পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ- পঞ্চম খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩৬০ নারাযণ দামের সময়ে দেববংশীয় একব্যক্তি স্বজন সহিত পাগলাতে আগমন করিয়া স্বীয়বংশ প্রতিষ্ঠা করেন। দাম ও ঘোষ বংশীয়গণ র্তাহার কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা করেন নাই। কালক্রমে নারায়ণ দাম মৃত্যুমুখে পতিত হইলনে। নারায়ণ দামের পুত্রের নাম জনাৰ্দ্দন। ইহার সময়ে দেব বংশীয়গণ দাম ও ঘোষ বংশের বিদ্যমান স্বীয় প্রতিপত্তি স্থাপনের কোন সম্ভাবনা নাই দেখিয়া সদলবলে ইহাদিগকে অতর্কিতভাবে আক্রমণ করিয়া হত্যা করেন। জনাৰ্দ্দনের স্ত্রী তখন গর্ভবতী ছিলেন। মাধবদেব নামে দামদের একটি অনুগত ভৃত্য এই বিপৎপাতে, গর্ভবতী প্রভুপত্নীর প্রাণরক্ষার্থে তাহাকে লইযা পলাযন পূৰ্ব্বক বরমচাল অঞ্চলে চলিয়া যায়। সেই স্থানে গর্ভবতী দাম পত্নী এক বংশ রক্ষক পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এই পুত্র এবং তঃপর কয়েক পুরুষ পর্যন্ত সেই অঞ্চলেই অবস্থিতি করেন, কিন্তু ইহারা কেহই আপন পূৰ্ব্বনিবাস ও সম্পত্তি উদ্ধারের কথা ভুলেন নাই, কেবল সুযোগ অপেক্ষা করিতেছিলেন। পরে যখন “জোর জবরদস্থির” কাল চলিয়া গেল, ইংরেজের সুশাসনে দেশে শান্তি স্থাপিত হইতে লাগিল, তখন দাম ংশীয়গণ পাগলা অধিকার করিয়া রহিয়াছেন, যে স্থানে তাহারা নিজ শত্র দাম ও ঘোষকে বিমদিত করেন, সেই স্থানের নাম "শত্র মদন” বলিয়া খ্যাত হইয়া রহিয়াছে। তাহারা দেখিলেন যে, পূৰ্ব্ব সম্পত্তি সহজে উদ্ধারের আশা নাই, তখন বাণিযাচঙ্গাধিপতি দেওয়ান উমেদ বজার প্রভাব সেই অঞ্চলে অতি প্রবল, তাহার নামে সকলেবই মস্তক অবনত করিতে হয়। এতদুষ্টে তাহাবা স্বয়ং বিবাদে প্রবৃত্ত না হইয়া, দেওয়ানেরই কাছে সুবিচার প্রার্থী হইলেন। দেওয়ান বাহাদুর দেখিলেন যে ইহারা পাগলা প্রকৃত মালিক বটেন, কিন্তু দেব বংশীয়গণ বহুদিন যাবৎ পাগলায় অধিকার স্থাপন করিয়া ভোগ করিতেছেন। তাহাদিগকে তাহা হইতে বিচ্যত করিলে ইহাদের সহিত ত{হাদেব পূৰ্ব্বশত্রুত বিবৰ্দ্ধিতই হইবে, তাহা শান্তিভঙ্গের কারণ মাত্র হইবে এবং উভয় বংশে অবিরত বিবাদ চলিবে; সুতবাং তিনি এক নূতন পন্থা করিলেন, দাম বংশীয়গণ তত্ৰত মৌলিক অধিবাসী বলিয়া ইহাদিগকে তিনি সম্পূর্ণ পৃথক “সিচনী” নামক গ্রাম প্রদান করিলেন। সিচনী গ্রাম প্রাপ্ত হইয়া দাম ংশীয়গণ অগত্যা সন্তুষ্ট হইলেন, দেব বংশীয়দের সহিত আর বিবাদের প্রয়োজন হইল না। দাম বংশীয় শিবরাম, কিম্বা তদীয় পিতা সিচনী প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তাহা নিশ্চিত জানা যায় না। শিবরামের পুত্রের নাম সোণারাম, তাহার পুত্র দুল্লভবাম ও ভুবনরাম। হরিষরাম নামে দুৰ্ল্লভরামের জ্ঞাতি সম্পর্কিত এত ভ্রাতা ছিলেন। এই উভয়েব যুক্ত নামে তত্রত্য ৩নং হরিষ দুৰ্ল্লভ চিটতালুকের নামে খ্যাত আছে। দুৰ্ল্লভরামের পুত্র দুর্গাপ্রাসাদ ও রামপ্রসাদ, রামপ্রসাদের পুত্রের নাম রাধানাথ দাম । ভুবনৱাম দামের পুত্রের নাম গঙ্গাপ্রসাদ দাম, তৎপুত্র সাধক প্রবর বৈষ্ণব শাস্ত্র তত্ত্বজ্ঞ শ্ৰীযুত লোকনাথ দাম এবং তাহাব কনিষ্ঠ সহোদর শ্ৰীযুত গোকুলনাথ দাম; ইহার চেষ্টাতেই আমরা এই বিবরণ প্রাপ্ত হইয়াছি। দাম ও দেববংশে সম্প্রতি সম্প্রীতি আছে। পাগলার পূৰ্ব্ব সম্পত্তি দাম বংশের হস্তচ্যুত হইয়া দেববংশের অধিকৃত হইলে, দেববংশীয়গণ সেই সম্পত্তিতেও ১নং হইতে ৮নং পর্যন্ত তালুক নিজেদের মধ্যে বন্দোবস্ত গ্রহণ করেন। ৮নং তালুকের অধিকারী পরে মোহাম্মদীয় ধৰ্ম্ম অবলম্বন