পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৬২ আছে তিনি প্রথমতঃ রণাডহর নামক স্থানবাসী ছিলেন, ইহার নাম কেশবমিশ্র, ইহার জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম শ্ৰীবৎস ও তৎপুত্রের নাম পরমেশ্বর ছিল,পরমেশ্বরের জ্যেষ্ঠপুত্র মুকুন্দরাম ভট্টাচায্য কোন কারণে রণাডহর পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক রায়গড়-গ্রামে চলিয়া যান;তথায় ইহার বাসস্থান “ভটেরপাড়া” বলিয়া খ্যাত হয়। ইহার জ্যেষ্ঠপুত্র গঙ্গারাম চক্ৰবৰ্ত্তী, তাহার রামকৃষ্ণকমলাকান্ত, গোবিন্দ, ও অনন্ত নামে চারিপুত্র হয়, ইহাদের বংশধরবগ সসম্মানে ঢাকাদক্ষিণে বাস করিতেছেন। রামকৃষ্ণের কথা গঙ্গারামের জ্যেষ্ঠপুত্র রামকৃষ্ণ তপোনিষ্ঠ ও ফলিত জ্যোতিষ শাস্ত্রে অদ্বিতীয় পুরুষ ছিলেন;তিনি মুর্শিদাবাদে গঙ্গাতীরে বহুদিন বাস করেন। কথিত আছে যে, একদা নবাব দরবারে উপস্থিত হইলে তপস্বী-বেশী রামকৃষ্ণ নবাব তাহার নিরুদ্দিষ্ট জামাতা বাঁচিয়া আছেন এবং কোথায় আছেন, জিজ্ঞাসা করেন:রামকৃষ্ণ অঙ্কপাত করিয়া কিছুক্ষণ পরে উত্তর দেন যে তিনি অচিরাৎ আসিয়া পৌছিকেন। তাহার পরদিন জামাতা আসিয়া পৌছিলে, সকলেই বিস্মিত হইয়াছিল এবং নবাব কত্ত্বক শেষভাগে পুরস্কৃত আইন ঘটিত কোন বিবাদ উপস্থিত হইলে ইহাকে জিজ্ঞাসা করা হইত। ইনি তাহার মীমাংসা পত্র প্রদান করিতেন, এবং তাহাই গ্রাহ্য হইত। তপস্বী রামকৃষ্ণের জ্যেষ্ঠপুত্র রাঘবেন্দ্র সাবর্বভৌম “পত্রনবিশ” পদ প্রাপ্ত হন, ইহার পরবর্তী ব্যক্তিগণও এই উপাধি ধারণ করিয়া আসিতেছেন। রাঘবেন্দ্র গুণী পুরুষ ছিলেন, মুর্শিদাবাদের নবাব হইতে বার্ষিক ৩৬৫ কাহন কোড়ি প্রাপ্তির সনদ তিনি লাভ করেন। ইহার দুই পুত্র জ্যেষ্ঠ শ্ৰীকৃষ্ণ ভট্টাচাৰ্য্য পিতার মৃত্যুর পর “পত্রনবিশ” নিযুক্ত হন। ইহার পুত্রের মধ্যে রামকান্ত জ্যেষ্ঠ ছিলেন, তিনি জয়ন্তীয়া-পতি হইতে বাইওঙ্গপুর মৌজায় ১০/০ হাল ভূমি ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন ও এক বিষ্ণুমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। র্তাহার মধ্যম ভ্রাতাও একটি শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করিয়া পুণ্য অৰ্জ্জন করিয়াছিলেন। বংশাখ্যান শ্ৰীকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের কনিষ্ঠ ভ্রাতা রামশঙ্কর পিতামহ রামকৃষ্ণের ন্যায় তপস্বী ছিলেন এবং পিতামহের ব্যবহৃত স্ফটিকমালা ধারণ করতঃ সাধন করিতেন। রামশঙ্করের দুই পুত্র, তন্মধ্যে কনিষ্ঠ রামগোবিন্দ ব্যাকরণ ও স্মৃতিশাস্ত্রে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়া হেড়ম্বেশ্বর কৃষ্ণচন্দ্র নারায়ণের অন্যতম সভাপণ্ডিত নিযুক্ত হন। তিনি কাছাড়রাজ হইতে অনেক অর্থ প্রাপ্ত হইয়া শিবালয় প্রভৃতি প্রস্তুত ও নোকা পূজাদি’ সৎকাৰ্য্য করেন। রামগোবিন্দের ভ্রাতুষ্পপুত্র রামগঙ্গা খুল্লতাতের চেষ্টায় মহারাজ গোবিন্দ নারায়ণের সভাপণ্ডিত নিযুক্ত হন। কাছাড় রাজ্যের ধ্বংসের পর পেন্সন প্রাপ্ত রাণী ইন্দুপ্রভা তাহার কনিষ্ঠ হরপ্রসাদকে ১১. পরিশিষ্টে ইহার বংশাবলী দেখ। ১২. নৌকাপূজা শ্রীহট্ট অঞ্চলের একটা আড়ম্বরপূর্ণ পূজানুষ্ঠান, ইহার বিবরণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১ম ভাগে ৮ম অধ্যায়ে লিখিত হইয়াছে।