“জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ, জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ।
চার ধলো দেখাতে পারো যাব তোমার সঙ্গ।”
“বক ধলো, বস্ত্র ধলো, ধলো রাজহংস।
তাহার অধিক ধলো কন্যে, তোমার হাতের শঙ্খ।”
“জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ, জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ।
চার রাঙা দেখাতে পারো, যাব তোমার সঙ্গ।”
“জবা রাঙা, করবী রাঙা, রঙা কুসুমফুল।
তাহার অধিক রাঙা, কন্যে, তোমার মাথার সিঁদুর।”
“জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ, জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ।
চর তিতো দেখাতে পারো, যাব তোমার সঙ্গ।”
“নিম তিতো, নিসুন্দে তিতো, তিতো মাকাল ফল।
তাহার অধিক তিতো কন্যে, বোন্-সতিনের ঘর।”
“জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ, জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ।
চার হিম দেখাতে পারো, যাব তোমার সঙ্গ।”
“হিম জল, হিম স্থল, হিম শীতলপাটি।
তাহার অধিক হিম, কন্যে, তোমার বুকের ছাতি।”
কবিসম্প্রদায় কবিত্বসৃষ্টির আরম্ভকাল হইতে বিবিধ ভাষায় বিচিত্র ছন্দে নারীজাতির স্তব গান করিয়া আসিতেছেন, কিন্তু উপরি-উদ্ধৃত স্তবগানের মধ্যে যেমন একটি সরল সহজ ভাব এবং একটি সরল সহজ চিত্র আছে, এমন অতি অল্প কাব্যেই পাওয়া যায়। ইহার মধ্যে অজ্ঞাতসারে একটুখানি সরল কৌতুকও আছে। সীতার ধনুকভাঙা এবং দ্রৌপদীর লক্ষ্যবেধ পণ খুব কঠিন পণ ছিল সন্দেহ নাই; কিন্তু এই সরলা কন্যাটি যে পণ করিয়া বসিয়াছে, সেটি তেমন কঠিন বলিয়া বোধ হয় না। পৃথিবীতে এত কালো ধলো রাঙা মিষ্টি আছে যে, তাহার মধ্যে কেবল চারিটিমাত্র নমুনা দেখাইয়া এমন কন্যা লাভ করা ভাগ্যবানের কাজ। আজকাল কলির শেষ দশায় সমস্ত পুরুষের ভাগ্য