বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

ব্যবস্থা অবলম্বন করিতে বাধ্য করিল এবং জনসাধারণকে এই বলিয়া ধাপ্পা দিল যে, বণিকদের মুনাফার লোভ সংযত করিয়া তাহারা সকলের জন্য অন্ন-বস্ত্রের ব্যবস্থা করিবে। পার্লামেণ্টারী পদ্ধতির পরিবর্ত্তে ডিক্টেটর-চালিত গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে রক্ষা করিবার আর কোন উপায় ছিল না। কাশিষ্ট দেশগুলিতে শ্রমিক আন্দোলন নিষিদ্ধ হইল। কৃষক ও নিম্ন মধ্যশ্রেণীকে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হইল। সরকারী কর্মচারীদিগকে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে লেলাইয়া দেওয়া হইল এবং তাহার প্রতিক্রিয়ায় সকলেই সরকারী কর্ম্মচারী ও গভর্ণমেণ্টের বিরোধী হইয়া উঠিল। করদাতা ও ভূতপূর্ব্ব সৈনিকদিগকে দলে ভিড়াইবার চেষ্টা সফল হইল; বিশেষভাবে যুবক সমাজ এই নূতন প্রচণ্ডতার জাঁকজমকে বিমোহিত হইল। সমাজের যে অংশ সঙ্ঘবদ্ধ নহে, শিথিল ভাবে ভাসমান, ফাশিষ্টরা সেই অংশকে অভিভূত করিয়া প্রচার করিতে লাগিল যে পার্লামেণ্টারী পদ্ধতি এবং সমাজতন্ত্রবাদ জাতির শক্তি ও অভ্যুদয়কে ধ্বংস করিতে উদ্যত হইয়াছিল। “সমাজতন্ত্রীরা ইংলণ্ড ও জার্ম্মানীতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা হাতে পাইয়াছিল অথচ তাহারা কিছুই করিতে পারে নাই।”

 এই কৌশলপূর্ণ প্রচারকার্য্য জনসাধারণকে সহজেই মোহিত করিল। অনেকেই ভাবিয়া দেখিল না যে উহারা নামে মাত্র সমাজতন্ত্রী ছিল এবং কি ইংলণ্ড কি জার্ম্মানীতে উহারা কখনও সমাজতন্ত্রবাদের নীতি প্রয়োগ করিবার চেষ্টা করে নাই। জার্ম্মানীর সোশাল ডেমোক্রেটিক নেতারা এবং ইংলণ্ডের মিঃ ম্যাকডোনাল্ড-শ্রেণীর শ্রমিকনেতারা তাহাদের আচরণ দ্বারা সমাজতন্ত্রবাদকেই উপহাস ও পরিহাসের বস্তু করিয়া তুলিয়াছিলেন।

১৩১