পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ১১০ প্রথম সন্দেহের কারণ এই যে ‘কাত্যায়ন খনিজ মণেঃ” ইত্যাদিক যে শ্লোকটির অস্তিত্ব ও যে সংস্কৃত কলেজের ন্যায় ও দর্শন শাস্ত্রের প্রবীন অধ্যাপকগণও ঐ শ্লোকটি অবগত নহেন বলিয়া তাহাকে লিখিয়াছেন। দ্বিতীয় সন্দেহের কারণ এই যে শ্রীযুক্ত পণ্ডিত রামকমল শাস্ত্রী শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের বংশবিবরণের অন্তর্ভুক্ত করিবার জন্য তদীয় বংশতালিকা যাহা প্রদান করিয়াছেন, তাহাতে দেখা গিয়াছে যে তিনি স্বয়ং রঘুপতি হইতে নবমপুরুষ মাত্র। শতাব্দীতে তিন পুরুষ কল্পনা করিলেও রঘুপতি মাত্র ৩০০ বৎসরের লোক হইয়া দাঁড়ান, তাহার অনুজ রঘুনাথ কিরূপে চারিশত বৎসরের শ্রীমদ মহাপ্রভুর সমপাঠী হইতে পারেন? প্রথম বিষয়টি অভিনব, কিন্তু দ্বিতীয় বিষয়টি নিয়া বহু লেখাপড়া হইয়াছে। যাহাহউক এস্থলে উভয় সম্বন্ধে মীমাংসার কথা বলিতে হইল। শ্রীযুক্ত রামকমল শাস্ত্রী মহাশয় হইতেই “কাত্যায়ন খনিজমণেঃ” ইত্যাদি শ্লোক পাইয়াছিলাম। তাহাকে উপবিউক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তির কথা বিজ্ঞাপিত করা হইয়াছিল। তাহার প্রত্যুত্তরে তিনি যাহা লিখিয়াছেন, তাহার মৰ্ম্ম এই ৪— (১) যে পুস্তকে তিনি ঐ শ্লোকটি পাইয়াছেন, সেই পুস্তকের নাম “ক্ষণভঙ্গুর-বাদগদাধরী টীকা”। ইহার স্বত্বাধিকারী পণ্ডিত জয়নারায়ণ তর্করত্ন-যিনি নবদ্বীপের স্বগীয় ভুবনমোহন বিদ্যারত্ব মহামহোপাধ্যায়ের বাড়ীতে অধ্যাপনায় নিয়োজিত ছিলেন। ঐ গ্রন্থের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রথমেই ঐ শ্লোকটী রহিয়াছে। অতএব অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তিগণ শ্লোকের প্রামাণ্য অবধারণ করিতে পারেন। এস্থলে বক্তব্য যে রঘুনাথ কাত্যায়ন গোত্রীয় হইলে শ্রীহট্টের না হইয়া যান না। কেননা কাত্যায়ন গোত্র শ্রীহট্ট ভিন্ন দেখা যায় না। অন্যত্র দুএক ঘর যদি থাকেন, তাহাদের পূৰ্ব্বপুরুষ শ্রীহট্ট হইতেই গিয়াছেন, একথা বলিয়া থাকেন। (শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে এই বিষয় বিস্তারিত আলোচিত হইয়াছে।) (২) পুরুষ সংখ্যা সম্বন্ধে আমার বক্তব্য এই যে তিনি পুরুষে শতাব্দী রাজরাজড়াদের সম্বন্ধে খাটিলেও, যে বংশে নিয়মিতরূপে ব্রহ্মচৰ্য্যব্রত ধারণপূৰ্ব্বক শাস্ত্রাধ্যয়নের বিধান প্রচলিত ছিল, তাহার সম্বন্ধে খাটে না। র্তাহারা ৩৫/৪০ বৎসরের কন্যা বিবাহ করিতেন, ইহাদের সন্তান হইতে আরো ৫/৭ বৎসর হইত, আর প্রথমেই যে পুত্র সন্তান হইত, তাহাও নহে। অথচ দ্বিতীয়বার দারপরিগ্রহপূৰ্ব্বক সন্তানোৎপাদন করিবার প্রয়োজন হইলে পঞ্চাশোদ্ধোও সন্তান জন্মিত্ব। এসব কারণে সুদীর্ঘজীবী সংযমী ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের বংশধারায় শতাব্দী দুই পুরুষে গণনা করিলে কোনও অসম্ভাবিত কিছু হইল বলিযা মনে করা যায় না। এরূপস্থলে দুই পুরুষে শতাব্দী গণনাই ঠিক বলিয়া মনে হয়। দেবীযুদ্ধ প্রণেতা শ্রদ্ধেয় কবি শ্রীযুক্ত শরচ্চন্দ্র চৌধুরী মহাশয় স্বীয় পূৰ্ব্বপুরুষের কাল বিচারপূৰ্ব্বক ইহার উদাহরণ সহ এ বিষয়ে আমাদিগকে লিখিয়াছেন—“তিন পুরুষ শতাব্দীর গণনা আধুনিক প্রণালী। পূৰ্ব্বকালে লোক এত অল্পায়ু ছিল না।” আমবাও ইহার উদাহরণ পাইতেছি। শ্ৰীমহাপ্রভুর পিতৃবয়স্ক প্রসিদ্ধ অদ্বৈতাচার্যের ২য