পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৫২ সত্যভানু আনন্দে প্রসাদ ভক্ষণ করিলেন। আর র্তাহার ভ্রমণ হইল না, তিনি নবদ্বীপে রহিয়া গেলেন ও প্রত্যহ আসিয়া নিমাইকে একবার করিয়া দেখিয়া যাইতেন। সত্যভানু গম্ভীরাশয় ব্যক্তি ছিলেন, তাই এক অদ্ভুত কথা তৎকালে ব্যক্ত করেন নাই, পরে যখন নিমাইর মহিমা প্রকাশিত হইতে থাকে এবং ভক্তবর্গকর্তৃক তিনি অবতাররূপে পূজিত হইতে থাকেন,তখনই প্রকাশ করেন। সত্যভানুর তিনপুত্র; ইহাদের নাম বলরাম, জনাৰ্দ্দন, ও মুরারি। জনাদনের শ্রীমদ্ভাগবতে বিশেষ অনুরাগ ও অধিকার ছিল; মুরারিও “পরম পণ্ডিত” ছিলেন। বলরাম দাস শ্রীমন্নিতানন্দ প্রভুর মন্ত্রশিষ্য ও একজন পদ রচয়িতা কবি ছিলেন, তিনি দোগাছিয়াতে বালগোপাল বিগ্রহের সেবায় নিযুক্ত ছিলেন। নিত্যানন্দপ্রভু দোগাছিয়াতে সময় সময় যাইতেন। জনাৰ্দ্দন ও মুরারি অদ্বৈতভক্ত ছিলেন; ইহাদের নাম শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের ১২শ পরিচ্ছেদে পাওয়া যায়। জনাৰ্দ্দনের বংশীয় ব্রাহ্মণগণ নদীয়া জেলার মেহেরপুরে এবং মুরারির বংশধরবর্গ উক্ত জেলার ভানুকাগ্রামে বাস করিতেছেন। সুবিদনারায়ণ (রাজা) শ্রীহট্টের অন্তর্গত ইটা নামক খণ্ডরাজ্যের অধিপতি। ইনি তদানীন্তন কালে সাম্প্রদায়িক ব্রাহ্মণসমাজের সমাজপতিরূপে অনেক নিয়ম প্রণালী প্রবৰ্ত্তিত করিয়াছিলেন। শ্রীহট্টের দেওয়ান ইহার প্রতিদ্বন্দ্ব ছিলেন। পরে খোওয়াজ ওসমান নামক পাঠান কর্তৃক তিনি রাজ্যচ্যুত হন। ইহার বিবরণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৭ম অধ্যাযে বিস্তারিত কথিত হইয়াছে। সাদেক আলী ংলা পরগণার অন্তর্গত হিঙ্গাজিয়া থানার দুই মাইল পূৰ্ব্বে এক ক্ষুদ্র গ্রামে গৌরকিশোর সেনের বাস ছিল। তিনি কোন কারণে মোসলমান ধৰ্ম্ম অবলম্বন করেন ও সাদেক আলী নামে খ্যাত হন সাদেক আলী মোসলমান সমাজে এতদ্দেশ প্রচলিত আচার ব্যবহারের কতকটা সংস্কার সাধনে চেষ্টিত হন ও কিয়ৎপরিমাণে কৃতকাৰ্য্যও হন। তিনি মোসলমান সমাজে ব্যবহার্য্য কয়েকখান কেতাব লিখিয়া গিয়াছেন, ঐ সকল কেতাব মোসলমান সমাজে অতি আদরের সহিত পঠিত হয় র্তাহার কৃত “হুলতুন্নবি”, “রদ্ধেকুফুর” প্রভৃতি পুস্তক শ্রীহট্টীয় নাগরাক্ষরে* মুদ্রিত হইয়াছে রদেকুফুর কেতাবে তাহার নিজের জীবন সম্বন্ধেও অনেক কথা আছে। সৈয়দ শাহ খোদাবন্দ শাহ খোদাবন্দ তরফের অধিকারী ছিলেন। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৫ম অধ্যায়ে ইহার নাম পাঠক পাইয়াছেন। কথিত আছে যে ইনি তত্ৰত্য আদিত্যবংশীয় জনৈক বালিকার পাণি গ্রহণ করেন। আদিত্য বংশীয় রামচন্দ্র খাঁ তৎকালে তরফের বিশেষ সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তি ছিলেন; তিনি রৌপ্যনিৰ্ম্মিত এক সিংহাসনে উপবেশন করিতেন। খোদাবন্দ ইহার দুহিতাকে বিবাহ করিবার প্রস্তাব করিলে সে প্রস্তাব অগ্রাহ্য করা হইয়াছিল এবং শ্রীহট্ট শহরের কোনও সন্ত্রান্ত ব্যক্তির ১৫১. শ্রীহট্ৰীয় মুসলমানীনগরাক্ষর নমুনা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশ প্রথম ভাগে প্রদত্ত হইয়াছে।