পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৭ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত আমি তোমায় শ্ৰীক্ষেত্রে লইয়া যাইব। কি কৌশলে বলা যায় না, জগন্মোহন দেখিলেন যে তাঁহার পায়ের শৃঙ্খল বিমুক্ত হইয়া গিয়াছে। তাহার ভাবিবার আর সময় ছিল না। অভাগিনী গর্ভবতী পত্নী সম্মুখে নিদ্রিতা, তাহার প্রতি ভুক্ষেপও করিলেন না, সেই পাণ্ডা বেশী পুরুষের সহিত তিনি চলিলেন। জগন্মোহনের বয়স তখন বিংশতি বৎসর মাত্র। শ্রীহট্ট জিলা অতিক্রম করিয়া ত্রিপুরার অন্তর্গত লালমাই পাহাড়ে পৌছিলেন ,“ তখন সেই পুরুষ বলিলেন, একটু দাড়াও, আমি নিকট হইতেই অন্য যাত্রী লইয়া আসিতেছি। জগন্মোহন দাঁড়াইয়া রহিলেন, কিন্তু সে পুরুষ আর ফিরিয়া আসিলেন না; তখন তিনি একাকীই বনপথে ধাবিত হইলেন। 卿 জগন্মোহন ভাগবতের মতে তিনি চন্দ্রনাথ তীর্থে উপনীত হইয়া কিছুদিন তথায় যোগমগ্ন হইয়াছিলেন; তৎপর তথা হইতে ক্ষেত্র পথে ধাবিত হন। অন্যত্র কিছু চন্দ্রনাথ গমন প্রসঙ্গ নাই, লালমাই হইতেই শ্ৰীক্ষেত্র গমন লিখিত আছে। জগন্মোহনের সঙ্গে কাণাকড়িও ছিল না; কিন্তু সাগর-গামিনী বেগবতী নদীকে কোন বাধাই আটকাইয়া রাখিতে পারে না, তিনি তথা হইতে কয়েক দিনে আঠারনলার ঘাটে গিয়া উপস্থিত লেন। যাত্ৰিগণের নিকট হইতে এই ঘাটেই তখন রাজকর আদায় হইত, জগন্মোহন কর দিতে না পারিয়া বিরস-বদনে বসিয়া রহিলেন। কথিত আছে, সেই রাত্রে মন্দিরের প্রধান পাণ্ডা স্বপ্নে একটি আদেশ প্রাপ্ত হন তাহা এই ঃ “জগন্মোহন নাম তার জগত বিদিত। আঠার নালার ঘাটে ভক্ত উপস্থিত।” জগন্মোহন চরিত্র (১২৩৮ বাং প্রতিলিপি হইত।) পরদিন প্রভাতে প্রধান পাণ্ডার প্রেরিত লোক আঠারনালার ঘাটে গিয়া খোজ করিয়া জগন্মোহনকে পাইল ও সম্মান সহকারে সঙ্গে করিয়া লইয়া আসিল । জগন্মোহন এযাবৎ অদীক্ষিত ছিলেন, পিতার ভয়ে গৃহে থাকা কালে একথা মুখে আনিতে পারেন নাই। এক্ষণে জগৎ পিতার আদেশ লইয়া মুরারিজী নামক জনৈক ছত্ৰধারী রামানন্দী বৈষ্ণবের নিকট দীক্ষিত হইলেন "“পূৰ্ণব্রহ্ম" উচ্চারণপূৰ্ব্বক লেখক এই চন্দ্রদ্বীপের প্রকৃতপবিচয়ন পাওয়াতেই এতটা কল্পনা করিযা বৈদ্য কাৰ্যস্থ বিবাহেব অর্থকরিয়াছেন। এই চন্দ্রদ্বীপ যে শ্রীহট্টেবই চন্দ্রপুর বা চান্দপুর (বাঘাসুবা), তাহা জানা থাকিলে এই বৈদ্য কায়স্থ বিবাহ প্রসঙ্গের সঙ্গত কাবণ পাইতেন। কল্পনাব আশ্রয় লইতে হইত না। বলা বাহুল্য যে শ্রীহট্টেই বৈদ্য ও কায়স্থ মধ্যে বিবাহাদি প্রচলিত আছে। ৫৫ জগন্মোহন ভাগবত মতে জনৈক সন্ন্যাসী। উক্তগ্রহ মতে এই সন্ন্যাসী আপনাকে (শ্রীচৈতনাবগুরু) ঈশ্বরপুরী বলিযা আত্মপরিচয় দেন, জগন্মোহন যে নিতানন্দ, একথা তাহাকে স্মবণ করাইয়া দিয চন্দ্রশেখরে যাওয়ার জন্য অনুজ্ঞা কবেন, তাহাতেই (বৈষ্ণব সন্ন্যাসীব অনুজ্ঞায়) বৈষ্ণব জগন্মোহন শৈবতীর্থে গমন করেন। ৫৬. চন্দ্রশেখর যাইতে করিল গমন। উপসন্ন হৈলা যাইয়া গহন কানন।—জগন্মোহন ভাগবত । ৫৭ এই মুরারিজা সুপ্রসিদ্ধ দোহাকার তুলসীদাসের শিষ্য ছিলেন বলিযা জগন্মোহী সম্প্রদাযে উক্ত হন। ভক্তমালা প্রণেতা নাভাজীর সহিত তুলসীদাসের সাক্ষাৎ হওযার কথা ভক্তমালা গ্রন্থে আছে। এই হিসাবে তিনি সম্রাট আকবরেব