পাতা:সংকলন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছেলে-ভুলানো ছড়া
১৪১

প্রথমোদ্ধৃত ছড়াটির সহিত এই ছড়া কেমন করিয়া মিশিয়া গিয়াছে। যেমন মেঘে মেঘে স্বপ্নে স্বপ্নে মিলাইয়া যায়, এই ছড়াগুলিও তেমনি পরস্পর জড়িত মিশ্রিত হইতে থাকে, সেজন্য কোনো কবি চুরির অভিযোগ করেন না এবং কোনো সমালোচকও ভাববিপর্যয়ের দোষ দেন না। বাস্তবিকই এই ছড়াগুলি মানসিক মেঘরাজ্যের লীলা, সেখানে সীমা বা আকার বা অধিকার নির্ণয় নাই। সেখানে পুলিস বা আইনকানুনের কোনো সম্পর্ক দেখা যায় না।

 অন্যত্র হইতে প্রাপ্ত নিম্নের ছড়াটির প্রতি মনোযোগ করিয়া দেখুন।

ওপারে জন্তি গাছটি জন্তি বড়ো ফলে।
গো জন্তির মাথা খেয়ে প্রাণ কেমন করে।
প্রাণ করে হাইঢাই গলা হোলো কাঠ।
কতক্ষণে যাস রে ভাই হরগৌরীর মাঠ।
হরগৌরীর মাঠ রে ভাই পাকা পাকা পান।
পান কিনলাম, চুন কিনলাম, ননদে ভাজে খেলাম।
একটি পান হারালে দাদাকে ব’লে দেলাম।
দাদা দাদা ডাক ছাড়ি দাদা নাইকো বাড়ি।
সুবল সুবল ডাক ছাড়ি সুবল আছে বাড়ি।
আজ সুবলের অধিবাস, কাল সুবলের বিয়ে।
সুবল নিয়ে যাব আমি দিগ্‌নগর দিয়ে।
দিগ্‌নগরের মেয়েগুলি নাইতে বসেছে।
মোটামোটা চুলগুলি গো পেতে বসেছে।
চিকন চিকন চুলগুলি ঝাড়তে নেগেছে।
হাতে তাদের দেবশাঁখা মেঘ নেগেছে।
গলায় তাদের তক্তিমালা রক্ত ছুটেছে।
পরনে তার ডুরে শাড়ি ঘুরে পড়েছে।
দুই দিকে দুই কাৎলা মাছ ভেসে উঠেছে।
একটি নিলেন গুরুঠাকুর একটি নিলেন টিয়ে।