পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০৫ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ঐতিহাসিক মূল্যও সামান্য নহে, কেননা তিনি দৃষ্টবিষয়ই পদে বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন। কবিচন্দ্র শ্ৰীনিতানন্দ প্রভুর ভক্ত ও র্তাহার পার্ষদপৰ্যায় ভুক্ত ছিলেন, শ্রীচরিতামৃতে লিখিত আছে, যথা ঃ– “মহাভাগবত যদুনাথ কবিচন্দ্র। যাহার হৃদয়ে নৃত্য করে নিত্যানন্দ।” যশোমন্ত দেব যখন আসাম প্রদেশ ব্রিটিশ রাজ্যের করতলস্থ হয় নাই, তখনও বহু শ্রীহট্টবাসী ব্রাহ্মণ, ভদ্র ও তদিতর জাতীয় অনেক হিন্দু এবং মোসলমান আসাম অঞ্চলে প্রবাস করিতেন, অনেকে আবার সেই স্থানে বিবাহদি করিয়া রহিয়াও গিয়াছেন। কিন্তু ব্রিটিশ গবর্ণমেন্ট কত্ত্বক আসাম প্রদেশ অধিকৃত হইবার পরে বহুসংখ্যক ব্যক্তি চাকরী এবং উকালতি প্রভৃতি পেশা উপলক্ষে আসামের নানা স্থানে অবস্থান করিতেন। শ্রীহট্ট আসামের অন্তর্ভুক্ত হইবার পরে চাকুরিয়া অনেকেই ব্ৰহ্মপুত্র উপত্যকায় অবস্থান করিতেছেন বটে, কিন্তু স্বাধীন ব্যবসায়ী উকিল মোক্তার ডাক্তার প্রভৃতি শ্রীহট্টের অধিবাসী কমই দেখা যায়। যাহা হউক, অৰ্দ্ধ শতাব্দী পূবেৰ্ব নৈখাই নিবাসী যশোমন্ত দেব গৌহাটি শহরে ওকালতি করিতেন। এই সময়ে মোনশী দ্বীপচাদ রায়ও প্রতিপত্তি সহকারে উকিলের ব্যবসায় করিতেন। যশোমন্ত দেব আসামের প্রাচীন উকিলবর্গের মধ্যে প্রধান স্থান অধিকার করিয়া প্রভূত বিত্ত উপাৰ্জ্জন করিয়া গিয়াছেন। গৌহাটি শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি রাস্তা “যশমন্ত রোড" নামে প্রায় ৩০ বৎসর হইল পরলোকগত এই প্রতিভাবান ব্যবহারজীবের স্মৃতিরক্ষা করিতেছে। ইদানীং শ্রীহট্টে রায় দুলালচন্দ্র দেব বাহাদুর, শ্রীযুক্ত সারদাচরণ শ্যাম, বাবু রাধাবিনোদ দাস প্রমুখ বহু উকিলবগের প্রতিভা ও প্রতিষ্ঠা শ্রীহট্টেব গৌরবসূচক সন্দেহ নাই, কিন্তু পূৰ্ব্বের ন্যায় বিদেশে খ্যাতিমান উকিল ইদানীং বড় দেখা যায় না। রঘুনন্দন ভট্টাচাৰ্য্য জন্মস্থান বিচার "নব্যস্মৃতির প্রবৰ্ত্তক মহাত্মা রঘুনন্দ ভট্টাচার্য তদীয় স্মৃতিগ্রন্থাবলীতে নিজ পরিচয় সম্বন্ধে মাত্র দুইটি কথা বলেন (১) তাহার পিতার নাম হরিহর ভট্টাচাৰ্য্য এবং (২) তিনি বন্দ্যঘটী কুলের ব্রহ্মণ। র্তাহার জন্মভূমি কোথায়, সেই সম্বন্ধে তিনি নিজগ্রন্থে কিছুই উল্লেখ করিয়া যান নাই।” “বঙেগর সাবস্বত পীঠ নবদ্বীপ অতি পূৰ্ব্বকাল হইতেই বিদ্যাচর্চার কেন্দ্রস্থান রূপে পরিগণিত হইয়া আসিতেছিল। স্থানটি আবার গঙ্গাতীরবর্তী হওয়াতে বাঙ্গালার নানাস্থানের লোক প্রথমতঃ অধ্যয়নার্থ আসিয়া ভাগীরথীতে নিত্য স্নানার্থ এই স্থানটি অনুকূল মনে করিয়া এই খানেই ঘরবাড়ী বধিরা অবস্থান করিত। আবার যাহারা প্রতিভাশালী পণ্ডিত হইতেন, তাহারা আপন দেশে ফিরিয়া গিয়া টোল সংস্থাপন করিলে আশানুরূপ ছাত্র জুটিবে না মনে করিয়া স্বীয় প্রতিভার সম্যক বিকাশ সাধনার্থ এই পাণ্ডিত্যের কেন্দ্রভূমিতেই চতুস্পাঠী সংস্থাপন করিয়া পুত্র পৌত্রদিক্রমে এখানেই বসবাস করিতেন।” “এখন রঘুনন্দন কোন স্থানে জন্ম পরিগ্রহ করিয়াছিলেন, ইহাই আলোচনার বিষয়। নবদ্বীপ