পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ U শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৯০ বিরজানাথ ন্যায়বাগীশ শ্রীহট্টের গুটাটিকর নিবাসী সাত্ত্বিক ব্রাহ্মণ বিরজানাথ গত পৌষমাসে (১৩২১ বাং) কামাখ্যাধ্যমে দেহত্যাগ করিয়াছেন। তাহার বিষয়ে গত ৩রা ফাল্গুনের সুরমা পত্রিকায় শ্রীহট্টের গৌরব কবিবর শরচ্চন্দ্র চৌধুরী মহাশয লিখিয়াছেন “ন্যায়বাগীশ মহাশযের বয়স যদিও ৭০ বৎসর হইয়াছিল, তথাপি তাহাকে দেখিলে সেরূপ বোধ হইত না, যোগানুষ্ঠানের ফলে র্তাহার শরীর অনেকটা দৃঢ় ছিল। তিনি বাহিরে বড় একটা যাইতেন না, বাড়ীতে থাকিয়াই তদগত চিত্তে সৰ্ব্বানন্দ ভৈববেব সেবা করিতেন।” “ন্যায়বাগীশ মহাশয়ের জীবনটা যেমন পবিত্র ছিল, তাহার পরিণামও তদনুরূপই হইয়াছে। তিনি শ্রীহট্টের মহালক্ষ্মী মহাপীঠের ভৈরব সৰ্ব্বানন্দের আবিষ্কৰ্ত্তা। সৰ্ব্বানন্দ শিবটিলা নামক স্থানে মৃত্তিকাস্তুপে আবৃত হইয়া দীর্ঘকাল প্রচ্ছন্ন ভাবে ছিলেন, ব্ৰক্ষ্মানন্দ পুবী ঐস্থানটি নির্দেশ করিয়া যান, কিন্তু ন্যায়বাগীশ মহাশয়ই পুনঃ পুনঃ স্বপ্নাদিষ্ট হইয়া সবৰ্বানন্দের আবিষ্কার করেন।” “তাহার জীবন এবং বিদ্যা নিযতই আড়ম্বর শূন্য ছিল। তিনি ব্রহ্মানন্দপুরী কৃত “মোহচপট” অনুবাদ করিযাছিলেন, এই গ্রন্থ সঠিক সানুবাদ প্রকাশিত হইয়াছে। (তদ্ব্যতীত তিনি সৰ্ব্বানন্দ প্রকাশ গ্রন্থ রচনা করিয়া সানুবাদ প্রকাশ করিয়াছেন।) তাহার বহু ছাত্র উপাধিধারী অধ্যাপকধারী আছেন, বিষয়ীর মধ্যেও অনেক তাহার শিক্ষাধীনে প্রতিভাবান হইয়াছেন।” “শ্রীযুক্ত পদ্মনাথ ভট্টাচাৰ্য্য বিদ্যাবিনোদ তত্ত্ব সরস্বতী মহাশয়ের সঙ্গে তাহার বিশেষ ভালবাসা ছিল এবং তাহারই অনুরাগে তিনি শ্রীগৌবীতে শ্রীহট্ট ব্রাহ্মণ পবিষদের উপস্থিত হইয়াছিলেন। তথাকার কার্য শেন হইলে পদ্মনাথ বাবুর সঙ্গেই তিনি কামাখ্যা দর্শনে যাইবেন, সেইদিন প্রাতঃকালে সবর্বাগ্রে উমানন্দ ভৈরবকে দর্শন কবিতে যান। তাহার সঙ্গে যে ভদ্রলোকটি ছিলেন, তিনি গল্প করিয়াছেন, উমানন্দ দর্শনে যাইয়া “অনুজ্ঞানং দেহিমে দেব কামাখ্যা দর্শনং প্রতি” এই মন্ত্রটি পাঠ করিতে করিতে চক্ষেব জলে প্লাবিত হইয়া ছিলেন। উমানন্দ হইতে প্রত্যাবৃত্ত হইয়াই তিনি কামাখ্যা দর্শনে চলিলেন সঙেগ পদ্মনাথবাবু। নীলাচলে আরোহন কবিতে করিতে “কাশ্যাঃ ফলাধিক পুরী” এই শ্লোকাদ্ধ অনেকবার আবৃত্তি করিয়াছিলেন। নবকাসুর নিৰ্ম্মিত সেই সুদীর্ঘ পথ প্রায় অতিক্রম করিয়াছেন, ১০/১২ গজ মাত্র অবশিষ্ট আছে, এমন সময়ে তিনি মাথা ঘুরিতেছে বলিয়া বসিয়া পড়িলেন। সঙ্গিগণ দেখিলেন, ক্ষণ কাল মধ্যে তিনি নিববাক নিম্পন্দ, তাহার নাড়ীর গতি ক্ষীণ । “তাহাব প্রতুিতপুত্রেব নিকট আৰ্জ্জেন্ট টেলিগ্রামে সংবাদ প্রেরিত হইল। জনৈক সহচর সহ ভ্রাতুষ্পপুত্র যথাকালে উপস্থিত হইলনে, যথোচিত চিকিৎসা ও চলিতে লাগিল, কিন্তু অবস্থার কোন পবিবৰ্ত্তন ঘটিল না। পৌষী পূর্ণিমায় তিনি রোগাক্রান্ত হইয়াছিলেন, নয় দিবসকাল পক্ষাঘাত রোগে নিৰ্ব্বাক নিস্পন্দ থাকিয়া ২৫শে পৌষ কৈলাসধামে যাত্রা করেন। তিনি কামাখ্যা মাতাকে দশকবিধার জন্য বাকুল হইয়াছিলেন, জগন্মাতা তাহাকে তেমনই কৃপা কবিযাছেন। জগন্মাতা তাহার প্রয় পুত্রকে একবারে ক্রোড়ে তুলিযা লইবেন, আর তাহাকে সংসারের নবক কোলাহলে ফিরিয৷ যাইতে দিলেন না ।” ব্ৰহ্মানন্দ পুরী ব্ৰহ্মানন্দ পুরার জন্মস্থান শ্রীহট্ট নতে, কিন্তু শ্রীহট্টের সহিত তাহার যেরূপ অচ্ছেদ সম্বন্ধ জাত