পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৯ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত মহেন্দ্রনাথ বি, এস, সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া কিশোরগঞ্জ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হন, কিন্তু অচিরেই কাৰ্য্যত্যাগ করিতে হয়। ময়মনসিংহে যখন প্রাদেশিক সমিতির অধিবেশন হয়, স্কুলের সম্পাদক তখন রাজনীতি সংসৃষ্ট উক্ত ত শিক্ষক অথবা ছাত্রবর্গকে যোগ গিতে নিষেধ করেন। ইহাতে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ব্যহত হইয়াছে বোধ করায় মহেন্দ্রনাথের আত্মসম্মানে আঘাত লাগে এবং তাহাতেই তিনি কৰ্ম্মত্যাগ করেন। এই ঘটনাতে তিনি তথায় উপস্থিত লোকনাযকগণের পরিচিত হইয়া পড়েন। ইহার পর এম, এ পরীক্ষায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম হইয়া উত্তীর্ণ হন ও জাতীয় বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কত্ত্বক উক্ত বিদ্যালয়ের গণিত অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত হন । স্বদেশ-সেবার যে ব্ৰত তিনি জীবনের লক্ষ করিয়াছিলেন, তদনুরোধে ইহার পরে মহেন্দ্রনাথ হবিগঞ্জ জাতীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহণ করেন। এই স্থানে অবস্থিতি কালে র্তাহার উদ্যোগে ১৩১৬ বাংলার বৈশাখ মাস হইতে “মৈত্রী” (মাসিক) এবং পরবর্তী বৈশাখ মাস হইতে “প্রজাশক্তি” (সাপ্তাহিক) প্রকাশিত হয়। মহেন্দ্রনাথের “অরুণাচল” আশ্রয় করার পূৰ্ব্ব পর্যন্ত এই উভয় পত্রিকাই যোগ্যতার সহিত পরিচালিত হইয়াছিল,—যদিও মহেন্দ্রনাথ সাক্ষাৎভাবে মৈত্রী ও প্রজাশক্তির সম্পাদক ছিলেন না। কিন্তু মহেন্দ্রনাথের পরবর্তী জীবন নানাকারণে আমরা আলোচনাযোগ্য মনে করিতেছি না। বিশেষতঃ ইহার সহিত এমন কয়েকটি সমস্যা বিজড়িত, যাহাব রহস্যোন্দ্রেদ এক ভগবান ভিন্ন কাহারও সাধ্যায়ত্ত বলিয়া আমাদের ধারণা হয় না। তাহারই ইচ্ছায় বন্দুকের গুলি দাবা আহত অবস্থায় শ্রীহট্টের হাসপাতালে ১৯১২ সালের ১৬ই জুলাই তারিখে মহেন্দ্রনাথ অকালে প্রাণত্যাগ করিয়াছেন; হায় নিয়তি। মাণিক্যচন্দ্র রায় সেনাপতি কোড়িয়া পরগণার চন্দব গ্রামে “সেনাপতি” বংশ নামে যে এক প্রাচীন বংশ আছে; শীর্ষলিখিত ব্যক্তি হইতেই এ বংশ উক্ত নামে বিশেষ ভাবে কথিত হইয়া আসিতেছে। মাণিক্যচন্দ্রের পিতামহ নরেন্দ্রকিশোর রায় এই স্থানে প্রথম আগমন করেন। তাহার ২য় পুত্র গজেন্দ্রকিশোর জয়ন্তীয়ারাজের সেনাপতিপদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন; কিন্তু তিনি দীর্ঘজীবী ছিলেন না। তাহার পুত্র মাণিক্যচন্দ্র শৌর্য বীৰ্য্যে পিতার তুল্য ছিলেন বলিয়া জয়ন্তীয়ারাজ বড় গোসাঞির অনুগ্রহে তিনি পিতৃপদে নিয়োজিত হন। তিনি দীর্ঘকাল এই পদ অলস্কৃত করিয়াছিলেন; তাহা হইতেই সেনাপতি বংশের সমৃদ্ধি ও গৌরব সম্যক বৃদ্ধি প্রাপ্ত হন। ইহার পুত্রাদি হয় নাই। তদীয় জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রাজেন্দ্রকিশোর রায়ের বংশধরই বংশের নাম ও গৌরব রক্ষা করিতেছেন। রাজেন্দ্ররায়ের ৭ম পুরুষ স্থানীয় শ্রীযুক্ত ক্ষিতীশচন্দ্র রায় সেনাপতি মহাশয় প্রেরিত বিবরণ হইতে ইহা গৃহীত হইয়াছে। মাধব দাস নবদ্বীপবাসী দুর্গাদাসের পূৰ্ব্বনিবাস শ্রীহট্ট ছিল। কোন কারণে তিনি শ্রীহট্ট পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক নবদ্বীপ সস্ত্রক গিয়া বাস করেন। সনাতন ও পরাশর নামে তাহার দুইপুত্র ছিলেন, তন্মধ্যে পরাশরকে সকলে কালিদাস বলিয়া ডাকিত, ইহার একটা কারণও ছিল, তিনি পৈতৃক বৈষবধর্ম পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক