পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৬৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০৭ পরিশিষ্ট 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত হাটিতাম না পারি আজি পুড়য়ে অন্তরে।” এইরূপে উক্ত কবিতার প্রতি পংক্তিতেই তাহার হৃদয়ের অপূর্ণ আকাঙক্ষার অভিব্যক্তি পরিলক্ষিত হয়। পিতৃবিয়োগের পর পিণ্ডদানোদেশে উভয় ভ্রাতা গয়াধামে গমন করেন। তখন হাটিয়া বা নৌকাতে যাইতে হইত। ইহারা আত্মীয় স্বজন সমভিব্যবহারে ৫১ জন ব্যক্তি নৌকাযোগে যাত্রা করেন। সুদীর্ঘ পথ, সাহিত্যুমোদী শম্ভুনাথ দিন কাটাইবার এক উপায় করিলেন। প্রভাত হইতেই তিনি কালি কলম কাগজ লইয়া নৌকার অগ্রভাগে গিয়া বসিতেন এবং পথের কোথায় কি আছে, তাহার খবর লইয়া লিপিবদ্ধ করিতেন। এইরূপে কাছাড় হইতে কাশী পৰ্য্যন্ত জলপথে গমনের এক চিত্র ও বিবরণী প্রস্তুত হয়। ৫৭ হাত দীর্ঘায়তন উক্ত মানচিত্রে নদীর উভয় পাশ্বের গ্রাম পরগণা, দেবালয়, হাট, খাল বিল জঙ্গল ইত্যাদি প্রত্যেক জ্ঞাতব্য বিষয চিত্রিত ও বর্ণিত হইয়াছে। কাশী যাওয়ার জলপথের এই ভৌগোলিক চিত্র প্রণয়নের জন্যই তিনি চিরস্মরণীয় হইয়া রহিয়াছেন। কাশী যাতায়াতে নয় মাস লাগিয়াছিল, নয় মাস পরে বাড়ীতে আসিলে এক মণিপুরী দসু্যর চক্রান্তে র্তাহার গৃহ দাহ হয়। ইহার পর হইতে মধ্যে মধ্যে র্তাহার রক্ত বমন হইত; তিনি লিখিয়া গিয়াছেন ৪— “রুধির শ্রবিয়া অঙ্গে কৈল হীনবল। দারুণ কাৰ্ত্তিক মাসে হইলাম আচল। এই হইতে নৈরাশ আমি হৈলাম নিরানন্দ।” ইত্যাদি এই দারুণ রক্তবমনই বিষাদময় কবির দুঃখময় জীবন অবসান করেন, ইহাতেই ১৮৭৬ খৃষ্টাব্দে তাহার মৃত্যু হয়। তাহার ভ্রাতুষ্পপুত্র শ্রীযুক্ত রামতারক দেশমুখ্য মহাশয় হইতে এই বংশ কথা প্রাপ্ত হইয়াছি।’ হাইলাকান্দির ব্রাহ্মণ বংশ বংশ কথা কাছাড়ের ব্রাহ্মণ বিবরণ বলিতে গেলেই কৌণ্ডিল্য গোত্রীয়গণের কথা সৰ্ব্বাগ্রেই স্মরণ হয়। পাশ্চাত্য বৈদিক যজুৰ্ব্বেদী ব্রাহ্মণ বংশে কৌণ্ডিল্য গোত্রে কাছাড়ের উজ্জ্বল নক্ষত্র স্বনামধন্য হরিচরণ রায় বাহাদুরের উদ্ভব হইয়াছিল। র্তাহার পূৰ্ব্বপুরুষগণ এদেশবাসী ছিলেন না। রায়বাহাদুরের সুযোগ্য পুত্র শ্ৰীযুক্ত হরকিশোর চক্রবর্তী মহাশয় আমাদিগকে জানাইয়াছেন যে ১৬ পুরুষ পূৰ্ব্বে তাহাদের বংশের আদি পুরুষ রাঘবরাম ফরিদপুরের কৌটালীপাড়ে ছিলেন। রাঘবের চারি পুত্র ছিল; কোন অজ্ঞাত কারণে ইহাদের পরবৰ্ত্তিগণ মধ্যে কেহ তথা হইতে বিক্রমপুরের বংশীয়গণ অদ্যাপি আছেন। বাঘবের ১১শ পুরুষে উমাকান্ত তর্কবাগীশ নামে এক পণ্ডিত ছিলেন, তাহার বাঞ্ছারামের রামেশ্বর, ১ ১৩২১ বাং পৌষ মাসেব প্রতিভা পত্রে কবির জীবন কাহিনী সহ তৎকৃত বারমাসী প্রকাশিত হইয়াছে। আমবা রামতারক বাবুর নিকট শুনিয়াছিযে কবির কৃত ১৮৫৯ খৃষ্টাব্দে ভূকম্পের একটি সুন্দর কবিতা আছে কিন্তু কীটদষ্ট হওয়াতে উহা অপাঠ্য হইয়াছে।