পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৬০ গোবিন্দ গোসাঞি পিতা পুত্রের এই ব্যবহার দৃষ্টে পুত্রদের পক্ষপাতী হইয়া পড়িলেন ও তাহাদিগকে শিষ্য করিয়া রাখিতে একান্ত অনুরোধ করিতে লাগিলেন। প্রিয় শিষ্যের একান্ত অনুরোধ গুরু একবারে অগ্রাহ্য করিতে পারিলেন না, অগত্যা মন্ত্র দেওয়ার ভার তাহাকেই দিলেন; তখন শ্যাম গোবিন্দ হইতে মন্ত্র পাইয়া শান্ত গোসাঞি নামে খ্যাত হইলেন। সুদাম গৃহী রহিলেন, তদ্বংশীয়গণ এখনও বাঘাসুরাবাসী। জগন্মোহন ১৪৮১ শকাব্দে’ দেহত্যাগ করেন। ইহার জীবন সম্বন্ধে বিবিধ অলৌকিক কথা বর্ণিত আছে। জয়গোবিন্দ সোম জয়গোবিন্দ সোম শ্রীহট্টের সাহুবংশে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি শহরের উপকণ্ঠ আকালিয়াবাসী দোলগোবিন্দ সোমের পুত্র। ওয়েলশ মিশনের প্রচারক প্রাইজ সাহেবের নাম শ্রীহট্টবাসী ভুলিবে না, প্রাইজ সাহেবই শ্রীহট্টে ইংরেজী শিক্ষার বীজ রোপন কবিয়া ছিলেন। জয়গোবিন্দ ইহার প্রতিষ্ঠিত মিশন স্কুলে প্রথমে প্রবিষ্ট হন। জয়গোবিন্দ বুদ্ধিমান ছাত্র ছিলেন, ১৮৭১ খৃষ্টাব্দে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া অধ্যয়নের জন্য কলিকাতা গমন করেন এবং ১৮৬৩ অব্দে এফ এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া, বি এ এবং এম এ পরীক্ষা এক সঙেগ দিতে প্রস্তুত হইতে থাকেন। ১৮৬৫ খৃষ্টাব্দে এম এ অনার পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাতে সৰ্ব্ব প্রথম জয়গোবিন্দ নাম দৃষ্ট হইবে। এইরূপ অল্প সময়ের মধ্যে এই উভয পরীক্ষায় সম্মানের সহিত উত্তীর্ণ হওয়া সামান্য শক্তির পবিচালক নহে; এরূপ প্রতিভা অধিক দুষ্ট হয় না। জয়গোবিন্দের পূৰ্ব্বে শ্রীহট্টবাসী কেহ এম এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন নাই। ইনিই শ্রীহট্টের,—শ্রীহট্টের কেন হয়তঃ পূৰ্ব্ববঙ্গের প্রথম এম এ । জয়গোবিন্দ কলিকাতা হইতে বাড আসিয়া অল্প কিছুকাল মিশন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাজ করিয়া ছিলেন, তৎপর কলিকাতায় চলিয়া যান এবং কেথিড্রেল মিশন কলেজের দর্শন শস্ত্রের অধ্যাপক নিযুক্ত হন, ও সঙ্গে সঙ্গে আইন অধ্যয়ন করিতে থাকেন। ১৮৭১ খৃষ্টাব্দে তিনি বি, এল, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া দেশে আগমন করেন ও কিছু দিনের জন্য জজ আদালতে উকালতিতে নিযুক্ত হন। কলিকাতায় তৎকর্তৃক একখানা সংবাদপত্র পরিচালিত হইত। ইহার খাতিরে পুনঃ তিনি কলিকাতায় চলিয়া যান ও কলিকাতা হাইকোর্টে ব্যবসায় চালাইতে থাকেন। তিনি তদবধি আমরণ কলিকাতা হাইকোর্টে উকালতি করিয়া ছিলেন। প্রাইজ সাহেবের বিমল চরিত্র শ্রীহট্টের অনেক যুবকের অনুকরণীয় হইয়াছিল, আর র্তাহারা বলিয়াছি। ইহারা যে বরিশাল বা তদ্রুপ দূরবর্তী কোন স্থান হইতে পিতৃসদনে উপস্থিত হইয়াছিল, ভাগ্যতের বর্ণনাতেও তাহা পাওয়া যায় না। পুত্রদ্বয়েব মুখে পরিচয় প্রাপ্তে আত্মীয স্বজনের জন্য জগন্মোহনের বিচলিত হইযা ক্ৰন্দন করা ইত্যাদি উক্ত গ্রন্থেব বর্ণিত প্রসঙ্গ নির্লিপ্ত জগন্মোনের পবিত্ৰ চলিত্রোপযোগী হয নাই। ৬২. “চৌদশত পঞ্চাশ শকে আবির্ভাব হৈল। বিংশতি বৎসর প্রভু বেবাক লালা কৈলা। এক বিংশতিতে প্রভুর পরমার্থ গ্রহণ দ্বাত্রিংশ বৎসবে প্রভু হৈল আদর্শন। চৌদশত একাশী শক তাতে হয়। এই ত কহিল প্রভুর লীলার বিষয় ।” জগন্মোহন ভাগবত |