পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহgের ইতিবৃত্ত ৫৪ খানি মুদ্রিত হইয়া এম এ পরীক্ষার সংস্কৃত পাঠ্য নির্দিষ্ট হইয়াছিল। “নবদ্বীপ মহিমা” নামকগ্রন্থে ইহাদের কথা বিস্তারিত লিখিত হইয়াছে। জগদীশ পণ্ডিত এই জগদীশ পণ্ডিত শ্ৰীমহাপ্রভুর প্রায় পিতৃবয়স্ক ও পরম পণ্ডিত ছিলেন। নিমাইর বাড়ীর পাশ্বেই তাহার গৃহ ছিল। ইনি পরম সাধু ব্যক্তি ছিলেন। এক একাদশীতে শিমু নিমাই ইহার প্রস্তুত নৈবেদ্যু ভক্ষণ জন্য ক্ৰন্দন করিতে থাকেন। জগদীশ নিমাইর ক্রন্দন শুনিয়া দেখিতে আসেন। নিমাইকে দেখিয়া তাহার বালগোপাল বলিয়া মনে হইল ও তৎক্ষণাৎ তিনি বিষ্ণুর জন্য প্রস্তুত নৈবেদ্য আনিয়া প্রদান করিলেন, নিমাই শান্ত হইলেন। শ্ৰীমহাপ্রভুব চরিত্রে উপসংহারে ইহার কথা কিঞ্চিৎ উল্লেখ করিয়াছি। ইনি মহাপ্রভুব একজন পার্ষদ ভুক্ত ছিলেন এবং এদেশে হইতে নবদ্বীপে—মায়াপুরে গিয়া শ্রীহট্টবাসী অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের সহিত একত্রে বাস করেন। “জগদীশ চরিত্র বিজয়” নামক প্রাচীন গ্রন্থে ইহাকে “পূৰ্ব্ববঙ্গবাসী" বলা হইয়াছে। নিমাই সন্ন্যাসে পরে ইনি নবদ্বীপ হইতে ষশোড়া গ্রামে গমন করিয়া জগন্নাথের সেবা প্রতিষ্ঠা কবেন ও তথায় অবস্থিতি করেন। জগন্নাথ বৈদ্য জগন্নাথ বৈদ্য কুত “শ্রীচৈতন্যের পাচালী” নামে একখানা ক্ষুদ্র পুস্তিকা পাওযা গিযাছে এই পাঁচালীতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সেবা-ভোগ কি ভাবে দেওযা কৰ্ত্তব্য, তাহাই লিপিবদ্ধ হইয়াছে। ইহাতে বর্ণিত হইযাছে যে জনৈক বাজা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সেবা ভোগ সম্বন্ধে এক স্বপ্নদর্শন করেন এবং জগন্নাথ বৈদ্য দ্বারা তাহা লিখাইয়া রাখেন, ইহাতেই পাঁচালীর উৎপত্তি হয়। গ্রন্থকার যে শ্রীহট্টবাসী ছিলেন এবং সম্ভবতঃ ঢাকাদক্ষিণের শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুব সেবার বিবরণ ও রীতি বর্ণিত করাই যে তাহার উদ্দেশ্য, ইহা অনায়াসেই বুঝা যায়। ঢাকাদক্ষিণেব “বেজেব পাড়া” নামক স্থানে পূৰ্ব্বে বৈদ্য জাতীয় লোকের বাস ছিল। গ্রন্থকাব লিখিয়াছেন ঃ“বিদ্যাপুর হৈতে যে সাধুজন আইলু দেশ ভাষা মতে গ্রন্থ লেখিয়া আনিনু।। সাধু জন দ্বারায় গ্রন্থ আনিল এথাতে। নিজ ভাষা মতে লিখি রাখে জগনাথে । জগন্নাথ নামে গৃঢ়—গেীরদেশে স্থিতি। স্বপ্নহনে (?) সে চৈতন্যে পদে রহুক ভকতি।। বোধ হয় জগন্নাথের পূৰ্ব্বনিবাস বিদ্যাপুর গ্রাম। বিদ্যাপুর কোথায় ? শ্রীহট্টের বিদ্যাপুর, বিদ্যানগব প্রভৃতি নামাত্মক একাধিক গ্রাম আছে, জগন্নাথের বিদ্যাপুর কোনটি, বলা যায় না। “গেীরদেশ” কোন দেশ ? শ্রীহট্টের প্রসিদ্ধ গৌড় না কি ? না শ্ৰীগৌর বিগ্রহের দেশ ঢাকাদক্ষিণই “গৌরদেশ” নামে কথিত হইয়াছে? সম্ভবতঃ "গৌড়দেশ” স্থলে লিখিবার ভুলে গৌবদেশ হইয়া পড়িয়াছে শাহজলাল কত্ত্বক বিধবস্ত হইলেও প্রাচীন “গৌড়" নামটি অনেকেবই প্রিয় ছিল। কিন্তু শ্রীচৈতন্যের পাচালী সম্বন্ধে এ সকল প্রশ্নের মীমাংসা ভাব পাঠকের হাতে থাকাই ভাল। শ্রীচৈতন্যের পাঁচালীর যে প্রতিলিপি পাওয়া গিয়াছে, তাহা ঢাকা দক্ষিণের “বিশ্বম্ভর মিশ্র কত্ত্বক ১১৭৪ বাং বুধবার ১ দণ্ড থাকিতে লেখা সমাপ্ত হয়।” শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের দ্বিতীয় ভাগ ১ম খঃ ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের টীকায় শ্রীহট্টবাসী রঘুনাথকৃত বাবাম্বর নামক আর একখানা পাঁচালীর পরিচয় দেওয়া