া তিনি রায় উপাধিতে ভূষিত হন ও সরাইলে জায়গির লাভে তথায় গমন করেন। পূৰ্ব্বে ক্ষমতাপন্ন ব্যক্তিদের গৃহ-সন্নিকটে দিয়া দোলারোহণে কেহই যাইতে পারিত না, সৰ্ব্বত্রই এ রীতি ছিল; রতিরামের বাড়ীর ধার দিয়াও কেহ ঐরূপে যাইত না। কিন্তু রতিরামের জামাতা, শ্বশুর বাড়ীতে পূৰ্ব্বে সংবাদ না দিয়াই ঐ ভাবে আসিতেছিলেন। রতিরামের জনৈক নুতন কৰ্ম্মচারী তাহাকে নিষেধ করিলে তিনি গৌরববশতঃ তাহা অগ্রাহ্য করিয়া অগ্রসর হন; ইহাতে বিবাদ উপস্থিত হয় এবং জনৈক আক্রমণকারীর আঘাতে দৈবতঃ দোলারোহী প্রাণত্যাগ করেন। মৃতদেহ শবদেহ বক্ষে করতঃ চিতায় প্রবেশপূৰ্ব্বক অনন্তপথের পথিক হন। এই হৃদয় বিদারক ঘটনায় রতিরাম শোকাকুল হইয়া জনসঙ্গ ত্যাগ করিলেন এবং দীঘীর