পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৩ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত গমন করিয়া সেতুবন্ধে উপস্থিত হন। সেতুবন্ধ হইতে নীলগিরিতে উপস্থিত হইয়া কয়েকদিন বিশ্রাম করতঃ নিৰ্জ্জন উপাসনা করেন। তৎপর পশ্চিমাভিমুখ হইয়া সেতারা, বুম্বাই, পুনা প্রভৃতি স্থানের তীর্থাদি দর্শন করিয়া একবৎসর কাল সেই স্থানে বাস করেন। তথা হইতে দ্বারকাধামে উপস্থিত হন ও তথায় একবৎসর অবস্থিতি করেন। দ্বারকা হইতে জয়পুর, পুষ্কর প্রভৃতি হইয়া মথুরায় যান ও তথা হইতে বৃন্দাবনে পৌছেন, বৃন্দাবনে পবিত্র ধুলায় তিনি গড়াগড়ি দিয়া “হা কৃষ্ণচন্দ্র” বলিয়া রোদন করিতে আরম্ভ করেন; অবরুদ্ধ জলস্রোত যেন ফুলিয়া ফুলিয়া দেশ ভাসাইয়া চলিল, বিলোকনে কৃপালু বিস্মিত হইয়া গেলেন। বৃন্দাবনের সারধন গোবিন্দ গোপীনাথ মদনমোহন দর্শন ও যুগল কুণ্ডজলে নিমজ্জনাদিপূৰ্ব্বক তিন বৎসর অতিবাহিত করেন তন্মধ্যে একবৎসর শ্যামকুণ্ডে ছিলেন। তারপর ফালুন মাসে সূৰ্য্য গ্রহণোপলক্ষে তথা হইতে কুরুক্ষেত্রে যাত্রা করেন, কুরুক্ষেত্রে গ্রহণোপলক্ষে গৃহত্যাগী বহুতর তপস্বী একত্রিত হইয়াছিলেন, ইহাদিগকে দেখিতে পাইয়া তিনি পরম আনন্দ লাভ করেন। তাহার পর তিনি হরিদ্বার, বদরিকাশ্রম, গঙ্গোত্রী প্রভৃতি তীর্থদর্শনপূৰ্ব্বক নেপালরাজ্যের পথে মিথিলাতে গিয়া উপস্থিত হন। মিথিলা হইতে গয়া ও তথা হইতে কাশী দর্শনান্তর, দেশে আসিবার মানসে পূৰ্ব্বাভিমুখে ক্রমাগত চলিয়া ঢাকা শহরে আসিয়া উপনীত হন। শহরের দক্ষিণাংশে ফরিদাবাদে তিনি উপস্থিত হইলে তথায় সমবেত কতিপয় বৈষ্ণবসহ তাহার দেখা হয়, বৈষ্ণববর্গ রামকৃষ্ণেব মুখে অবিরত “পূৰ্ণব্রহ্ম” ইতি ধ্বনি শ্রবণে র্তাহাকে অসম্প্রদায়ী বোধ করেন। কিন্তু অনতিবিলম্বেই তদীয় অত্যদ্ভুত মহিমা তাহাদের গোচরীভূত হয়, তাহাকে পরম সাধুজ্ঞান তখন সকলেই বিশেষ সমাদর ও ভক্তি প্রদর্শন করেন। o উৎসব রায় নামে ত্রিপুরার জনৈক রাজা রাজ্যসংক্রান্ত বিরোধবশতঃ উপদ্রুত হইয়া ঢাকায় গিয়া বাস করিতেছিলেন, তিনি এই সাধুর সংবাদ শ্রবণে তৎসমীপে গমন করেন ও সাধুজনোচিত সদ্ব্যবহার এবং অদ্ভুত মহিমা দর্শনে বিস্মিত হন, রামকৃষ্ণের প্রতি তাহার অত্যন্ত ভক্তি জন্মে, ফরিদাবাদে উৎসব রায়ের কতকটা ভূমি ছিল, তাহা তিনি বামকৃষ্ণ গোসাঞিকে দান করেন ও তাহার কাছে দীক্ষিত হন। ইহাতেই ফরিদাবাদে বামকৃষ্ণ গোসাঞির আখড়া স্থাপিত হয়। ঢাকা হইতে রামকৃষ্ণ কুমিল্লা, জোয়ানশাহী প্রভৃতি হইয়া এবং তত্তৎস্থানে বহুশিষ্য রাখিয়া পরে মাছুলিয়াতে আসিয়া পৌছেন। বিহঙ্গমের ন্যায় মুক্তবাতাসে ৩৬ বৎসর বিচরণ করিয়া >Wり8 ○ খৃষ্টাব্দে তিনি আখড়াতে উপস্থিত হন। ইহার কিঞ্চিৎ পূৰ্ব্বে শান্ত গোসাঞি লোকান্তরবাসী হওয়ায় গুরুর সহিত তাহার সাক্ষাৎ হইল না। এবং রামকৃষ্ণকেই তখন গদীতে বসিতে হইল। রামকৃষ্ণ গদীতে বসিলে, চুম্বক যেমন লৌহকে আকর্ষণ করিয়া থাকে, সেইরূপ নানাস্থানে ভক্তাভক্তনিবির্বশেষে বহুলোক আসিয়া তাহার শিষ্য হইতে লাগিল। তদীয় গুণাবলী শ্রবণে তরফের জংজিতগোপাল,বম্বক্লেশব-মহাদেব, বুচিবন্দর,নীলগিরি, মহীসুর, কুমারস্বামী, কিঙ্কিন্ধা, মেলকুটা, ভগলকুটা,পাণ্ডাবপুর, পুনা, সেতাবা,মুম্বাই,নাসিক, সোমনাথ মাধবদ্বাব,মাধবপ্রাচীর, ভীমনাথ, প্রভাস, ডাকরাজি (গুজবাট)গৃহণব,দ্বাবক, ভোটদ্বাবক, গোপীতলা, শবতীর্থ, পুষ্কবতীর্থ, জয়পুবভারতপুর, মথুরী, বৃন্দাবন, হস্তিনাপুর, কুকক্ষেত্র, জ্বালামুখী, হবিদ্বাব, হৃষীকেশ, গোমুখী, গঙ্গৌত্রী, কেদাবনাথ, বদরিকাশ্রম, নেপাল, মথুরা, গয়া,কাশী, বৈদ্যনাথ, ঢাকা, প্রভৃতি ভ্রমণ কবেন। শ্ৰীক্ষেত্র হইতে দক্ষিণাভিমুখে গিয়া কন্যাকুমারী, তথা হইতে পশ্চিমাভিমুখে ও তদনন্তব উত্তরমুখে গমন করিয়া গুজরাট প্রভৃতি হইয়া হরিদ্বাব,তৎপবে নেপাল আসিয়া পূৰ্ব্বমুখে দেশে আসিযছিলেন,ইহাই অনুমতি হয়।