পাতা:ষোল আনি (জলধর সেন).djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোল-আনি

তাঁহার চরিত্র সম্বন্ধে কোন কথা বলিতে পারে নাই। এই চরিত্রবলেই শ্যামা ঠাকুরাণী গ্রামে একাধিপত্য করিয়া আসিতেছেন। তাঁহার যে জমাজমি আছে, তাহার আয় হইতে তাঁহার বেশ চলিয়া যায়; গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য কাহারও মুখের দিকে চাহিতে হয় না; জমাজমির ব্যবস্থার জন্যও শ্যামা ঠাকুরাণী কাহারও মুখাপেক্ষা করেন না; নিজেই সমস্ত করেন। দশ টাকা সুদেও তিনি লাগাইয়া থাকেন; সকলে বলে তাঁহার হাতেও কিছু আছে।

তাহার পর শ্যামা ঠাকুরাণী পরোপকারে কখনও পরান্মুখ নহেন; গ্রামের সকলেরই বিপদ-আপদে তিনি বুক দিয়া পড়িয়া থাকেন। এই সকল গুণের জন্য সকলেই তাঁহাকে শ্রদ্ধা করে। আবার সকলে তাঁহাকে বিশেষ ভয়ও করে, কারণ শ্যামাঠাকুরাণীর মুখের সম্মুখে কাহারও দাঁড়াইবার যো নাই; রাগ ও অভিমান তাঁহার অত্যন্ত বেশী; তাঁহার মতের প্রতিবাদ করিলে আর রক্ষা নাই; তিনি তখন একেবারে উগ্রচণ্ডা হইয়া উঠেন। তাঁহার অভিমানে আঘাত করিতে কেহই সাহস করে না। সকলেই তাঁহার পরামর্শমত কাজ করিয়া থাকে।

রমাসুন্দরী যে অতি প্রত্যুষেই মানদা ও তাহার মেয়েকে লইয়া চলিয়া যাইবেন, একথা রাত্রিতে কেহই ভাবেন নাই; তিনি যদিও সে কথা বলিয়াছিলেন, কিন্তু সকলেই মনে করিয়াছিলেন যে, প্রাতঃকালে শ্যামা ঠাকুরাণীর সহিত পরামর্শ করিয়াই রমাসুন্দরী কর্ত্তব্য স্থির করিবেন। রাত্রিতে যাহাই বলুন, শ্যামা ঠাকুরাণীকে উপেক্ষা করিয়া রমাসুন্দরী কিছুই করিবেন না, এ কথা সকলেই

৩৮