পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৯ দ্বিতীয় অধ্যায় : রঙ্গদ বংশ বর্ণন 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত কুটম্ব সম্মিলন এই ঘটনার পর শ্রীচৈতন্যদেব সহ গৌরীকান্তের মিলন হয়। গৌরীকান্ত মধুকর মিশ্রের প্রপৌত্র— শ্ৰীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভ্রাতৃ সম্পকীয়;তিনি পুষ্পচয়নে বহির্গত হইয়া পুষ্প সংগ্রহ সমাপনে গৃহে যাইতেছিলেন। তিনি রামা হইতে সেই আশ্চৰ্য সংবাদ শ্রবণে সে স্থানে উপস্থিত হন ও তরুমূলে সেই মহিমময় মধুর মূৰ্ত্তি দর্শন করেন। তেজঃপুঞ্জ-কলেবর এ নবীন উদাসীন কে? শ্রীচৈতন্যের অমানুষ রূপে তিনি যে আত্মহারা হইয়া পড়িলেন;জগৎ যেন তাহার কাছে সুষমাময় বোধ হইল, র্তাহার চিত্ত যেন নিৰ্ম্মল হইয়া গেল, আর তাহার মস্তক আপনা হইতেই তদীয় চরণে বিনত হইয়া পড়িল। তখনও তিনি চিনেন নাই যে এ নবীন উদাসীন কে? “এ কি ? সৰ্ব্বনাশ! আপনে বয়োজ্যেষ্ঠ,—শুদ্ধ সত্ত্ব কলেবর, আপনে প্রণাম করিবেন না।” হাপ্রভুর একথা শুনিয়া গৌরীকান্ত বলিলেন—“না, আপনি অন্যায় করি নাই।” “অপরূপ তবরূপ বিশ্ব-রূপ হরে। ষড়ৈশ্বৰ্য্য পরিপূর্ণ অন্তরে বাহিরে।” শ্রীচৈতন্যরত্নাবলী। “আমি কিছু অন্যায় করি নাই, আপনে সামান্য সন্ন্যাসী নহেন, আপনার জন-মনোহারি পবিত্র বপুঃ দর্শনে তাহা হৃদয়ঙ্গম করিয়াছি। আপনে মহাপুরুষ কৃপা-পরতন্ত্র হইয়া এ স্থানে আগমন করিয়াছেন।” গৌরিকান্তের কথা শুনিয়া বিনীত সন্ন্যাসী মাথা হেট করিয়া রহিলেন। শ্রীগর্ভ মিশ্র কথা রঙ্গদ মিশ্রের পুত্রের নাম প্রভাকর, তৎপুত্ৰ মহেন্দ্র মিশ্রের শ্রীকর, ইন্দ্রকর, ও দুর্গাবর নামে তিন পুত্র হয়, তন্মধ্যে শ্রীকরের পুত্রের নাম শ্রীগর্ভ। জ্ঞাতি সম্পর্কে এই বালক শ্ৰীমহাপ্রভুর ভ্রাতুষ্পপুত্র। যখন শ্রীচৈতন্যদেব স্বীয় ভ্রাতৃসম্পর্কিত গৌরীকান্তের সহিত কথাবাৰ্ত্ত কহিতেছিলেন, তখন দৈবক্রমে বালক শ্রীগর্ভ তথায় উপস্থিত হইলেন। গৌরাঙ্গের সবর্বচিত্তাকর্ষী রূপমাধুরীতে বালক শ্ৰীগৰ্ভকে অভিভূত করিল। প্রৌঢ় গৌরীকান্ত আর বালক শ্ৰীগৰ্ভ, উভয়েরই একদশা;এই অপরিচিত উদাসীনকে ছাড়িয়া একপদ সরিতে র্তাহাদের চরণ যেন চাহে না; ইহারা উভয়েই বাধা পড়িলেন। সেই স্থানে গৌরীকান্ত শ্ৰীমহাপ্রভুর নিকট মন্ত্র গ্রহণ করিলেন। গৌরীকান্ত ও শ্রীগর্ভ অতঃপর তাহাকে গৃহে লইয়া যাইতে অত্যন্ত আগ্রহ প্রকাশ ও প্রার্থনা করিতে লাগিলেন। শ্ৰীমহাপ্রভু তাহাদের বাক্য রাখিলেন; তিনি প্রপিতামহ গৃহে গমন করিয়া কুটুম্বগণকে আনন্দিত করিলেন। গৌরহরি বুরুঙ্গায় তখন তিন ভাগ্যবানকে আত্মসাৎ করিয়াছিলেন, এই তিন মহাত্মা হইতে সেই দেশ উদ্ধারের পন্থা পরিষ্কৃত হয়;তাহাদের প্রভাবে নিত্য বহুলোক অভীষ্ট লাভে কৃতাৰ্থ হইত। যে স্থানে শ্ৰীমহাপ্রভুর গৌরীকান্তসহ উপবেশন করিয়াছিলেন, তন্নির্দেশ স্মরণার্থ সেই স্থানে একটি বেদিক ৪ গৌরীকান্তের নাম বংশ তালিকাতে নাই। শ্রীচৈতন্যরত্নাবলী গ্রন্থ মতে ইনি শ্ৰীমহাপ্রভুর জ্ঞাতি ভ্রাতা ও তাহার নিকট হইতে মন্ত্র গ্রহণ কবেন। গুরুবৎ আচার ব্যবহার গ্রহণে তিনি যদি ৫ “প্ৰভু কৃপা বলে তার হইল দৈবত্ব। মানসিক সেবা দেয় নিত্য নিত্য।” শ্রীচৈতন্যবত্বাবলী।