পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৯৪ বাড়ীতেই তিনি থাকিতেন এবং তথায় তৎসংসৃষ্ট অনেক অদ্ভূত ঘটনা অনেক ব্যক্তিই প্রত্যক্ষ করিয়াছিল, তিনি তাহাতে একজন সিদ্ধপুরুষ বলিয়া তথাকার সকলের শ্রদ্ধাভাজন হইয়াছিলেন। তাহার বহু শিষ্য ছিল, সুদূর চট্টগ্রামের চক্রমালার বহু ব্রাহ্মণ তাহার নিকট হইতে দীক্ষা গ্রহণ করিয়াছিলেন । একদা তিনি শ্ৰীক্ষেত্রে যাত্রা করেন, তখন তাহার ভয়ানক জুর কিন্তু তৎপ্রতি র্তাহার দৃক্ষেপ ছিল না, অসুস্থ অবস্থাতেই যাইতে প্রবৃত্ত হন ও বহুকষ্টে পুরীতে পৌছেন। যাওয়াকালে ভুলবশতঃ কলিকাতায় তাহার জপমালাব ঝোলা হারাইয়া যায়। তিনি যখন নীলাচলে পৌছেন, তখনও তাহার দেহে জ্বর ছিল, হাটিয়া “দর্শনে” যাইবার শক্তি ছিল না। যখন তিনি ভাবিতেছেন যে কষ্টেসৃষ্টে পুরী পৌছিয়াও তাহার সাধ মিটিল না—দর্শন ঘটিল না, হয়তঃ তাহাকে অন্তিম শয্যাশায়ী হইতে হইবে, তখন হঠাৎ একজন অপরিচিত বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ কোথা হইতে আসিয়া তাহাকে একরূপ বহন করিয়া লইযা দর্শন করাইলেন। এই বুদ্ধের সাহায্যে দুই তিন দিনই তাহার দেবদর্শন ঘটিল, তাহাব পরে আর উহাকে আসিতে না দেখিয়া, উনি কে তাহা ভাবিতে ভাবিতে আত্মস্থ হইয়া পড়েন। ইহার সম্বন্ধে তিনি কি সিদ্ধান্তে উপনীত হইযাছিলেন প্রকাশ নাই, কিন্তু আত্মস্থ হইয়া তাহার হারাণ মালার ঝোলা কোথায় রহিয়াছে জানিতে পাবেন, ও ক্ষেত্র হইতে প্রত্যাবৰ্ত্তনের পবে কথা নিৰ্দ্দেশিত স্থানে উহা পুনঃ প্রাপ্ত হন। শিবোমণিব সম্বন্ধে ঈদৃশ বহু কথাই শুনিতে পাওযা যায়। ভৌলা শাহ ভৌলা শাহের জন্মস্থান শ্রীহট্টের অন্তর্গত বফিনগর পরগণা। ইনি শৈশবে পিতৃমাতৃহীন হইয়া স্বীয় মাসী কর্তৃক প্রতিপালিত হন। বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে তাহার বিদ্যাশিক্ষাব বিশেষ অনুরাগ জন্মে এবং সেই উদ্দেশ্যে ১৫/১৬ বৎসর বয়সে তিনি পশ্চিমে গমন করেন। সৌভাগ্যক্রমে তিনি এক সিদ্ধ ফকিরের সঙ্গ প্রাপ্ত হন; তিনি সেই ফকিরেব তামাক সাজিয়া দিতেন । একদা ফকির তাহার অনুষঙ্গিলগকে বলেন “শ্রীষ্মই আমি চলিয়া যাইব, তোমারা কেহ কাছ ছাড়া হইও না।" অতঃপব তাহাব শরীর অসুস্থ হইয়া পড়িলে তিনি শয্যাশায়ী হইলেন। অনুষঙ্গিবর্গ অনিদ্রা কবিয়া সতর্কভাবে তাহাকে রক্ষা করিতে লাগিলেন। এইভাবে অনেকদিন গেল, শিষ্যবৰ্গ অবিরত অনিদ্রা থাকিয়া ক্লান্ত হইয়া পড়িলেন। তাহাদের গুরুভক্তি ক্রমশঃ কমিতে লাগিল। তখন আর সকলে সকল সময় কাছে থাকেন না, পাশ কটিয়া এড়াইতে পারিলেই সখী! কিন্তু একজন শিষ্য এই রোগাক্রান্ত হন নাই। _ অকস্মাৎ এক রাত্রে ফকিব শিষ্যগণকে ডাকিলেন, তখন সকলেই নিদ্রিত,----কেহ শুনিলেন না । কিন্তু లె তখনও ফকিরের সেবাব জন। জাগিয়া রহিয়াছেন; ফকিরের আহানে তিনি নিকটে উপস্থিত হইলেন । ফকির ভৌলাকে কাছে যাইতে ইঙ্গিত করিলে তিনি নিকটে গেলেন; তখন ফকির র্তাহার মাথায় হাত দিয়া বলিলেন, “আমি চলিলাম, আমার যা কিছু ক্ষমতা, তাহা তোমাতে সঞ্চাবিত হউক, এক্ষণে দেশে যাও ” এই কথাগুলি বলিয়াই ফকির দেহত্যাগ করিলেন । ভৌল। তখন তথা হইতে যাত্রা করিয়া, এক সবেবরাতের দিনে মাসীর গৃহে উপনীত হইলেন। মাসী তাহকে চিনিতে পারিলেন না, অতিথি পলিমাই স্থান দিলেন। পরদিন মাসীকে তিনি আত্ম