পাতা:ষোল আনি (জলধর সেন).djvu/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোল-আনি

করছিলাম, তখন আমি এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবার ভবিষ্যৎ ফলের কথাও ভাবছিলাম, আর আমার ছেলে সিধুর মুখের দিকে চাচ্ছিলাম। সে মুখে আমি যে দীপ্তি, যে ভাব দেখ্‌তে পেয়েছি, তাতেই আমি সাহস করে এই ভার নিতে চাচ্ছি। কেমন সিধু?”

সিদ্ধেশ্বর বলিলেন “মামা, মায়ের আদেশ আমি মাথায় করে নিয়েছি। আজ আমি যে দৃশ্য দেখলাম, এতে আমার প্রাণে যে ভাবের উদয় হয়েছে, তা মামা, তুমি বুঝতে পারবে না। মায়ের আদেশ পেয়েছি। আমি বল্‌ছি, ও বাড়ীর বড়-বৌকে আশ্রয় দেবার জন্য মনোহর কাকার সঙ্গে যদি বিবাদ করতে হয়, দেশের সকলের সঙ্গে যদি মনান্তর হয়, দেবীপুরের নয়-আনির বাড়ীকে যদি একঘরে হয়ে থাক্‌তে হয়, তাতেও কুণ্ঠিত হব না। দেবীপুরের জমিদারী যদি বিকিয়ে যায়, তাতেও আমার অণুমাত্র দুঃখ হবে না। একটী অসহায়া, নিরপরাধা বিধবাকে সামাজিক নির্যাতন থেকে রক্ষা করবার জন্য আমার যথাসর্ব্বস্ব দিয়ে আমি পথের ভিখারী হয়েছি, এর চাইতে অধিক গর্ব্বের কথা আমি ভেবেই পাচ্ছি না। মা ঠিক কথা বলেছেন, যে সমাজ নিরপরাধা বিধবাকে এমন করে ত্যাগ করতে পারে, সে সমাজ হিন্দুসমাজ নয়। আমি সে হিন্দুয়ানীর বড়াই করতে চাইনে। না মা, তুমি ভেবো না। তোমার আদেশ পালন করবার জন্য আমি সমস্ত বিপদ মাথায় করে নিতে প্রস্তুত হয়েছি।”

হরিশ গাঙ্গুলী মহাশয় বলিলেন, “তোমরা যে যা বল্‌লে, সবই ত

২৬