পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৬৩ দ্বিতীয় অধ্যায় : কায়স্থাদি বংশকথা 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত করেন। প্রতাপরায় বংশে প্রধান এবং বয়োধিক ছিলেন, সুবংশ নিরাপত্যে ইহাকে সম্পত্তির অদ্ধাংশ ন্যায্যমত ছাড়িয়া দিলে, তাহারই নামে সুখাইড়ের ১নং তাং মাং ওমি বন্দোবস্ত হয়। মোহাম্মদ ওমি সেই স্থলে মোহাম্মদ নগর (মামুদ নগর) নামে গ্রাম স্থাপন পূৰ্ব্বক তথায় বাড়ী প্রস্তুত করেন। সুবংশ নিজ নামে ২নং তালুক বন্দোবস্ত করেন। ইহার পর অপর দুই ভ্রাতা আগমন করিয়া সম্পত্তির অংশ প্রার্থী হইলে সুবংশরায় ওমিকে এই কথা জ্ঞাপন করিলেন, কিন্তু তিনি আপন অদ্ধাংশ হইতে ইহাদিগকে অংশ দিতে অস্বীকৃত হইলেন; তখন উদার হৃদয় সুবংশ নিজ অৰ্দ্ধাংশ হইতেই গোপীরায় ও সদারায়কে সমাংশে অদ্ধসম্পত্তি ছাড়িয়া দিলেন। তখন সুখাইড়ের অৰ্দ্ধ সম্পত্তির অধিকারী মোহাম্মদ ওমি রহিলেন, চতুর্থাংশ সুবংশের অধিকারে রহিল এবং অপর চতুর্থাংশ গোপীরায় ও সদারায় সমাংশে প্রাপ্ত হইলেন। মোহাম্মদ ওমির বংশধরবর্গই রজাকপুরের মোসলমান চৌধুরীগণ। ওমির হিন্দুর নামে তত্ৰত্য প্রতাপপুর মৌজার নাম হইয়াছিল। সুবংশের নামেও সুখাইড়ের সুবংশপুর মৌজার নাম হয়।’ সুবংশের সম্পত্তি বড়হিস্বা, গোপী রায়ের সম্পত্তিমধ্যম হিস্ব এবং সদাবায়ের সম্পত্তি ছোট হিস্কা নামে খ্যাত হইয়াছে। সুবাংশ নিজ গ্রামে স্বগীয় কালীমন্দিব প্রতিষ্ঠা করিয়া আরও স্মরণীয় হইয়াছেন। সুবংশের পুত্র মোহনলাল নিজেদের দেবতা স্বগীয় লক্ষ্মীনারায়ণের নিৰ্ম্মাণ করিয়া সেবা পরিচালনের জন্য বৃত্তি স্থাপন করেন। গৌর রায় নামে ইহার এক ভ্রাতা ছিলেন, তাহার একমাত্র তনয়া রাজ্যেশ্বরী বিবাহযোগ্য হইলে, জগবাপের ভোলানাথ উমকে গৃহজামাতারূপে আনয়ন করিযা তৎসহ রাজ্যেশ্বরীর বিবাহ দেন। প্রায় আট হাজার টাকা ব্যয়ে তাহাদিগকে পৃথক একটি বাড়ী করিয়া দেওয়া হয় ও বার্ষিক ২৫০০ টাকা আয়েব ভূসম্পত্তি দান করা হয। এই বাড়ী “নযাবাড়ী” নামে খ্যাত হয; ইহা সুখাইডের ৪র্থ জমিদারবাড়ী। জামাতা ভোলানাথ বুদ্ধিমান ও গুণবান ব্যক্তি ছিলেন, আজ পর্যন্ত লোকমুখে তাহার কথা গল্পের মতে শ্রুত হওয়া যায়। বৈষ্ণবধৰ্ম্মে তাহার ন্যায় দৃঢ় বিশ্বাসী ভক্ত অল্পই দৃষ্ট হয়; অশীতি বর্ষ বয়সে সজ্ঞানে তাহার মৃত্যু ঘটে। মোহন রায়ের পুত্র মুরারিচাঁদ সাধারণতঃ ময়ূর চৌধুরী বলিয়া খ্যাত ছিলেন। তাহার সুদীর্ঘ সুবিশাল ও পূর্ণায়ত দেহ সৌন্দর্যের আধার স্বরূপ ছিল; তদীয় বিরাট বপুঃ দর্শনে লোকের ভয় ও বিস্ময় জন্মিত, আবার তাহার মুখশ্রী এমনই মনোহর ছিল যে বহুলোক কেবল র্তাহাকে দেখিবার জন্যই আসিত। তাহার পুত্র দানশীল, পরহিত-রত ও সুপুরুষ বলিয়া খ্যাত শ্ৰীযুত মথুরামোহন চৌধুরী হইতে এই বিবরণীর এক প্রস্ত প্রাপ্ত হইয়া উপকৃত হইয়াছি। বেহেলির পুরকায়স্থ বংশ সুনামগঞ্জের অন্তর্গত বেহেলি গ্রামবাসী দাসবংশের আদি পুরুষ প্রথম রায় রাঢ়দেশ হইতে এস্থানে প্রথমে অগামন করেন। তৎকালে ঐস্থান জঙ্গল পরিপূরিত ছিল, প্রথমরায়ু প্রথমে জঙ্গলভূমি সঙ্গীয় ১২. এ বংশীয় আরও কয়েক ব্যক্তির নামে নিম্নলিখিত মৌজাগুলির নাম হইযাছে—বাবুপুর, শুকদেবপুর, যশমন্তপুর, সম্পদপুর।