পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪৯ প্রথম অধ্যায় : ব্রাহ্মণ বংশ বৃত্তান্ত 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত এক ব্যক্তি চাতুৰ্য্যবলে প্রভুর সম্পত্তি আত্মসাৎ করিয়া নিয়াছেন। এতদৃষ্টে সাচারাম পঞ্চখণ্ডে প্রত্যাগমন পূৰ্ব্বক রাঘবের পুত্রত্রয়কে দেশে আনিতে সচেষ্ট হইলে, রামনাথ ও বংশীবদন যাইতে অস্বীকৃত হইলেন; বিষ্ণু দাস সাচারামের সহিত দেশে আসিলেন। তাহারা পূৰ্ব্বনিবাস রায়পুরে না গিয়া যে বনে প্রথমে আশ্রয় লইয়াছিলেন, সেই জঙ্গল কাটিয়া বাড়ী প্রস্তুতপূৰ্ব্বক বাস করিতে লাগিলেন। বিষ্ণুদাস পিতৃ-ভূত্যের সৎপরামর্শ ও প্রভুপরায়ণতায় এতাদৃশ বিমোহিত হইলেন যে সাচারাম যে র্তাহাকে সেস্থানে আনিয়াছে এই কথাটা স্মরণীয় করিবার জন্য তিনি সেই নুতন স্থানকে সাচায়নি বলিযা পরিচিত করিলেন। সুচতুর কৃষ্ণানন্দ এই সংবাদ পাইয়া পূৰ্ব্বনিবাস নন্দিগ্রাম ত্যাগ করিয়া এই স্থানে আসিয়া বাটী নিৰ্ম্মাণ করিলেন ও বিষ্ণুদাসকে সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য উত্তেজিত করিতে থাকিলেও, তিনি মোকদ্দমা করিয়া কৃষ্ণানন্দের সহিত বিবাদে প্রবৃত্ত হওয়া অপেক্ষা সেই নব বসতি স্থানটিতে নিরুদ্বেগে বসিয়া জীবন কৰ্ত্তন করাই শ্রেয়ঃ বলিয়া বোধ করিলেন। যাহার যাহা প্রাপ্য, এক সময় না এক সময়, সে না পাইলে তাহার বংশের পরবত্তী কেহও তাহা ভোগ করিয়া থাকে; অনেক সময় ইহা দেখা যায়। বিষ্ণুদাস কৃষ্ণানন্দের সহিত বিবাদে প্রবৃত্ত না হইলেও, তাহার পুত্ৰগণ সম্পত্তির কিয়দংশ উদ্ধারে সমর্থ হইয়াছিলেন। বিষ্ণুদাসের ছয়পুত্র; তন্মধ্যে রতিনাথ অতি মেধাবী ছিলেন। একদা বাড়ীর পাশ্বে বালকবর্গ খেলা করিতেছিল, সেই পথে একটি প্রজা পাকা কলা লইয়া কৃষ্ণানন্দকে উপহার দিতে যাইতেছিল, বালস্বভাববশতঃ বতিনাথ সেই ব্যক্তিকে, কয়েকটি কলা দিয়া যাইতে বলিলে সে উত্তর দিল “এই কলা তোমারই প্রাপ্য ছিল, কিন্তু তোমার পিতা সম্পত্তি ছাড়িয়া দিলেন; কৃষ্ণানন্দই এখন আমাদের মিরাসদার । তোমার প্রাপ্য পরে কড়িয়া নিয়াছে, আমরা কি করিব ?” এই কথাগুলি বালকের মৰ্ম্মে প্রবেশ করিল ও তখনই তিনি সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য মনে দৃঢসঙ্কল্প করিলেন। রতিনাথ যখন বয়ঃপ্রাপ্ত হইলেন, তিনি কখনও সেই কথাটি ভুলিয়া রহিলেন না; সংসারে প্রবেশ করিয়া প্রথমেই তিনি স্বীয় কনিষ্ঠ ভ্রাতা রতুবগকে সঙ্গে লইয়া ও কয়েকজন অনুচর সহ বহুকষ্টে বঙ্গ রাজধানীতে উপস্থিত হইলেন এবং অনেক চেষ্টায় আপনাদের অবস্থা নবাবের গোচর করিলেন। নবাব যুবকের বুদ্ধি ও সাহস দর্শনে প্রীত হইয়া শিক সোণাইতার প্রকৃত মালিক বলিয়া তাহাকে সনন্দ প্রদান করিলেন। রতিনাথ চৌধুরাই সনন্দ প্রাপ্ত হইলেন এবং রতুগর্ভ পুরকায়স্থ পদবি লাভ করিলেন। ইহারা পরে দেশে আসিয়া সনন্দের বলে স্বীয় সম্পত্তির উদ্ধার সাধন করেন ॥২ রামনাথের বংশধরগণ পঞ্চখণ্ড নযাগ্রামে বাস করিতেছেন। ইহার একশাখা তথা হইতে ইন্দেশ্বর গিয়াছেন। বংশীবদন পবে পঞ্চখণ্ড হইতে বোয়ালজুরে গমন করেন, তদ্বংশীয়গণ তথায় আছেন। ২ পববৰ্ত্তীন পরিশিষ্টেইহাদেব বংশাবলী লিখিত হইবে।