বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

নেতাদের নিকট তিনি কোন সাড়া পাইলেন না। মধ্য শ্রেণীর বিপ্লবী নেতারা লেনিনের কথা শুনিল না। তৃতীয় বলশেভিক কংগ্রেসের নির্দ্দেশ তাহারা মানিল না। অতি অল্পসংখ্যক শ্রমিক ও নাবিক যখন সঙ্ঘবদ্ধ হইয়াছে, লেনিন যখন তাহাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করিয়াছেন তখন বহু বিলম্ব হইয়া গিয়াছে। লেনিন সৈন্যদলকে বিদ্রোহ করিবার জন্য পরামর্শ দিলেন। কোন ফল হইল না। রেলওয়ে শ্রমিকরা ধর্ম্মঘট করিয়া সৈন্যদলের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিল না। নূতন সৈন্যদল আসিয়া মস্কোর বিদ্রোহ সহজেই দমন করিয়া ফেলিল। ষ্ট্যালিন এই বিদ্রোহে বিশেষ কোন অংশ গ্রহণ করেন নাই। তিনি বিরক্ত হইয়া বলিলেন, “ইহাই কি বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুতি? কথা, কথা, কেবল কথাই শুনিতেছি অথচ প্রয়োজন অস্ত্রশস্ত্রের এবং প্রয়োজন কাজের।” লেনিন প্রশান্তকণ্ঠে উত্তর দিলেন, “ভয় নাই; আমরা এক ভয়াবহ শিক্ষালাভ করিলাম। আবার যখন সুযোগ আসিবে তখন আমরা ভালভাবে কাজ করিব।” কিন্তু সে সুযোগ ১৯১৭ সালের মার্চ মাসের পূর্বে আর আসে নাই। মেনশেভিক দলের বিশ্বাসঘাতকতায় বিপ্লবীরা দীর্ঘ দ্বাদশবর্ষকাল নির্বাসনে গুপ্তভাবে থাকিয়া পুস্তিকা ও নিষিদ্ধ সংবাদপত্র প্রচার এবং সঙ্ঘ গঠনেই ব্যয় করিয়াছেন।

 বিদ্রোহের অবসানে রুশিয়ায় জারশাসন অতি ভয়াবহ দমননীতি অবলম্বন করিল। ১৯০৫-১৯০৯ খৃষ্টাব্দের মধ্যে রাশিয়ার রাজনৈতিক বন্দীর সংখ্যা পঁচাশী হাজার হইতে দুই লক্ষে পৌছিল। পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ ও সৈন্যদল ব্যতীত বিপ্লবের শত্রু একদল জারভক্তের আবির্ভাব হইল যাহারা কাল মুখোস পরিয়া অত্যাচারকে নিষ্ঠুর ও নির্মম করিয়া তুলিল। সঙ্গে সঙ্গে এক গণতন্ত্রের প্রহসন সুরু হইল। তথাকথিত

২৮