পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৯ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ইহার পর হরি সোম, রামনারায়ণ, মুরারিদত্ত প্রমুখ শত শত লোক আসিয়া তাহার নিকট উপদেশ গ্রহণে ঐ মতে প্রবিষ্ট হয়, হিম্মত খাঁ ও বাহাদুর খাঁ মনসুর খা নামক তিন জন মোসলমানও তাহার মত গ্রহণ করিয়াছিল, যথ ঃ “মনসুর খাঁর নাম হৈল মনোহর দাস, হিম্মত খাঁর হইল নাম হৃদানন্দ দাস ৷ বানেশ্বর দাস নামাবাহাদুর খাঁর হৈল। সৰ্ব্ব পরিত্যাগী ভিনে বৈরাগী করিল।”—জগন্মোহন ভাগবত। বলা গিয়াছে জগন্মোহন যখন শ্ৰীক্ষেত্রে গমন করেন, তখন তাহার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন। সেই গর্ভে যথা কালে দুইটী যমজ পুত্র জাত হয়, ইহাদের নাম শ্যাম ও সুদাম। ইহারা কিঞ্চিত বড় তাহাদের মুখ মলিন হইয়া যাইত; ইহাতে অজ্ঞাত পিতার প্রতি তাহদের বড়ই অনুরাগ জাত হয়। বালক দুটি পরে যখন জানিতে পারিল যে, মাছুলিয়ার জঙ্গলে তাহাদের পিতা ফিরিয়া আসিয়াছেন, তখন তাহারা অতিশয় আনন্দিত হইল ও তাহার কাছে গমন করিল। নিলিপ্ত জগন্মোহন তাহাদিগকে চাহিল না।** পূবেবনা ছিল কেহ না থাকিবে পাছে। মিছা মায়া সংসাবে ভ্রমেতে ভুলিযাছে। আপনাব প্রাণ পুনি নহে আপনার । পিতা মাতা সুত কান্তা কেমনে তোমার। দেখ শুকদেব নারদ প্রহ্লাদ সনাতন। বিচাব করযে আর যত মুনিগণ। আরো, সবর্ববেদে সবর্বশাস্ত্রে কবেছেনির্ণয। গুরু বিনে তরাইতে কেহ না পার। ওহে বৈরাগোয পরে ধৰ্ম্ম নাহি কদাচিত। বলেন গোবিন্দ দাস নুই ভবে বঞ্চিত।” (২) “ভাবেব বন্দো, ভাবের বন্দো পতিতের বন্ধু তুমি হে। প্রভু তোমার লাগিযা প্রাণ দিতে চাই আমি হে। কাপ দেখ, ধাতু মূৰ্ত্তি পাষাণ না হও। সবর্ব ঘটে আছতুমি কাকে নাহি ছও। ঢাকিয়া আছ হে প্রভুর সৰ্ব্ব কলেবর। স্বৰ্গ মৰ্ত্তা রাখিয়াছ উদর ভিতর। অংশ বিন্দু কলা নহ অক্ষবেব পর। বলেন গোবিন্দ দাস সব ভাইর ভিতর। (৩) “গুরু দেবের চরণ শবণ লওয়ে ভাই ভব সিন্ধু তবিতে তরণী আর নাই। মহা অন্ধকাব ধন্ধু শুরু না ভজিলে, অন্ধ মীন থাকে যেমন অন্ধকূপ জলে। পশু পক্ষী থাকে যেমন ডিম্বের ভিতব। মনুষ্য দুৰ্ল্লভ জন্ম বৃথা গেল মোব। সাফল্য জীবন যাব গুরু যেন ভজে। অগম্য গমিতে পারে অনাহত বুঝে। অভাব ভাবিতে পাবে অমূল্য মিলায়। আনন্দ পুণিত তনু ভাব সিদ্ধি হয়। আপনাব নিজ গৃহে পায়স তেজিয়া। দুৰ্ম্মতি ফিবয়ে যেন ভিক্ষা বিচারিয়া। এতকে জানিযা ভাই হও সাবধান । আপনে বুঝহ কিবা জ্ঞান অজ্ঞান। জ্ঞানহীন কৰ্ম্মতাজ বিভল প্রমাদ। বলেন গোবিন্দ দাস শুকব প্রসাদ। চন্দ্রদ্বীপ হইতে পিতৃসদনে ইহাদেব গমন বৃত্তান্ত জগন্মোহন ভাগবতে বর্ণিত হইয়াছে। এই “চন্দ্রদ্বীপ” কোথায ছিল,