পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪১ সপ্তম অধ্যায় : মোসলমান বংশ বিবরণ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পরগণায় বৰ্ত্তমানে ৭৮৩/০ হাল মাত্র ভূমি আছে। ইহার অপর দুই ভ্রাতার নামে খলিলপুর ও হবিবপুর গ্রাম প্রতিষ্ঠিত হয়। হবিবুর পুত্রের নাম গোলাম মোস্তাফা, ইহার মিসির মিয়া নামে এক পুত্র হয়; মিসির অতি নিষ্ঠুর প্রকৃতির লোক ছিলেন। কথিত আছে যে র্তাহার অন্দর মহলে একটি গভীর কূপ ছিল; মিসির ক্রোধের উত্তেজনায় সামান্য দোষে মনুষ্য হত্যা করিয়া সেই কূপে নিক্ষেপ করিতেন। এই নিষ্ঠুর কঠোর দণ্ড স্ত্রীলোকের উপরেই অধিক মাত্রায় পতিত হইত। কিন্তু র্তাহার পাপের শাস্তি অতি শীঘ্রই হইয়াছিলেন, বিবিধরোগে পীড়িত হইয়া যৌবনেই তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন, তাহার সম্পত্তি সেই সময় ঢাকায় নীলাম হইয়া গিয়াছিল। দৌলতপুরের চৌধুরীবর্গ আনন্দপুরের প্রতিষ্ঠাতা প্রসিদ্ধ আনন্দ রায়ের এক বংশীয় বলিয়া কথিত আচে। কারণান্তরে তাহারা মোসলমান ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিয়াছিলেন। আনন্দরায়ের বংশধরবর্গ বৰ্ত্তমানে হবিগঞ্জের বোলা গ্রামে বাস করিতেছেন। পরগণা-বাণিয়াচঙ্গ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের ২য় ভাগ ৩য খণ্ডের উপসংহারে বাণিয়াচঙ্গের “মৌলবী বাড়ীর” প্রসঙ্গে মৌলবী ওবেদুল হোসেনের কথা বলা গিযাছে। ওবেদুল হোসেন হাযদারবাদের নিজাম বাহাদুরের পুত্রদ্বয়ের শিক্ষক ছিলেন, ও তদীয় “তোষাখানা” বখশিশ পাইয়া তিনি বহু মণিমাণিক্যের অধিকারী হন ও সেই ধন রত্ন সহ দেশে আগমন করেন। ইহার পুত্রের নাম মৌলবী মাকিদুল হোসেন। বামশ্রীর সৈয়দ বংশীয় রজাওর রহমানের প্রথমা কন্যা নাবেদা বাণুর সহিত মাকিদুল হোসেনের বিবাহ স্থির হয়। আড়ম্বরের হিসাবে এই বিবাহ একটি স্মৰ্ত্তব্য ঘটনা। পুত্রের বিবাহে ওবেদুল সেন বহু অর্থব্যয় ও মহা আড়ম্বর করিয়াছিলেন। ব্যয়ের পবিমাণ লক্ষ মুদ্রা নিদ্ধারিত হইয়াছিল, কিন্তু ইহাতে ব্যয সংকুলান হয় নাই। কন্যা পক্ষেও ব্যয়ের মাত্রা এইরূপই ছিল এবং তাহা সংকুলানের জন রামশ্রীব কতক ভূসম্পত্তি বিক্রয় কবিতে হইয়াছিল। যৌতুক মধ্যে মূল্যবান বসনভূষণ পরিহিত বিংশতি ভূত্য-দম্পতি দান করা হইয়াছিল। দুঃখের বিষয় ও বংশের অবস্থা মধ্যযুগে হীন হইয়া, অর্থেব অস্থায়ীত্বের উদাহরণ দিতেছিল। সম্প্রতি এই বাড়ীর একজন ইংরেজী শিক্ষিত ব্যক্তি সবরেজিষ্টার পদে আসীন আছেন। বাণিয়াচঙ্গের সৈয়দ বংশীয়গণ তরফের সৈয়দ বংশের একটি উপশাখা। সৈয়দ শাহ এনায়েত নামক একব্যক্তি ভ্রাতৃবর্গের সহিত বিবাদক্রমে বাণিয়াচঙ্গের দেওয়ান উমেদরজার’ সময়ে বাণিয়াচঙ্গে আসিয়া বাস করেন। উমেদরজার পুত্র দেওয়ান আলমরজা, এনায়েত-পুত্র শাহ হোসেন উল্লাকে কতক নিষ্কর ভূমি “মদতমাস” স্বরূপ দান করিয়াছিলেন। শাহ হোসেন উল্লার পুত্রের নাম শাহ মিয়াজান। ইহার পুত্র সন্তান হয় নাই, মাসনী বিবি নামী একটি কন্যা ছিল। পশ্চিমাঞ্চল হইতে আগত ও ময়মনসিংহে উপনিবিষ্ট মেহেদিজ্জমা নামে একব্যক্তি জলসুখা আগমন করিয়াছিলেন, তিনিই এই কন্যার পাণিগ্রহণ করেন। এনায়েতের বংশ নাই, দৌহিত্র বংশীয়েরা জলসুখাব বাস কবিতেছেন ও বাণিয়াচঙ্গে মাতামহের সম্পত্তির অধিকার প্রাপ্ত হইয়াছেন। বাণিয়াচঙ্গেও সৈয়দবংশীয় মোসলমান আছেন। ১৯ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১য ভাগ ৩য় খণ্ড ৩য অধ্যায়ে বাণিয়াচঙ্গেব দেওয়ান বংশকথা বিবৃত হইযাছে।