পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩৮ ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। যে গ্রামে তিনি যাইতেন তাহার মহিমায় লোক আকৃষ্ট হইয়া যাইত ও হরিনাথ গ্রহণে পবিত্র যে যে স্থানে তাহার কীৰ্ত্তন বিশেষ ফলপ্রদ হইয়াছিল; তন্মধ্যে ভানুগাছ, বালি শিরা, সাতগাঁও আতুয়াজান, শ্রীহট্ট শহর, লক্ষ্মীপুর, ইন্দেশ্বর, লংলা প্রভৃতি প্রধান। তিনি সাতগাও অবস্থিতি কালে ঠাকুরবাণীর শেষ মহোৎসবের নিমন্ত্রণপত্র প্রাপ্তে দিনারপুর গমন করেন ও তথায় ঠাকুরবাণীর সহিত মিলিত হন। এই উৎসবের শেষ দিনেই ঠাকুরবাণী আত্মীয় বর্গ হইতে বিদায় লইয়া লোকলোচনের অন্তরালে চলিয়া যান।" বঞ্চিত পরিভ্রমণ কালে, যাঁহাকে সম্মুখে পাইতেন, তাহাকেই আগ্রহ সহকারে বলিতেন— “হরি হরি একবার মুখে বল ভাই। আমরা কলির জীবের অন্য গতি নাই। কীৰ্ত্তনে প্রায়শঃ তিনি স্বরচিত একটি গীত ব্যবহার করিতেন, তাহা এই ৪— “একান্ত ভজ গৌরাঙ্গ চরণ। এমন সম্পদ আর নাহিক ভুবন।। নিরবধি ভববিধি যাহা না পাইলা । অবতরি গোরাচাদ তাহা বিলাইল । হরিনাম সংকীৰ্ত্তন নাচিয়া গাইয়া। আপন মাধুর্য ভাব দিলা জানাইয়া। যশোদানন্দন পহু মাধুর্য্য সাধিয়া। নবদ্বীপ হাটে আনি দিলা চালাইয়া ৷ মোসম অধম লাগি কৃষ্ণের অবতার। বঞ্চিত কহরে জাণ গৌরাঙ্গ আমার ।" ঘোষ ঠাকুর বালিশিরার জনৈক মোসলমানকে বৈষ্ণব ধৰ্ম্মাশ্রিত করেন। ভানুগাছ অবস্থিত কালে তারণ রামধর নামক এক ব্যক্তির বাড়ীতেই তাহার কীৰ্ত্তন স্থান নিণীত হইয়াছিল। আতুয়াজনে বহুতর ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তি র্তাহার নিকটে সমুপস্থিত হইয়াছিলও বলিয়া কথিত আছে। প্রাণশঙ্কর চৌধুরী নামে তথাকার এক ব্যক্তি বিশেষ যত্ন সহকারে তাহার সেবা করেন। তিনি ইন্দেশ্বর পৌছিলে অত্রত খলাগ্রাম বাসী জনৈক চৌধুরী তাহার অভ্যর্থনা করেন। লংলাতে প্রথমতঃ কোন কোন ব্রাহ্মণ র্তাহার বিরুদ্ধে উত্থিত হইয়াছিলেন, কিন্তু শেষে তাহারাও সিদ্ধ মহাত্মার মহিমা দৃষ্টে তাহার আদর করিতে অবহেলা করেন নাই। বাড়ীতে ঘোষ ঠাকুর এইরূপ নানা স্থানে কীৰ্ত্তন প্রচার পূৰ্ব্বক বহুদিন পরে বাড়ীতে আসিলে, সেই সকল স্থানের ভক্তবর্গ তাহাকে দর্শন করিতে আসিতে লাগিলেন। একদা এক চোর ভাবিল যে, বিদেশের নানা জনে ইহাকে অবশ্য ধন দান করিয়া থাকে, এই ধন হস্তগত করিতে হইবে, এই ভাবিয়া সে ৩৭. ঠাকুরবাণীর বৃত্তান্ত এসব কথা বিস্তারিত কথিত হইবে।