পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১০২ “দৈখোরা মোনশীর জীবনচরিত সম্বন্ধে ইতোহধিক বিশেষ কিছু জানিতে পারা যায় না। বড় বেশী দিন হয় নাই, তিনি নশ্বরজগত পরিত্যাগ করিয়া অনন্ত ধামে চলিয়া গিয়াছেন, তথাপি র্তাহার তিরোভাবের সন তারিখ জানা যায় না। + + + যাহা হউক, দৈখোরা মহাত্মার গানগুলি’ ? তাহাকে অমর করিয়া রাখিবে।”*** মুরারি গুপ্ত শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের ৩য় ভাগ ১ম খণ্ড ৫ম অধ্যায়ে মুরারি গুপ্তের প্রসঙ্গ উত্থাপিত করিয়াছি। বৈদ্যবংশীয় মুরারিগুপ্ত শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রতি পরম আসক্ত ছিলেন। উভয়েই শ্রীহট্টবাসীর সন্তান, নবদ্বীপের এক পল্লীতে উভয়েরই বাস, এবং উভয়েই তত্রতা এক টোলে অধ্যয়ন করিতেন। গঙ্গাদাস পণ্ডিতের টোলে মুরারির ন্যায় যুবক হইতে নিমাইর ন্যায় বালক পৰ্য্যন্ত পড়িত। মুরারি বয়সে নিমাই হইতে অনেক বড় হইলেও নিমাই তাহাকে উত্যক্ত করিতে ছাড়িতেন না। এই গঙ্গ দাসের টোলে কৃষ্ণানন্দ প্রভৃতি আরও বহুতর ছাত্র পড়িতেন, কিন্তু নিমাইর যত আক্রোশ তাহার স্বদেশী এই মুরারির প্রতি। নিমাই যখন ক্রীড়াশক্ত বালক, তখনও মুরারির প্রতি তাহার দৃষ্টি ছিল; তখন একদিন মুরারি সঙ্গী-গণ সহ অদ্বৈতবাদ আলোচনা করিতে করিতে পথে যাইতেছিলেন, কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়াই পশ্চাদিকে হাস্য কলরব শুনিতে পাইলেন। চাহিয়া দেখেন যে, নিমাই তাহাকে বিদ্রুপ করিতে করিতে সঙ্গীসহ পশ্চাৎ আসিতেছেন। তিনি যেমন হাত নাড়িয়া তত্ত্বালোচনা করিতেছেন, নিমাইর অভিনয়ও ঠিক তদ্রুপ হইতেছে। দেখিয়া মুরারির বাগ হইল, বলিলেন—“এটা কি অপদার্থ।” উত্তরে ধূলি—ধূসবিতাঙ্গ নিমাই বলিলেন—“ভাল, ভোজন সময় দেখাইব।” মুরারি আর দৃকপাত না করিয়া চলিয়া গেলেন। ১১০. এই মোসলমান সাধক-কবি-কৃত একটি সঙ্গীত নমুনাস্বরূপ এই স্থানে দেওয়া গেল :– “আমি মিছ কলঙ্কিনী সংসারে। সখীরে, পরাণ বন্ধে ছাড়িয়া গলে আমাবে। (ধুযা) বৃন্দাবনে মধুপুরে হয় গো রসের খেলা। তাহে হয় মদনজালা হায় হায় হায়। এগো শুকনা কমল শুকাইয়া গেল, পায় নামদু ভমরায়। মধুপুরে গেলা হারি না আসিলা আর। হইল গোকুল অন্ধকার হায়হায় হায। এগোকরণে সুখ চারিণী টুরে ভ্রমর নিরলে। দৈখোরা পাগলে বলে আল্লাব নাম সার। মিছা ভবের বাজার হায় হায় হয়। কি জোবাব দিবায় মনা! কবর হাসবে।" ১১১. ১৩১৮বাংকাৰ্ত্তিকের ১ম পক্ষের “প্রভাতে”অধ্যাপক শ্রীযুক্ত পদ্মনাথ ভট্টাচার্য বিদ্যানিবাস মহোদয় কর্তৃক লিখিত প্রবন্ধ হইতে জীবনচরিত ও টীকায় উল্লেখিত সঙ্গীতটি উদ্ধত হইল।