পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮৫ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পাগল শঙ্কর সমীপে সত্বর উপস্থিত হও, তিনিই তোমাকে তত্ত্বজ্ঞান শিক্ষা দিবেন।” এই স্বপ্নাদেশ প্রাপ্তে বাণী তথা হইতে চলিলেন ও নানাস্থান ভ্রমণপূৰ্ব্বক নবিগঞ্জের বাজারে উপস্থিত হইলেন, এই স্থানে পাগলশঙ্কর নামক সাধু পুরুষের সহিত র্তাহার সাক্ষাৎ হইল, বাণী যেন আকাশের চাদ হাতে পাইলেন; পাগলশঙ্করও বাণীর ন্যায় মহাত্মার সঙ্গলাভে পরম সুখী হইলেন। পাগলশঙ্কর সম্মিলন পাগলশঙ্করের জন্মস্থান সতরশতী পরগণার বরাকপার গ্রাম, পাগলশঙ্কর পরম সিদ্ধপুরুষ ছিলেন, শ্রীহট্ট জেলার নানাস্থানেই তাহার অনেক ভক্ত ছিল; বাণীকিশোর এক মাস কাল পাগলশঙ্করের কাছে অবস্থিতি করিলেন। এই একমাস উভয়ে কেবল হরিনাম প্রসঙ্গে যাপন করিয়াছিলেন। এই সময় আর একজন মহাপুরুষ র্তাহাদের সহিত সম্মিলিত ও বন্ধু বলিয়া পরিগণিত হন; ইনি তরফের সৈয়দ বংশীয় সাধক গদাহাসন সাহেব; ইহার নামে তত্ৰত্য একটি পরগণার নামকরণ হইয়াছিল, স্থানান্তরে বলা গিয়াছে। কিছুদিন পরে ঠাকুববাণী ও পাগলশঙ্কর গঙ্গাস্নানের উপলক্ষে মুর্শিদাবাদ গমন করেন। নবিগঞ্জ “পথে পথে নানা ভঙ্গি নৰ্ত্তন কীৰ্ত্তন। পঞ্চদশদিনে পাইলা দর্শন।” —চরিত্র চিন্তারত্ন। তথা হইতে কণ্টকনগর, অম্বিক প্রভৃতি দ্বাদশ পাঠ পরিভ্রমণপূৰ্ব্বক নবদ্বীপে উপস্থিত হন; নবদ্বীপ হইতে শ্ৰীক্ষেত্র গমন কবেন । তথা হইতে প্রত্যাগমন কালে তাহদের “বঙ্গাধিপতি যবনরাজের” সহিত সাক্ষাৎ হয়; তিনি সাধুদের দৈবশক্তির পরিচয় পাইয়া— “শ্রীহট্টাধিপের স্থানে এক পত্ৰ দিয়া বাণীকে পাঠাইলা দেশে সম্মান করিয়া।” —চরিত্র চিন্তারত্ব। দেশে আসিয়া উপস্থিত হইলে উভয়ে একে অন্যের নিকট বিদায় লইয়া স্ব স্ব স্থানে গমন করিলেন। ইহার পরে প্রসিদ্ধ বঞ্চিত ঘোষ অজ্ঞান ঠাকুর ও মালী ধৰ্ম্মদাসের সহিত র্তাহার পরিচয় হয়। মালী ধৰ্ম্মদাস সম্মিলন ধৰ্ম্মদাস একজন কবি বলিয়া খ্যাত ছিলেন, প্রথমাবস্থায় তিনি বাঙ্গালা ভাষায় “হুসেনপৰ্ব্ব” রচনা করিয়া যশস্বী হন; শেষ বয়সে তিনি পরম বৈষ্ণব হইয়া উঠেন, এবং সাধু মহাত্মারূপে দেশবাসীর ভক্তির পাত্র হইয়াছিলেন। ধৰ্ম্মদাস জাতিতে মালী ছিলেন। বাণীর জননী পুত্রকে বিবাহ দিয়াছিলেন; বাণী দেশে আসার পর সেই পত্নীর গর্ভে একটি পুত্র জন্মগ্রহণ করে, ইহার নাম অনন্ত, ইহার কথা পূৰ্ব্বে (বংশ বিবরণে) বলা গিয়াছে। বাণীর আর একজন পুত্র ছিলেন;—তিনি অনন্তের বৈমাত্রেয় ভ্রাতা।