বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

হইল। ষ্ট্যালিন দেখিলেন সার্ব্বজনিক কৃষিক্ষেত্র ও ব্যক্তিগত কৃষিক্ষেত্র পাশাপাশি চলিতে পারে না। কম্যুনিষ্ট পার্টি নূতন উৎসাহে কার্য্যে প্রবৃত্ত হইলেন এবং ১৯৩৫ সালে জানুয়ারী মাসেই দেখা গেল শতকরা ৮০ ভাগ জমি সার্ব্বজনীক কৃষিক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত হইয়াছে এবং দেশে খাদ্যশষ্য ও কলকারখানার প্রয়োজনীয় কাঁচা মালেরও প্রায় অভাব নাই।

 একদিকে যেমন জনসাধারণের জীবনযাত্রাপ্রণালী উন্নত হইতে লাগিল, অন্যদিকে কলকারখানায় কৃষিযন্ত্র, কলের লাঙ্গল এবং অন্যান্য সাজসরঞ্জাম প্রস্তুত হইতে লাগিল। কয়লা, তেল, লোহা, তামা এবং রাসায়নিক দ্রব্যের খনিগুলিতে সুনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজ চলিতে লাগিল। কয়েক বৎসরেই কলের লাঙ্গলের উৎপাদন পাঁচগুণ এবং মোটর গাড়ীর উৎপাদন আটগুণ বাড়িল। নূতন পরিকল্পনায় মোটের উপর উৎপন্ন পণ্যের সংখ্যা শতকরা ২৬৯ ভাগ বাড়িল। সোভিয়েট যুক্তরাষ্ট্রে কমরেড ষ্ট্যালিন চালিত কম্যুনিষ্ট পার্টির নেতৃত্ব দশ বৎসরে যে অসামান্য সাফল্য লাভ করিল, তাহার মধ্যে যে দুশ্চিন্তার অবকাশ ছিল না এমন নহে।

 মহাযুদ্ধের পর সমষ্টিগত নিরাপত্তার নামে যে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রবর্ত্তন হইল তাহা শান্তিরক্ষা অপেক্ষা অশান্তির দিকেই ঝুঁকিয়া পড়িল। ভার্সাই সন্ধির অসামঞ্জস্যে ইউরোপে নানা আকারে অশান্তি দেখা দিতে লাগিল, জার্ম্মানী দস্যুবৃত্তির জন্য গোপনে, বল সঞ্চয় করিতে লাগিল, জাপান এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তারের অভিযানে বহির্গত হইল। ফাশিষ্ট দল লইয়া মুসোলিনী আফ্রিকায় “রোম সাম্রাজ্য বিস্তার করিতে লাগিলেন। নব অত্যুত্থিত নাৎসীনায়ক হিটলারকে সম্মুখে রাখিয়া জার্ম্মানীর বণিক, জমীদার ও সামরিক অভিজাতবর্গ পুনরায় পৃথিবীতে আধিপত্য করিবার দুঃস্বপ্ন দেখিতে লাগিলেন।

১১৫