পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-চতুর্থ খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩২৬ হরমোহন, আনন্দমোহন ও মোহিনীমোহন—প্রত্যেকটি যেন মাহেন্দ্রক্ষণে জন্ম পবিগ্ৰহ করিয়া কেবল যে পিতামাতার আনন্দবদ্ধন করিল এমন নহে, তাহারা কালে পণ্ডিত ও চরিত্রে যশ্বস্বী হইয়া স্বীয় জন্মভূমির মুখও উজ্জ্বল করিয়া গিয়াছে।” উমাকিশোরীর মধ্য পুত্ৰই “ভারত-নক্ষত্র” সুবিখ্যাত আনন্দমোহন বসু। তাহাতে মাতুল “হরনাথ মজুমদারের আকৃতির এত সাদৃশ্য ছিল যে নিরাণাং মাতুলাকৃতিঃ এই বাক্য আনন্দমোহনে সম্পূর্ণরূপে সার্থ হইয়াছিল।” দাস বংশ জলসুখাস্থ দাস বংশীয় গঙ্গারাম দাস চৌধুরীর কথা উল্লেখযোগ্য। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশে বাণিয়াচঙ্গাধিপতি গোবিন্দ খাঁর কাহিনী বর্ণিত হইয়াছে গোবিন্দ খাঁর জাতিচু্যতি ঘটিয়াছিল; ইহার পরে তিনি যখন দেশে আগমন করেন, তখন তৎসহ গঙ্গারাম দাস নামক এক ব্যক্তি বাণিয়াচঙ্গে আসিয়াছিলেন বলিযা জানা যায়। ইনি রাজনুগ্রহে জলসুখাতে কতক ভূসম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়া সুখে বাস করেন। গোবিন্দ খাঁর অনুষঙ্গী এই গঙ্গারামের পুত্র পৌত্রাদির সংবাদ অবগত হওয়া যায় না। এই দাসবংশে পরে ঐ নামেই এক ব্যক্তির উদ্ভব হয়, তাহা হইতেই বংশ কথা জ্ঞাত হওয়া যায়। ইহারই নামে জলসুখার ১নং তালুকের বন্দোবস্ত হইয়াছিল; তত্ৰত ৩নং তালুক ইহার পুরোহিত রামগোপাল চৌধুরীর নামে বন্দোবস্ত হইযাছিল। বন্দোবস্ত হইয়াছিল; তত্ৰত ৩নং তালুক ইহার পুরোহিত রামগোপাল চৌধুরীব নামে বন্দোবস্ত হয়। উক্ত গঙ্গানাবায়ণের পুত্রের নাম বামনাবাযণ, ইহাব পুত্রের নাম কীৰ্ত্তিনারায়ণ। রামনারায়ণের জাতিচু্যতি পূৰ্ব্বে জলসুখার একটি নবাবি তহশীল কাছারী ছিল; সে স্থানে কাছারী ছিল, উহা অদ্যাপি “কাছারীঘাট” নামে খ্যাত আছে। একদা বামনারায়ণ চৌধুরী কাছারী ঘাটে নদীতে স্নান করিতে যাইতেছিলেন, পথিমধ্যেই কাছারী। কাছারীর সন্নিকটে উপস্থিত হইলে একটি দৃশ্যে তিনি বড়ই ব্যথিত হইলেন; দেখিলেন যে, খাজানা দিতে অসমর্থ একটি প্রজাকে হাত পা বাধিয়া গাছে ঝুলাইয়া রাখা হইয়াছে। তহশীল কৰ্ম্মচারী নিকটেই দণ্ডায়মান, তাহার আদেশে ক্রুর পাকিবৰ্গ হতভাগ্য প্রজাকে ক্ষণে ক্ষণে যষ্টি প্রহার করিতেছে, আর সে যন্ত্রণায় “আহা হা” বলিয়া চিৎকার করিতেছে। এ দৃশ্যে রামনারায়ণ ধৈর্য্যহাবা হইযা সেই কৰ্ম্মচারীকে, ইহাকে ছাড়িয়া দিতে অনুরোধ করিলেন। কিন্তু কৰ্ম্মচারী তাহার অনুরোধ রক্ষা কবিল না, তখন “পর দিন আসিয়া” তিনি উক্ত প্রজার দেনা শোধ করিতে প্রতিশ্রুত হইলেন। হতভাগ্য প্রজা নিস্কৃতি পাইল। পরদিন যখন দেনা শোধ করিতে রামনারায়ণ কাছারীতে গমন করিলে, দেখিতে পাইলেন, তখন কাছারীতে একটা সভা সম্মিলিত, বহু মৌলবী ও পণ্ডিত র্তাহাতে সমাসীন। রামনারায়ণ আসিযা আসন গ্রহণ করিলে সেই তহশীল কৰ্ম্মচাবিটী চৌধুরীকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন “আপনে গত কল্য প্রতিশ্রত হন যে আজ দিন আসিবেন, সেই জন্যই এই সভাব উদ্যোগ কবা হইয়াছে ১ বসু বংশের উদ্ধত কথাগুলি ১৩১৪ সালেব আষাঢ় সংখ্যা “আবতি” তে অধ্যাপক শ্রীযুক্ত পদ্মনামথ ভট্টাচাৰ্য্য বিদ্যাবিনোদ এম এ মহাশয়েব “স্বগীয় অনীন্দমোহন বসু” শীর্ষক নামক প্রবন্ধ হইতে গৃহীত।