পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৫৮ না। দক্ষিণ হস্তের তজ্জনী উদ্ধে তুলিয়া হারু যখন মালসী গান ধতি, তখন ঝর ঝর করিয়া তাহাব অশ্রুপাত হইত, শ্রোতাদেরও হৃদয় গলিত।” “পাচপীরের মোকামের পীরেরাও সেই জাতীয় ছিলেন। পাঁচজনে মিলিয়া কেহ ভিক্ষা করিতেছেন, কেহ বিপন্নকে উদ্ধার করিতেছেন, কেহ অতিথি সৎকার করিতেছেন, এই তাহাদের কৰ্ম্ম, এই তাহাদের ধৰ্ম্ম, এই তাহাদের সাধন ছিল। বিপন্ন কিরূপ, তাহা বলিতেছি।” “মিল্লিক দাওরাই প্রভৃতি গ্রাম তখন বসে নাই। পশ্চিমে আতুয়াজান, দক্ষিণে আগনা, সুনাইতা প্রভৃতি, পূবেৰ্ব অরঙ্গপুর বেগমপুর, করণশী ও দুলালী, উত্তরে বনভাগ প্রভৃতি, এই বিস্তীর্ণ সীমার মধ্যে একটি মাত্র হাওর এবং তাহাতে বড়দই প্রভৃতি প্রকাণ্ড বিল ছিল। এই হাওরে ডাকাতির কথা কখনও শুনা যায় নাই, কিন্তু বর্ষাকালে নৌকাযাত্রীরা পথ হারাইয়া বিষম বিপন্ন হইত; অনেক নৌকা মারাও যাইত। ইহাদিগকে রক্ষা করিবার জন্যই উক্ত পাঁচ মহাত্মা এইখানে মোকাম স্থাপন করেন। ইহারা সন্ধ্যা হইলেই প্রকাণ্ড দুইটি অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করিতেন এবং সমস্ত রাত্রি জাগিয়া উহাতে ইন্ধন যোগাইতেন। দুইটি অগ্নির উদ্দেশ্যে, যদি একটিতে লোকে ভূতের আগুন মনে করিয়া বিশ্বাস না করে। এই অগ্নি দেখিয়া অনেকেই গন্তব্য পথের দিশা করিয়া লইত, অনেকে নিরুপায় হইয়া ইহাদিগের আশ্রমে হাজির হইত, ইহাদের আতিথ্য গ্রহণ করিত। এখন আমরা সভ্য হইয়াছি, বিনা টাকায় না কি দেশের উপকার হয় না।” “কেবল মানুষের নহে, ইহারা গোজাতিরও পরম উপকারী ছিলেন। ভিক্ষায় বাহির হইলে গোপীডন ঔষধ সঙ্গে রাখিতেন।”