পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৬৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০৯ পরিশিষ্ট 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত “গবর্ণমেন্ট তাহার কার্যে প্রীত হইয়া তাহাকে রায় বাহাদুর উপাধি, স্পেসেল একস্ট্রা এসিষ্টেন্ট কমিশনারের পদ ও অপরাপর সম্মানে ভূষিত করেন। রায় বাহাদুর ১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে রাজকাৰ্য হইতে অবসর গ্রহণ করিয়া শাস্ত্রালোচনা ও বিবিধ সৎকার্যের অনুষ্ঠানে কাল অত্যাহিত করেন। ১৩১৪ সালের ১৮ই ভাদ্র বুধবারে বারাণসী ক্ষেত্রে তিনি দেহত্যাগ করেন।” হাইলাকান্দির কায়স্থ চৌধুরী বংশ “কাছাড় জেলার আদিম অধিবাসী কাছাড়ি জাতি এবং পাৰ্ব্বত্য অন্যান্য জাতি। বৰ্ত্তমানে সমতল ভূমিতে বাঙ্গালীরাও বাস করিতেছেন। ইহাদের ছোট বড় সকলেই শ্রীহট্টের বিভিন্ন স্থান হইতে আসিয়অ কাছাড়বাসী হইয়াছে।” আমাদের বিবরণ প্রদাতা এইরূপে আরম্ভ করিয়া লিখিয়াছেন যে দে চৌধুরী বংশের আদিপুরুষ যদুনাথ শ্রীহট্টের বনভাগ পরগণার কালীজুরি গ্রাম হইতে দরিদ্রতা বশতঃ স্বীয় মোসলমান বন্ধু নওয়া মিয়া সহ প্রথমতঃ এগারশতী পরগণায় গিয়া বাস করেন, তত্ৰত্য “যদুরটিলা” ও “নওয়াটিলা” তাহাদের পূবর্ব নিবাসের পরিচয় দিতে বৰ্ত্তমান আছে। যদুনাথের পুত্র শম্ভুনাথ এগারশতী পরিত্যাগ করেন এবং বৰ্ত্তমান বদরপুর ষ্টেশনের নিকটবৰ্ত্তী বুন্দাশিল নামক স্থানে বসতি করেন। তজ্জন্য তদবধি এই বংশকে কেহ কেহ বৃন্দাশিলী বংশ বলেন। শম্ভুনাথের পুত্র জগন্নাথ ঐ স্থান ত্যাগ করিয়া কাছাড়ের বিক্রমপুরবাসী হন। ইনি তীক্ষ্ণবুদ্ধি সম্পন্ন ও কৌশলী পুরুষ ছিলেন, কাছাড়রাজ ইহার উপরে কোন কারণে তুষ্ট হইয়া তাহাকে মজুমদার উপাধি দেন। ইনি রাজআজ্ঞায় বৰ্ত্তমান বড় হাইলাকান্দি মৌজায় আসিয়া কিছুকাল বাস করেন। তিনি তথায় বাঙ্গালী প্রজার বসতি স্থাপন করেন এবং পাৰ্ব্বত্য জাতির আক্রমণ হইতে তাহাদিগকে রক্ষা করিয়া সে অঞ্চল সুশাসিত করেন। ঐ সময় শ্রীহট্ট ও কাছাড় সীমাস্থ সরসপুবের পাহাড়বাসী রামভদ্র নামক পাৰ্ব্বত্যজাতির এক নেতা মধ্যে মধ্যে ধলেশ্বর নদতীরবর্তী বসতিতে আপতিত হইয়া ভীষণ অত্যাচার করিত কাছাড়রাজ ইহাকে দমনের জন্য আদেশ দেন এবং কেওয়ালিপার মৌজায় তাহার বাসের জন্য, একদিনের মধ্যে এক বাটি প্রস্তুত করিয়া দেন, ঐ বাটী এখন “পুরাতন বাটী” নামে পরিচিত। জগন্নাথ এখানে আসিলেও রামভদ্র অত্যাচার করিতে ক্ষান্ত হয় নাই। কিন্তু অচিরেই জগন্নাথ, পাহাড়ের মধ্যে রামভদ্রকে নিহত করেন। ঐ স্থান অদ্যপি “রামভদ্রের কাটা" বলিয়া প্রসিদ্ধ রহিয়াছে। হাইলাকান্দি পূৰ্ব্বে ত্রিপুরা রাজ্যের অধিকৃত ছিল। এক ত্রিপুর-রাজ কন্যাকে কাছাড়-পতি বিবাহ করিয়া উক্ত অঞ্চল যৌতুক প্রাপ্ত হন। জগন্নাথ এই ভূখণ্ড নিয়া ত্রিপুরাপতির সহিত ষড়যন্ত্র করায় তাহার শিরচ্ছেদ হয়। জগন্নাথের পাঁচ পুত্র; তন্মধ্যে ৩য় তিলকরামের জ্যেষ্ঠ পুত্র কৃষ্ণচরণ খ্যাতিমান পুরুষ ছিলেন। কাছাড়-রাজ কৃষ্ণচন্দ্র নারায়ণের সহিত র্তাহার মিত্রতা ছিল বলিয়া কথিত আছে। ইহাদের বংশ নাই। ধনরাম ও ভবানীচরণ নামক তিলক রামের কনিষ্ঠ ভ্রাতৃদ্বয়ের বংশই বিস্তুত। ধনরামের পাঁচপুত্র এবং ভবানীচরণের দুইপুত্র হয়। ইহারা কাছাড়-রাজ হইতে চৌধুরী উপাধি প্রাপ্ত হন। ভবানীচরণের কনিষ্ঠপুত্র জয়রাম প্রতাপশালী ব্যক্তি ছিলেন, তিনি কাছাড় রাজের মন্ত্রিপদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন এবং রাঙ্গাউটির মোসলমান চৌধুরীর সাহায্যে হাইলাকান্দি শাসন করিতেন। একদা কাছাড়-রাজ কোন বড়ভূইয়াকে চৌধুরী উপাধি দিতে ইচ্ছা করেন। তখন জয়রাম চৌধুরী