বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত কলকারখানাগুলি বিনিময় বাণিজ্যের আদানপ্রদানের নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হইল। কাজ ও যোগ্যতা দেখিয়া বেতন দিবার পদ্ধতি প্রবর্ত্তিত হইল। যদিও আপাতঃ দৃষ্টিতে ইহা গোঁড়া সমাজতন্ত্রবাদ নহে তথাপি এক স্তর হইতে উন্নততর স্তরে সমাজকে তুলিবার পক্ষে ইহার প্রয়োজন ছিল। ষ্ট্যালিন বলিয়াছিলেন, ‘কম্যুনিষ্টদল কি বলপূর্ব্বক জনসাধারণের উপর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করিতে চাহে? না। তাহা সম্ভবপর নহে। উহা করিতে গেলে নেতৃত্ব কখনই টিকিবে না।’ ষ্ট্যালিন লেনিনের নৃতন ব্যবস্থা সমর্থন করিলেন। জিনোভিফ সন্দিগ্ধ হইয়া বলিলেন, ইহা পিছনে হটিয়া যাওয়া ছাড়া আর কিছুই নহে। ষ্ট্যালিন উত্তর দিলেন, ‘কার্য্যারম্ভে নূতন অর্থনৈতিক নীতি পশ্চাদপসরণের মত দেখাইতেছে বটে। এই পরিকল্পনার পশ্চাতে যাহা রহিয়াছে তাহার বলে আমরা সহজেই কেন্দ্রীভূত শক্তি প্রয়োগ করিয়া লাভের লোভকে দমন করিতে পারিব।’

 নূতন নীতি প্রবর্ত্তিত হইবার পর যদিও রাশিয়ার মধ্যশ্রেণী ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোকানদারেরা অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করিয়াছিল, তাহা হইলেও কৃষকদের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নত হইল। শস্য উৎপাদনের হার বাড়িতে লাগিল, পতিত জমিতে আবাদ চলিতে লাগিল, ব্যক্তিগত ধন, যাহা মধ্যশ্রেণী এবং কৃষক জোতদারেরা (কুলাক্) লুকাইয়া রাখিয়াছিল, তাহা পুনরায় বাহিরে আসিয়া আভ্যন্তরীণ ব্যবসায়-বাণিজ্যে নিয়োজিত হইল। কিছুদিন পরেই দেখা গেল জাতীয় মূলধনের প্রায় অর্ধাংশ ব্যক্তিগত মূলধন। কিন্তু বৈদেশিক বাণিজ্য, আদানপ্রদান রাষ্ট্রের একচেটিয়া থাকায় এই ব্যক্তিগত মূলধন অধিকতর বিস্তৃতি লাভ করিতে পারিল না। তথাপি সমস্যা হইল এই যে শ্রেণীদের অতীত

৮৮