পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৫ চতুর্থ অধ্যায় : রঙ্গদ বংশ বর্ণন 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত এইরূপে তপস্বী গৃহী হইলেন। তিনি সকৃতজ্ঞ চিত্তে সেই ভূখণ্ডের উত্তরাংশের নাম বেগমপুর রাগিলেন এবং দক্ষিণাংশকে নবাবপুর নামে খ্যাত করিলেন। বেগমপুরেই তাহার গৃহাদি ছিল, বেগমপুর তাই গ্রামে পরিণত হইল এবং নবাবপুর কৃষিক্ষেত্রই রহিল। গ্রামের পূৰ্ব্বদিকে সদাশিবের ভিটা ও পুষ্করিণীর নিদর্শনা অদ্যপি আছে। মাটির মমতা ব্রাহ্মণ অধুষিত এই প্রাচীন গ্রামের যাবনিক নাম কেন হইয়াছিল, ইহাই তাহার ইতিহাস। আজ পর্যন্ত তত্ৰত্য লোকের অবিচলিত ভক্তি দেখা যায়। আজ পর্যন্ত দুই ব্যক্তিতে তর্ক উপস্থিত হইলে বা প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হইতে হইলে, “সদাশিবের দোহাই’র অব্যাহত প্রভাব লক্ষিত হয়। আজ পর্যন্ত লোকের “সদাশিবের কাশী ছাড়িতে ইচ্ছা হয় না।” আজও তাহাদিগকে “সদাশিবের মাটি দয়া” করিয়া থাকে। পুত্র-প্রসঙ্গ বাসুদেব ব্যতীত সদাশিবের বাচস্পতি ও রতিকান্ত বা রতাই পণ্ডিত নামে আরও দুই পুত্ৰজাত হয়। বাচস্পতি নাম নহে। সম্ভবতঃ দ্বিতীয় পুত্রের উপাধিই বাচস্পতি ছিল। রতিকান্তের কোন উপাধি না থাকিলেও বিদ্যা গৌরবে ইনি পণ্ডিত নামে খ্যাত হন। দ্বিতীয অধ্যায়ে বুরুঙ্গার রাঘব বিদ্যানিধিব বিবরণ বর্ণিত হইয়াছে। রাতই পণ্ডিত ইহার সমসাময়িক ছিলেন। একদা কোন ব্যাপার উপলক্ষে প্রখ্যাতকীৰ্ত্তি রাঘব নিমন্ত্রিত হইয়া বেগমপুরে আগমন করেন ও “রাজপণ্ডিতি’র দাবী করেন । রাজপণ্ডিতি কি ? পূৰ্ব্বে যে সকল শাস্ত্ৰজ্ঞ বিভিন্ন পবগণায় হিন্দুশাস্ত্র-সম্মত ব্যাপারাদিতে ব্যবস্থা দিতেন ও তদুপলক্ষে বিদায় পাইতেন এবং বিচার কাৰ্য্যে প্রয়োজনানুসারে ঐ সম্বন্ধে যাহাদের অভিমত প্রামাণ্য বলিয়া গ্রহণ করা হইত, তাহাবাই “রাজপণ্ডিত গণ্য হইতেন। রাঘব বেগমপুর হইতে রাজপণ্ডিতির বিদায় পাইবার দাবী করিলে রতাই প্রতিবাদী হইলেন। রাঘব বাজপণ্ডিতি পাইবেন কেন ? বাজপণ্ডিতি পাইবার কারণ কি ? ইত্যাদি জিজ্ঞাসায় জানিলেন যে, শাস্ত্র বিচারে জযলাভ করিয়া তিনি সৰ্ব্বত্রই এই বৃত্তি প্রাপ্ত হইয়াছেন। রতাই তখন বিদ্যানিধিকে বিচারে আহ্বান কবিলেন । কোথায় বিদ্যানিধির অগাধ বিদ্যা, আর কোথায় রতাইর সামান্য জ্ঞান-নিষ্ঠা ? রত্যহর উন্মত্তগৰ্ব্বে বিদ্যানিধি হাসিয়া উঠিলেন, সমাগত লোকমণ্ডলী কৌতুহলাক্রান্ত হইয়া চাহিয়া রহিল। কিন্তু যখন বতাই কিছুতেই প্রতি নিবৃত্ত হইলেন না, যখন বিচার আরম্ভ হইল, তখন রতাইর অপ্রত্যাশিত পণ্ডিত্যের পরিচয় প্রাপ্তে সভাস্থ সকলেই বিস্মিত হইল। বিদ্যানিধি চমকিত হইলেন। উদার ১ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূবর্বাংশ-২য ভাগ ২য় খণ্ড চতুর্থ অধ্যাযে বাজপণ্ডিতিব উল্লেখ আছে।