পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৪২ অনেক মহালই রাজস্ব বাকিতে এবং কোন কোন মহাল “বিপ্লবী” ব্যক্তিবর্গের চক্রে হস্তান্তর গিয়াছে। এই আখড়াতে ব্রাহ্মণ ব্যতীত অন্য জাতীয় কেহ অধিকারী হইতে পারেন না; আখড়ার অনেক ব্রাহ্মণ ও ভদ্র শিষ্য ছিলেন ও আছেন। ঠাকুর শান্তরামের শিষ্য জয়গোবিন্দ ও ঠাকুর দয়াল, তাহার শিষ্য ধৰ্ম্মদাস (ঠাকুর ধনঞ্জয়), নিতাইচাদ, ইহার শিষ্য শ্রীযুক্ত রত্নগোবিন্দ অধিকারী এক অতি প্রবীণ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। শাহ আব্দুল আলা চরিত ইহার নিবাসস্থান শ্রীহট্ট এবং সাধনস্থান সুবর্ণগ্রাম। “মোগড়া পাড়া গ্রামের উত্তরাংশে গোহাটা মহল্লায় সুপ্রসিদ্ধ পীর শাহ আব্দুল আলার সমাধি পরিলক্ষিত হইয়া থাকে। ইনি পোকাই দেওয়ান নামে পরিচিত। কথিত আছে ইনি সংসারাশ্রম পরিত্যাগপূৰ্ব্বক দ্বাদশ বৎসর কাল নিবিড় অরণ্য মধ্যে ধ্যানে নিমগ্ন ছিলেন। এই সময়ে ইহার বাহ্যজ্ঞান রহিত হইয়াছিল; এমনকি, আহারদির জন্যও ইনি কোনও সময়ে ধ্যানভঙ্গ করেন নাই। ইহার অনুচরবর্গ এই পরমযোগী মহাপুরুষের অন্বেষণে বহুস্থান পরিভ্রমণ করিয়া অবশেষে এই স্থানে ইহাকে একটী উইর ঢিপিমধ্যে ধ্যানমগ্নাবস্থায় প্রাপ্ত হয়। ইনি সম্ভবতঃ অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে আবির্ভূত হইয়াছিলেন। কারণ ১৮৬৪ সনে সুবর্ণগ্রামে এরূপ বয়োবৃদ্ধ লোক বিদ্যামান ছিলেন যাহারা এই মহাপুরুষের পুত্র শাহ ইমাম বক্স বা চলুমিঞাকে তথায় জীবিতাবস্থায় দর্শন করিয়াছিলেন। চুলুমিঞা বৃদ্ধ বয়সে শ্রীহট্ট হইতে পিতার সমাধিস্থান পরিদর্শন করিতে এখানে আগমন করেন এবং কতিপয় বৎসর এখানে বাস করিয়া মানবলীলা সম্বরণ করেন। পিতা পুত্রের সমাধি একই স্থানে পাশাপাশি ভাবে রহিয়াছে। J.A.S.B. 1874 Pt. I." (শ্রীযুক্ত যতীন্দ্রমোহন রায় প্রণীত ঢাকার ইতিহাস প্রথম খণ্ড) শাহ জালাল শাহ জলাল মোসলমান ধৰ্ম্মজগতে অতি উচ্চ অধিকারী এবং অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন একজন প্রধানতম দরবেশ ছিলেন; ইহার জীবনচরিত শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাঃ ২য় খঃ ২য় অধ্যায়ে বিস্তারিতরূপে বর্ণিত হইয়াছে। এস্থানে পুনরুল্লেখ নিম্প্রয়োজন। t ইন্দেশ্বববাসী শ্যামবাম সোম ও আনন্দরাম ১১৮২ সাবান তারিখে ইন্দেশ্বৰ হইতে “দেবতার সেবার জন্যে” ॥১ ৷০ পরিমমিত ভূমি এক দানপত্রে (নং ৩৩৮) পানিশালিব “চম্পকপ্রিয়া বৈরাগিরি ঠাকুরাইন”নামে অর্পণ করেন। শ্রীহট্টের ফজলআলী মজুমদার উক্ত আখড়াব গউরদাস বৈষ্ণবকে ইন্দ্ৰেশ্বর হইতে /১ জমি "ব্রহ্মত্র” দান কবেন। অধিকারী উপাধি না থাকায় বোধ হয় যে, ইনি সাধারণ বৈষ্ণব ছিলেন। এই আখড়ার অধিকারী ও বৈষ্ণববর্গ যে গুণী ও জ্ঞানী ছিলেন এবংসকলেরই শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন;কালেক্টরীতে রক্ষিত এই সব সনন্দ তাহার প্রমাণ দিতেছে। ব্রাহ্মণ অধিকারিগণেব দাসাত্মক নাম শুদ্রত্বব্যঞ্জক নহে, দীনতাজ্ঞাপক মাত্র।