পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৮৮ মুখে প্রকাশ পাইল। সকলেই বুঝিল যে তপঃ প্রভাবে বাণী এখনও জীবিত রহিয়াছেন। ইহাও বুঝিল যে, সিদ্ধ মহাপুরুষদের কিছুই অগোচর থাকিবার নহে। স্ববংশীয়বর্গকে আশ্বস্ত করাই এই আত্মপ্রকাশের হেতু—গয়ার পিণ্ডদান নিবারণের কথা একটা উপলক্ষ্য মাত্র। ঠাকুরবাণীর রোপিত একটি তেঁতুলবৃক্ষ দিনারপুরে আছে, বৃক্ষটি অতি প্রকাণ্ড ও “সিদ্ধ তেঁতুল” নামে খ্যাত। বৃক্ষের তলা ইষ্টকে বাঁধান। ঠাকুরবাণীর উদ্দেশ্যে এই বৃক্ষের নীচে ভোগ দেওয়া হইয়া থাকে। একদা ঠাকুরবাণী “তেঁতুলের টক” খাইয়া তাহার একটি বীজ রোপন করিয়াছিলেন, তাহাতেই এই বৃক্ষ জন্মিয়াছিল। বালক কবি প্রশান্তকুমার চাপঘাট নিবাসী একষ্ট্রা এসিষ্টেণ্ট কমিশনার শ্রীযুক্ত দীননাথ দাস বি, এ মহাশয়ের ছেলে প্রশান্তকুমার দাস সবেমাত্র বার বৎসর বয়সে পদার্পণ করিয়া (গত ১৩২১ বাং জ্যৈষ্ঠমাসে) মাতামহালয় বাণিয়াচঙ্গে জীবনত্যাগ করিয়াছে। অল্পবয়সেই বালকের অসাধারণ প্রতিভা লক্ষিত হইয়াছিল। বিশেষতঃ ইতিমধ্যেই কবিতা রচনায় সিদ্ধহস্ত হইয়া উঠিয়াছিল। তাহার কোনও কবিতা জীবদ্দশায় প্রকাশিত হয় নাই, কিন্তু কবিতার খাতাখানিতে যে গুলি লিপিবদ্ধ হইয়াছে, তাহা পাঠ করিলে মনে হয় এই কবিকোরক অকালে কালকীট দৃষ্ট না হইলে ইহার যশঃ সৌরভে মাতৃভূমি আমোদিত হইত। বিপিনবিহারী দাস করিমগঞ্জ সবডিভিশনের অন্তর্গত মৰ্য্যাতকান্দি গ্রামে মাণিক্যরাম দাস নামে এক সদগুণসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন, তিনি তেজস্ব ও স্পষ্টবাদী লোক ছিলেন; লাতু নিবাসী মোনশী গৌরীচরণ, ইহার সহিত আপন দুহিতা সুভদ্রার বিবাহ দেন; এই সুভদ্ৰাই বিপিনবিহারীর গর্ভধারিণী। বিপিনবিহার পিতৃতেজস্বীত প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। বিপিনবিহারীর পিতার অবস্থা ভাল ছিল না বলিয়া পুত্রের শিক্ষার জন্য তিনি ব্যয় দিতে পারেন নাই, এদিকে বিপিনের বিদ্যাশিক্ষার প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল। প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া তিনি কলিকাতায় যাইতে ইচ্ছুক হইলেন, কিন্তু কলিকাতায় থাকার ব্যয় সঙ্কুলানের কোন উপায়ই হইল না, তখন তিনি অথোপাৰ্জ্জনের জন্য আসামে গমন করেন ও তাহাতে কোনরূপ পাঠের ব্যয়মাত্র সস্কুলান পূৰ্ব্বক এফ, এ এবং বি, এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বি, এ পরীক্ষা দিয়া গৌহাটীতে নৰ্ম্মল স্কুলের প্রধান শিক্ষক হন ও এম, এ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হইতে থাকেন। দুই বৎসর পরে কঠিন রসায়ন শাস্ত্রে পরীক্ষা দিয়া প্রথম স্থান অধিকার করেন। গৌহাটী নৰ্ম্মাল স্কুলের শিক্ষক থাকাকালে তিনি বাঙ্গালা ভাষায় "রসায়ণের উপক্রমণিকা’ নামে এক সচিত্র গ্রন্থ প্রণয়ন পূৰ্ব্বক ১২৮৪ বাংলার শ্রাবণ মাসে উহা প্রকাশ করেন। ঐ গ্রন্থের পরিশিষ্টে তৎসঙ্কলিত বহু পারিভাষিক শব্দ সংযোজিত হইয়াছে। তৎপূৰ্ব্বে রসায়ণশাস্ত্রের তাদৃশ উপযোগী শব্দরাজি প্রকাশিত হয় নাই। এবং তাহার এই উপক্রমণিকার পূৰ্ব্বে বঙ্গভাষায় রসায়ণশাস্ত্র সম্বন্ধীয় এতাদৃশ সুন্দর গ্রন্থ দৃষ্ট হয় নাই। বাঙ্গালা কবিতা তাহার প্রিয় সামগ্রী ছিল এবং নিজেও কবিতা লিখিতে পারিতেন। স্বগীয় প্যারীচরণ দাস মহাশয়ের পদ্য পুস্তক ১ম ভাগ প্রকাশিত হইলে, বিপিনবাবুই ইহার দ্বিতীয়ভাগ রচনা করিকেন বলিয়া ইচ্ছা করেন ও প্যারীবাবুকে তাহা জ্ঞাপন করেন। প্যারীবাবু সানন্দে সম্মতি প্রকাশ