পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৩ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ও ক্ষেমানন্দের গ্রন্থে বৰ্দ্ধমান অঞ্চলের ভিন্ন ভিন্ন স্থানের নাম সন্নিবেশ দৃষ্টে “কবিদ্বয়কে বদ্ধমান ৰাসী বলিয়া” যেমন বোধ করিয়াছেন, সেইরূপ ইহাদের গ্রন্থে শ্রীহট্টের নামাদি লিখিত থাকায়, ইহাদিগকে শ্রীহট্টবাসী বলিয়াই বোঝা যায়।" নারায়ণ দেবের ভণিতায় সুকবি বল্লভের উল্লেখ থাকায় কেহ কেহ বলেন যে নারায়ণ দেবের উপাধি কবিবল্লভ ছিল; কিন্তু ইহা উপাধি না হইয়া কবিবল্লভ নামক অন্য এক সুজনের প্রসঙ্গ মনে করাই সঙ্গত। “নারায়ণ দেবে কয়, সুকবিবল্লভ হয়, নারীগণের দিতেছে জোকার।” ইত্যাদি স্থলে সুটি বিশেষণ ও কবিবল্লভ নামরূপে গৃহীত হইতে পারে না কি? এইরূপ যুক্তনামাত্মক ভণিতা বঙ্গ সাহিত্য নূতন নহে।" এইরূপ উদাহরণাদি দৃষ্টেই অনেকেই বলেন যে কবিবল্লভ পৃথক কবির নামই বটে, ইহা নারায়ণ দেব ও কবিবল্লভেব সম্বন্ধ সূচক কবিতা। নারায়ণ দেব কবিতা লিখিয়া স্বীয় বন্ধু ও কবি কবিবল্লভকে শুনাইতেন, শুনিয়া তিনি “হয়” (হ) বলিয়া অনুমোদন করিতেন, কবিতায় তাহাই প্রকাশ করে। তাহাদের মতে ১৪শ বর্ষী বালক কবির পক্ষে তাহাই উপযুক্ত এবং ইহাতেই তাহার আত্মতৃপ্তি সাধিত হইত। যাহারা বলেন, কবিবল্লভ নাম নহে—উপাধি, র্তাহারা প্রমাণ প্রয়োগার্থে নারায়ণ দেবের উক্তি বলিয়া দুইটি চরণ প্রদর্শন করেন,” মাথা হৈতে পদ্মাবতী বিষ লয় ঝাডি।” “লাম লাম ওবে বিষ ত্রিবেণীর দ্বাবে। তেজিয়া শ্রীহট্ট ঘর নাম বঙ্ক নালে।” সুকবি নাবায়ণ দেবের সবস পাঁচালী। পয়ার প্রবন্ধে কহি এক লাচাড়ী।” (২) “ত্রিপুবা, জৈন্তা, জযকলঙ্ক, ভ্ৰমিযছিনালাবঙ্গ, গৌড়মণ্ডল আদি করি।” “দ্বজ বংশীদাসে ভণে, চান্দের কৌক মনে, শেষে কৈল কন্যার বিচাব।” ৭৮. সম্প্রতি শ্রীযুক্ত রামনাথ চক্ৰবৰ্ত্তীও দ্বারিক্যনাথ চক্ৰবৰ্ত্তী মহাশয়দ্বযেব সম্পাদিত বংশী দাসের পদ্মাপুরাণ প্রকাশিত হইয়াছে, তাহাতে বংশীদাস ময়মনসিংহ নিবাসী ছিলেন বলা হইয়াছে। আরও শুনা যায় যে কবির নাম্মীৰ তালুক তথায় আছে। যদি বংশীদাসের জন্ম শ্রীহট্টে হয, তবে নারায়ণ দেব ও কবিবল্লভেরন্যায তিনিও স্থানত্যাগী হইয়াছিলেন বলিতে হইবে, জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল পাঠে জানা যায যে প্রায সাৰ্দ্ধচারিশত বৎসর পূৰ্ব্বে শ্রীহট্টের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ ও মানে ভয হইয়া অনেক লোকভিন্ন স্থানে চলিযাগিয়াছিল। এই স্থান ত্যাগ করিয়া যাওযার পরেও অনেক দিন চলিয়াছিল বলিয়া বোধ হয়। বস্তুতঃ বংশীদাসেব বর্ণনায় শ্রীহট্টের যে সকল নদীর নাম পাওযা যায়,— যথা কালিয়ানী কোলনী), রত্না ইত্যাদি এবং “কালাঞ্জুবা” প্রভৃতি গ্রাম জলসুখার সন্নিকটবৰ্ত্তী হওয়ায, তাহাকে ঐ স্থানের সন্নিকট বাসী বলিয়াই মনে হয়। তৎলিখিত হল বাহক জাতীরও তদঞ্চলেই বাস অধিক। ৭৯. (১) "বায় বসন্ত,মধুপ অনুসন্ধিত,নন্দিত গোবিন্দ দাস।”—পদকল্পতরু। (২) “নবনারায়ণ ভূপতি ভান। বিজয়নারাযণ ইহা বস জান৷”—ঐ। (৩) “কহে হবিদাস, কি বলিব আর কিসে হৈল হেন গোরা। জ্ঞানদাস কহে, রাধার পিবিতে, সতত সে বসে ভোবা।—ঐ ৮০ দুই একখানি মুদ্রিত পদ্মাপুবাণে নাকি—