পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৫২ যখন চন্দন ঠাকুরের মৃত্যু হয় পীর বাদশা তখন ক্ষৌরি করিতে বসিয়াছিলেন, তিনি নাপিতকে বলিয়া উঠেন—“বন্ধু অপেক্ষা করিতেছেন শীঘ্ৰ ক্ষৌরি শেষ কর।” তৎক্ষণাৎ তিনি বন্ধু দর্শনে যাত্রা করেন। চন্দনের ভ্রাতা রামচন্দ্রের পুত্রের নাম শ্যামানন্দ এবং বলাইর পুত্রের নাম গঙ্গাধর। ইহারা নবদ্বীপের বুড়াশিব তলায় সিদ্ধি লাভ করেন। খুল্লতাতের মৃত্যুর পর দুই ভাই দেশে আসিয়া তদীয় অভাব পূর্ণ করেন। ইহাবা “রাগিনী সিদ্ধ” ছিলেন; কথিত আছে যে যখন তাহারা মল্লার রাগিণী আলাপ করিতেন তখন মেঘাড়ম্বর হইত। ইহাদের এই গুণের কথা শুনিয়া বাণিয়াচঙ্গের দেওয়ান উমেদ রাজা ভ্রাতৃদ্বয়কে আহানপূৰ্ব্বক দ্বিপ্রহর রৌদ্রের মধ্যে মেঘ আনিতে বলিয়াছিলেন এবং শুনা যায় যে তাহারাও উভয়ে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন। এই জন্য র্তাহারা দেওয়ান হইতে প্রচুর পরিমিত পারিতোষিক ও ৩/২। ভূমির বাড়ী ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন। শ্যামানন্দ বিরচিত দেবী বিষয়ক বহুতর সঙ্গীত আছে। এখনও কালী পূজাদিতে বলিদানের সময় যে “রণগীতি” হয় তাহাতে দ্বিজ শ্যামানন্দের ভণিতা শুনা যায়। চন্দ্রনাথ নন্দী ইনি বাণিয়াচঙ্গ নিবাসী। ইনি আসাম সেক্রেটারিয়েটে বিচক্ষণতার সহিত কাজকৰ্ম্ম করিয়া যে সমাদৃত আছে। তাহারই নেতৃত্বে রায় সাহেব শ্রীযুক্ত প্রকাশচন্দ্র দেব, শ্রীযুক্ত সৰ্ব্বানন্দ দাস (ই এ সি) বাবু শরচ্চন্দ্র ধর, রায়বাহাদুর সারদাচরণ দাস, রায় সাহেব রক্ষ্মিনীকান্ত গুপ্ত, শ্রীযুক্ত দীননাথ দাস ও কৈলাশচন্দ্র দাস এবং শরচ্চন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য প্রভৃতি সুখ্যাতির সহিত কৰ্ম্ম করিয়া শ্রীহট্টের গৌরব বৃদ্ধি করিয়াছেন ও করিতেছেন। “নন্দী বাবু” পশ্চাৎ ই এ সি হন। কালেক্টরির কার্যে তাহার ন্যায় দক্ষলোক দৃষ্ট হয় না। ইনি অতি নিৰ্ম্মল চরিত্রের লোক ছিলেন, সেরেস্তা হইতে ঘুষখোরের দল তাড়াইয়া এক সুদৃষ্টান্ত প্রদর্শন করিয়া ছিলেন। তেজস্বিতা, দেশ বাৎসল্য, স্বধৰ্ম্ম প্রায়ণতা ইত্যাদি গুণে তিনি বিভূষিত ছিলেন। ৭১ বৎসর বয়সে ১৯০৭ খৃষ্টাব্দে তাহার কাশী প্রাপ্তি ঘটে। চন্দ্রনাথ নন্দী মজুমদার ইটাখালার নন্দীবংশ ইহার জন্ম; (শ্রীঃ ইঃ ৩য় ভাঃ ৪র্থ খঃ ৫ অঃ বেজোড়ার নন্দী বংশ কথাব টাকায় বংশ তালিকা দেখুন) ইতি শিলচরের প্রসিদ্ধ উকিল ছিলেন, ইনি ও র্তাহার সহোদর দীননাথ বয়সে উকালতি ছাড়িয়া আসিবার সময় তাহার মক্কেল কাছাড়ের প্রায় সমস্ত প্লেন্টার সভা করিয়া ও প্রচুর উপটৌকন দিয়া তাহার অসাধারণ গুণ সত্তার সাক্ষ্যপ্রদান করিয়া ছিলেন। দুঃখের বিষয় ইহার বিস্তৃত জীবন চরিত আমরা পাই নাই। কাছাড়ে ইনি সেরূপ প্রতিভা ও গৌরব প্রদর্শন করিয়া গিয়াছিলেন, সুখের বিষয় মাননীয় শ্রীযুক্ত কারিনাকুমার চন্দচৌধুরী ও শ্রীযুক্ত মহেশচন্দ্র দত্ত প্রমুখ ব্যবহারজীবী মহাশয়গণ তাহা অব্যাহত রাখিয়া শ্রীহট্টের গৌরব বদ্ধন করিতেছেন। চন্দ্রশেখর আচাৰ্য্যরত্ন শ্রীচৈতন্য ভাগবতে শ্রীহট্টবাসী ভক্তগণের নামের মধ্যে চন্দ্রশেখরের নামও আছে। চন্দ্রশেখর