পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয ভাগ- পঞ্চম খণ্ড 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩৬৬ যথাকালে জয়শ্রী পৌছিয়া করাতদ্বারা, দুর্গাপ্রসাদকে দ্বিখণ্ডিত করিতে আদেশ দিলেন। দুর্গাপ্রসাদের গৃহে হাহাকার ধরনি উখিত হইল, র্তাহার স্ত্রী মনোহরকে অন্দরে লইয়া গিয়া ক্ৰন্দন করিতে করিতে স্বামীর প্রাণ-ভিক্ষা চাহিলেন। র্তাহার কাকুতি মিনতি ও অনুরোধে মনোহরের, চিত্ত দ্রব্য হইল, তিনি তৎপ্রদত্ত একথালা স্বর্ণমুদ্রা লইয়া দেওয়ানের কাছে গেলেন ও দুর্গাপ্রসাদের অপরাধানুরূপ বহু লাঞ্ছনা ভোগ হইয়াছে এক্ষণে দেওয়ান নজর গ্রহণ করিলেন। দুর্গাপ্রসাদ প্রাম মনোহর সুখাইড়ের চৌধুরী বংশে যে বিবাহ করেন, সেই স্ত্রীর গর্ভে সোণারাম, ধনরাম ও স্বরূপরামের উদ্ভব, তাহার অপর পুত্রদয় দ্বিতীয়া স্ত্রীর গর্ভসভূত। সোণারাম পিতার ন্যায় বুদ্ধিমান ছিলেন, তিনি পূবেবাক্ত সনন্দের ভূমি ব্যতীত আরও অনেক ভূমি বন্দোবস্ত করেন, তন্মধ্যে; কতক ভূমি (১৭নং তাং) তাহার নাম ঘোষণা করিতেছে। র্তাহার ও অনন্তরামের যুক্ত নামে অপর একটা তালুক (১১২নং সোণা-অনন্ত) সংজ্ঞিত হইয়াছে। র্তাহার অনুজ ধনরামের নামেও একটি তালুকের নাম হইয়াছে (১১৩নং তাং)। তাহার ভ্রাতা স্বরূপরাম বেহেলির রাধামাধব বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা করিয়া স্বগীয় হইয়াছেন। দশসনা বন্দোবস্তের পর হইতে মনোহর রায়ের পরবর্তী বংশধরগণ তালুকদার বলিয়া খ্যাতিলাভ করেন, চন্দ্রনারাযণের বংশীয়গণ পূৰ্ব্বের পুরকায়স্থ পদবিতেই পরিচিত আছেন। র্তাহারা সনন্দোল্লেখিত ভূমি প্রাপ্ত হন নাই, মনোহর প্রদত্ত কিছুটা জমি পাইয়াই তুষ্ট আছেন। বেহেলির গোস্বামী এবং ব্রাহ্মণগণ মনোহর প্রদত্ত দেবত্র এযাবৎ ভোগ করিতেছেন। এই বংশের উপযুক্ত সন্তান শ্রীযুক্ত কৈলাসচন্দ্র দাস মহাশয় স্বীয় বংশ বিবরণ, পূৰ্ব্ব পুরুষ প্রাপ্ত সনন্দের চিত্রাদি ও দাস বংশীয় অন্য ২/১টি বিবরণ প্রদানপূবর্বক আমাদিগকে বিশেষ সাহায্য করিয়াছেন। গৌরাঙ্গের দাস-চৌধুরী বংশ এই বংশের আদি পুরুষের নাম নিধিরাম। ইনি বঙ্গদেশীয় জনৈক কায়স্থ সন্তান। বাল্যে একটি মোহরের কার্যে নিযুক্ত হইয়া পদোন্নতি সহকালে শ্রীহট্টে প্রেরিত হন। এখানে আসিয়া দাস জাতীয় কোন ভূম্যধিকারীর এক সুলক্ষণা কন্যাকে বিবাহ করিয়া এদেশবাসী হন। সুরমা নদীর পশ্চিম ভাগে একটি উচ্চ জঙ্গল ভূমি, তিনি জনৈক রাজপুরুষের অনুগ্রহে প্রাপ্ত হইয়া তাহাতে বসতবাটী নিৰ্ম্মাণ করেন। র্তাহার বাটী যে শ্রীসম্পন্ন স্থানে বিনিৰ্ম্মিত হয়, সে স্থানটী লক্ষণশ্রী* নামে খ্যাত । নিধিরামের জ্যেষ্ঠপুত্র ধনরাম রাজস্ব সংগ্রহের কাৰ্য্যে নিয়োজিত হইয়া “চৌধুরী” আখ্যায় খ্যাত হন। ইহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা অনন্তরাম মোসলমানধৰ্ম্ম অবলম্বনে মোহাম্মদ আয়েজদী নাম প্রাপ্ত হন। ধনরামের পুত্র শ্যামরায় স্থানীয় অস্বাস্থ্য লক্ষ্য করিয়া এস্থান হইতে কিঞ্চিৎ দূরবর্তী গৌরাঙ্গের গ্রামে চলিয়া যান। ইহার পুত্র কেশব রায় তৎপুত্র তিলক রায়। তিলক রায়ের পুত্র লুক্ষ্মণ রায় ও জগদীশ। পুত্রহীন লক্ষ্মণরামের নামে লক্ষ্মণশ্রী পরগণার ৫নং তালুকটি রক্ষা করিতেছে, উহা ১৫ এই লক্ষ্মণশ্রী পরগণা নহে, একটি গ্রাম। পরগণা লক্ষ্মণশ্রী হইতে বিভিন্ন জ্ঞাপনার্থে "ইহাকে পুরাণ লক্ষ্মশ্রী” বলা হইয়া থাকে।